জ্বলদর্চি

ধ্বংসস্তূপে হেঁটে যাবে একা/গৌতম বাড়ই

ধ্বংসস্তূপে হেঁটে যাবে একা

গৌতম বাড়ই

নিরাসক্ত দিন ভাবনার জঠর মেলে
তবু রয়ে যায় কিছু অঙ্গুরীমাল কেঁচো
বকের পাখার ভেতর ওম খোঁজে
মীন
ধীরে- ধীরে গিলে খাচ্ছে ধ্বস্তসময়
আমাদের মহাসমুদ্রের অবক্ষয় 
চাতালের কাছে পুঁজি জমা হয়
কপটের প্যাকেটে বিকোচ্ছে ক্ষীর 
ঘুম- ঘুম চোখ এখন 
চল্লিশ না চালশে
বোঝা দায়
সন্দেহের বাতাবরণ তৈরী হচ্ছে দেদার
সিঁড়ি ভেঙ্গে নিচে নামবার সময় 
প্রতিবেশীও ঢুলু চোখে দেখে সময়
সময় ও হাতঘড়ি এখন মিথ

ভাবনার মাস্তুলে এক একটি গোঁজের কীলক
বহুধা নড়বড়ে
দিন এনে দিন গিলে খায় শূন্যে
নীড়ের সন্তাপজীবন
কায়া থেকে ছায়া বড় হয় 
মায়ার গলানো অন্ধকার
বালির ভাস্কর্যে উঠে আসে দুটি হাত
যেন কবরের থেকে শেষ চাওয়া
শ্মশানের ছাইয়ে শান্তিরজল ছেটানো হয়নি
বালক- বালিকার পুঁথিগুলো
যেন প্রস্তরীভূত সৌন্দর্য
আকাডেমি অফ ফাইন আর্টসের ক্যানভাস
শেলীর মৃত্যুর ভাবনা অঙ্কিত
রবিঠাকুর বিদ্যাসাগরের পরমান্ন গালঘষে
অন্ধকারের পোকারা
কিছু কাঁচপোকা চিড়েকোঠা উচ্চিংড়ে
ক্যানভাসের রঙে ফসিল- বন্দী
কী যে এলো আর কী যে গেল 
ইলেকট্রনিক্স ওয়েটেজ দেয় না
মিথের শবযাত্রার মিছিলে একা হাঁটি-----

পশ্চিমে এখনও দূষিত হাওয়া বইছে
বিষ শুধু বিষ- প্রাণ
বিষ শুধু শুষে নেয় সূচের ডগায় দেহ
বিষাক্ত হয়ে উঠছে রক্ত
মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলি পৌরাণিক তত্ত্ব
ধীরে- ধীরে দানবকাহিনীর পটভূমি রচিত হচ্ছে
আমাদের পূর্ব- পুরুষদের স্মৃতি অসংরক্ষিত
যাপনের গোয়ালঘর গোশালায় ছবি আঁকা থাক
রূপান্তর
আমাদেরও হয়ত জায়গা হবে একটুখানি
বসত ভাঙ্গছে দেশ কাল নদী 
আমরা হারিয়ে যাচ্ছি ভয়ানক এককে
সারা পৃথিবী বৃহত্তম শরণার্থী শিবির
আমরা মানুষগুলি নিখোঁজের তালিকা বৃদ্ধি করি
শুধু আর শুধুমাত্র
বিষাক্ত প্রাণের জন্য 
শুদ্ধ জল- বায়ু- বাতাস কী?

প্রকৃতির রোষ নাকি শতাব্দীর প্রতিশোধ
হুজুগ আর উন্মাদনার একটাই শেষ
কফিন তৈরী হবে
আগুন জ্বলবে হাউ- হাউ
মৃতের শেষ শ্রদ্ধার কোন লিখিত চুক্তি ছিল না
গুলি চলবে লাঠির আস্ফালন 
নিরীহ রক্তের স্রোত
পুরো পৃথিবীর গুটি কয়েকজন লোকজন
ধ্বংসস্তূপের উপর দাঁড়িয়ে 
কাঁদছে
শব্দের গুমরে জল ছিল না
অভ্যন্তরের শুষ্কতায় জল আসে না
আর জল মুছিয়ে দেবার লোকগুলি
কবেই শেষট্রেনে বাড়ি ফিরে গেছে---------

আরও পড়ুন 

Post a Comment

0 Comments