দু হাজার কুড়ি সালের সাহিত্যে নোবেলজয়ী আমেরিকান কবি লুইজ গ্লিক এর কবিতার অনুবাদ
অনুবাদক: তপনজ্যোতি মাজি
লুইজ গ্লিক এর সংক্ষিপ্ত জীবনী:
জন্ম: ২২শে এপ্রিল ১৯৪৩।
স্বদেশ: আমেরিকা ।
পড়াশুনা : কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়।
যাপন: কবিতা ও সাহিত্য।
পুরস্কার: পুলিৎজার(১৯৯৩)।
নোবেল (২০২০ )।
কবিতা :
মৃত্যু
আমার যন্ত্রণার শেষেও
একটি দরজা খোলা ছিল।
বলেছিল, "এসো, বাইরে এসো"
তোমরা বলেছিলে, " মৃত্যু "।
কোলাহল ছিল।
মাথার ওপরে পাইন শাখার দোল ছিল।
সূর্যের দুর্বল আলো ছড়িয়েছিল
দশদিকে।
বেঁচে থাকা ছিল ভয়ঙ্কর।
চেতনা ক্রমাগত নিমজ্জিত হচ্ছিল
ধরিত্রীর অন্ধকার গহ্বরে।
তাই হলো।
বাক্যশূন্য হলাম।
মৃত পাখির মতো পড়ে গেলাম
ঝোপের ভিতর।
তোমাদের স্মরণে নেই এই সব আখ্যান।
ধূসর অধ্যায়ে গিয়েও ফিরে পেলাম
বাকশক্তি।
আমার হৃদয় কেন্দ্র থেকে একটি
ঝর্ণা জেগে উঠেছে অকস্মাৎ।
রুপোলি শালুক
প্রথম বসন্ত রাত্রির মতো রাতগুলি শীতল
হয়েছে পুনরায়।
আমার কথা কি তোমাকে জাগলো?
আমরা পুনরায় নির্জন হয়েছি বহুদিন পর।
নীরব থাকার কোনও কারন নেই।
তুমি কি দেখতে পেলে বাগানের ওপর
পূর্ণ চন্দ্রের উজ্জ্বল উদয়?
আমি পরবর্তী পূর্ণ চন্দ্র হয়তোবা
দেখতে পাবোনা।
বসন্তে যখন চাঁদ ওঠে,মনে হয়, সময়
অন্তহীন।
বরফ পড়ে ধীর লয়ে।
চাঁদ ওঠে বিচ গাছের মাথার ওপর।
ড্যাফোডিলের সবুজ পাতা দোল খায়
চাঁদের হাসিতে।
আমরা অনেক দূরে চলে এসেছি।
শেষ কোথায় জানিনা।
আনন্দের কোনও শব্দ নেই,
ভয়ের মতো।
দেখা
আমি দেখেছি।
আমি দেখছি।
আমার বাবা আমার মায়ের সমগ্র জীবনকে
নত করে রেখেছিল।
মা ছিল প্রফুল স্বভাবের।
মা ছিল ভ্রমণ পিপাসু।
মা চাইতো থিয়েটারে যেতে।
মা চাইতো জাদুঘরে যেতে।
মা ছিল প্রফুল স্বভাবের।
বাবা চাইতো না এসব কোনও কিছুই।
বাবা চাইতো নরম বিছানায় শুতে
জীবনভর।
আরও পড়ুন
সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার প্রাপ্ত (২০১১) কবি টমাস ট্রান্সট্রোমারের নির্বাচিত কবিতার অনুবাদ।
সৌম্যদীপ চক্রবর্তী
0 Comments