২০২১ নতুন বছর নতুন লেখা
গুচ্ছ কবিতা
রবিন বণিক
তিন টুকরো মানুষ
সাদাকালো ল্যান্ডস্কেপ, স্থির চিত্রের ভেতর লেখা দৃশ্য
একজন তিন টুকরো মানুষ, ঝুড়িতে অবহেলার চাঁদ
কাঁচা কণার পথ, দুটো ছাগল খোঁজে অভিসন্ধির রং
নদীও বাউলের মতো গেরুয়া করেছে জল
বাঁশপাতা থেকে টুপ টুপ শাদা শব্দ মানুষটির শেষ টুকরোর দিকে
চিত্রকর ভাবছেন আর কী কী দেওয়া যেতে পারে
ভাবছেন ওই তিন টুকরো লোকটির পেছনে এক টুকরো
উড়ন্ত ভিটে আঁকলে কেমন হয়–
উদ্ভিদ প্রতিদিন
কবি কি তার অসম্পূর্ণ দেহের অংশ
নাকি সম্পূর্ণতার সম্ভাবনা
একথা ভাবতে ভাবতে সে উদ্ভিদ প্রতিদিন
আর
প্রতিদিন একটা ট্রেন চিন্তাহীন তছনছ করে চলে শহরের স্তন
কবি, ঈশ্বর ভাগের পক্ষে না বিপক্ষে
একথা ভাবতে ভাবতে ভুল করে ঢুকে পড়েন দৈনিক কলমে–
ক্রমশ বেঁটে হয়ে যাচ্ছেন মশাই
প্রত্যেকটা মিনিট বেঁটে হয়ে যাচ্ছেন মশাই
প্রত্যেকটা সেকেন্ড ছুঁয়ে দেখবার জন্য হাঁটতে হাঁটতে হাঁটতে
তারপর দৌড়ে দৌড়ে দৌড়ে ফুরিয়ে যাচ্ছে আপনার শ্বাসবায়ু
ফুসফুসে একচিলতে মাটিও ফাঁকা রাখেন নি, যেখানে
বসবাস করতে পারে এক বিকল্প জীবন
একটা লেখা ছোটো হতে হতে কিভাবে মিশে যাচ্ছে ভিড়ে
তা নিয়ে একের পর এক গিলে যাচ্ছেন স্লিপিং পিল
মশাই, প্রত্যেকটা মিনিট বেঁটে হয়ে যাচ্ছেন ক্রমশ
একবারও ভাবলেন না, মৃত্যু একটা সংযমী কৌশল
গভীর ভাবুন, প্রকৃত বাহকেরা মৃত্যুর পরেও শারীরিক–
একটি কাক ও পরকীয়া
এক প্যান্ডেল থেকে অন্য এক প্যান্ডেল
অন্য এক প্যান্ডেল থেকে আরো অন্য এক প্যান্ডেলে
উড়ে বেড়ায় অপরিচিত একটি কাক
পেছনের অতিরিক্ত বাঁশের উপর থেকে কাকটি লক্ষ্য করে
আয়োজকদের ভুরুর প্রস্থে অঙ্কুরিত মেঘের স্তুপ
কা কা করে, কিন্তু দর্শনার্থীরা বুঝে উঠতে পারেন না
এবছর প্যান্ডেলের পেছনদিকে গ্রীনরুমের দৈর্ঘ্য বৃদ্ধির কারণ
কাক কা কা করে, কাক কা কা করে
পুজো কমিটির সম্পাদক কাকটাকে তাড়িয়ে দেবার চারদিন পর অনুভব করেন
বিসর্জনের পরদিন সমস্ত নুনের গুদাম থেকে
কেন সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল মুদ্রার পরকীয়া সংবাদ–
সাঁতার–পুকুর
সাঁতার–পুকুর ছেড়ে ততটা অন্ধ হয়নি কেউ
যতটা প্রজাপতি চুমু খেয়ে উড়ে যায় দেহে
ডুবে আছে কেউ ভেবে আবার ফিরিয়ে চোখ
নীলাভ জলের ঘাসের শীর্ষে খুনিরা স্নিগ্ধ হোক
গুপ্তঘাতকের হাত ছুঁয়ে জলের নিবিষ্ট ফড়িং
সাঁতারের গায়ে খুনের মতো নিরব ডানার রং
কতটা অন্ধের দিকে আজ ভীষণ ডানার শব্দ
সাঁতার–পুকুরে ভাসমান লোভ পূর্বপুরুষ লব্ধ
জ্বলদর্চি পেজ- এ লাইক দিন👇
0 Comments