জ্বলদর্চি

বৈচিত্র্যময় বইয়ের জগৎ/মুক্তি দাশ

বৈচিত্র্যময় বইয়ের জগৎ

মুক্তি দাশ
 

প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কবলে পড়ে অতিমারির দাপটে ৪৫তম কলিকাতা আন্তর্জাতিক পুস্তকমেলা অনির্দিষ্টকালের জন্যে স্থগিত হয়ে গেছে। বইমেলার ইতিহাসে এতদিনের এই নিরবচ্ছিন্ন ধারাটি এবার, এই প্রথমবার ক্ষুণ্ণ হলো। বইপ্রেমীদের কাছ এটা নিশ্চয়ই এক নিদারুণ দুঃখ ও হতাশাজনক সংবাদ।

এই ফাঁকে আমরা বরং একবার বিশ্বের বৈচিত্র্যময় বইয়ের জগতে একবার ঢুকে পড়ি। সেখানে দেখতে পাবো নানাধরনের দুর্লভ ও দুষ্প্রাপ্য বইয়ের পরিচয় ও বইপ্রকাশের পেছনে নানা চমকপ্রদ পিলে-চমকানো ইতিবৃত্ত।

কত ধরনেরই তো বই আছে এই বিশ্বে। ছোট এবং বড়, স্থূল এবং কৃশ, সুখপাঠ্য এবং দুষ্পাঠ্য, করুণ এবং সরস, শ্লীল এবং অশ্লীল – বৈচিত্র্যময় বইয়ের জগৎ। পৃথিবীতে যতরকম চরিত্রের মানুষ আছে, তার চেয়েও অনেক অনেক বেশি রকমের বই রয়েছে – একথা মোটেই অত্যুক্তির পর্যায়ে পড়ে না। এই অপরিসর নিবন্ধে তেমনই কয়েকটি উল্লেখযোগ্য বিচিত্র পুস্তকাবলীর কথা গ্রন্থ-কৌতূহলীদের উদ্দেশে আলোচিত হবে।

আমেরিকার হাভার্ড ইউনিভার্সিটির অন্তর্গত হোটোর লাইব্রেরিতে ভারতে মুদ্রিত প্রথম গ্রন্থটি সযত্নে রক্ষিত। বইটির নাম – ‘ডক্ট্রাইনস অফ ক্রিশ্চিয়ানিটি’ (Doctrines of Christianity)। ভারতের গোয়াতে তামিল ভাষায় পরীক্ষামূলকভাবে বইটি প্রথম মুদ্রিত হয় ১৫৭৮ খ্রীষ্টাব্দে। কিন্তু একটিই মাত্র কপি। এবং সেই কপিটাই, আগেই বলা হয়েছে, হোটোর লাইব্রেরির হেফাজতে।

পরের বছরই অবশ্য কেরালার কোচিনে বইটির বেশ কয়েকশো কপি পুণর্মুদ্রণ করা হয় জনসাধারণের দরবারে বিনামূল্যে বিতরণের জন্যে। উদ্দেশ্য, বইটির মুদ্রণ, গ্রন্থনা এবাং বিষয়বস্তু সম্পর্কে সাধারণ মানুষের প্রতিক্রিয়া ও মতামত যাচাই করা। বইটির প্রচারও অবশ্য একটি অন্যতম উদ্দেশ্য। বলা বাহুল্য, বইটি সেযুগে অত্যন্ত সমাদৃত হয়েছিল।

এবার আসি, বইখানি কেন গোয়ায় মুদ্রিত হয়েছিল সেই কথায়। ভারতের গোয়াতে বইটি মুদ্রণের ব্যাপারে কোনো পূর্ব-পরিকল্পনা ছিল না। ঘটনাচক্রে তা গোয়াতে ছাপানো হয়। এর একটি ছোট্ট পশ্চাৎকাহিনী রয়েছে। কাহিনীটি যেমন চমকপ্রদ, তেমনি মজাদার।

সেটা ১৫৫৬ খ্রীষ্টাব্দ। পোর্তুগালের তদানীন্তন সম্রাটের একবার বাসনা হলো, তাঁর বন্ধুপ্রতিম ইথিওপিয়ার অ্যাবিসিনিয়া-রাজকে একটি অত্যন্ত মূল্যবান ও চমকপ্রদ বস্তু উপহার দেওয়ার। কী দেওয়া যায়? ভেবেচিন্তে শেষপর্যন্ত তিনি নবাবিস্কৃত একটি বিশাল মুদ্রণযন্ত্র উপহার হিসেবে অ্যাবিসিনিয়া-রাজকে পাঠাবার মনস্থ করেন।

মুদ্রণযন্ত্রটি জাহাজে করে নদীপথে প্রেরণের ব্যবস্থা করা হয়।  নদীপথে পোর্তুগাল থেকে ইথি্ওপিয়া বেশ কয়েকমাসের পথ। কিন্তু এছাড়া উপায়ই বা কী! অতএব জাহাজে বোঝাই হয়ে বিশালাকায় মুদ্রণযন্ত্রটি চললো পোর্তুগাল থেকে ইথিওপিয়ার পথে অ্যাবিসিনিয়ার রাজদরবারে উপহার হিসেবে। কিন্তু ইথিওপিয়া পৌঁছোনোর আগেই ঘটে গেল সেই অনভিপ্রেত চমকপ্রদ ঘটনাটি।

জাহাজ-যাত্রার মাসদুয়েকের মাথায় হঠাৎ কোনো অজ্ঞাত কারণে পোর্তুগালের রাজার সঙ্গে অ্যাবিসিনিয়ার রাজার মতবিরোধ ও বাদানুবাদ চরমে উঠলো। অচিরেই উভয়ের এতদিনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক একটা চরম তিক্ততায় পর্যবসিত হলো। মুদ্রণযন্ত্রবাহী জাহাজ তখন মাঝদরিয়ায়। ক্ষোভে-দুঃখে-ক্রোধে উন্মত্ত পোর্তুগাল-রাজ যেন ফেটে চৌচির হলেন। অ্যাবিসিনিয়ার সংগে আর কোনো সম্পর্ক নয়। আবার উপহার পাঠানো! নৈব নৈব চ।

সেই মুহূর্তে আদেশজারি হয়ে গেল, কোনোমতেই যেন মুদ্রণযন্ত্রটি ইথিওপিয়ার মাটি স্পর্শ করতে না পরে। তাবলে পোর্তুগালে আবার ফিরিয়ে নিয়ে যাবারও তো কোনো মানে হয় না। দান বা উপহার সমগ্রী ফিরিয়ে নেওয়া রাজোচিত মর্যাদার পক্ষে হানিকারক। অতএব মুদ্রণযন্ত্রটি নিকটস্থ কোনো বন্দরে নামিয়ে রেখে জাহাজ যেন যথাশীঘ্র সম্ভব পোর্তুগালে প্রত্যাবর্তন করে। এই হলো পোর্তুগাল-রাজের কড়া নির্দেশনামা।

সৌভাগ্যবশত, সমুদ্রের যে স্থানে ভাসমান অবস্থায় জাহাজটি এহেন নির্দেশনামা পেলো, সেখান থেকে নিকটতম বন্দর বলতে ভারতবর্ষের গোয়া। ১৫৫৬ খ্রীষ্টাব্দের ৬ই সেপ্টেম্বর গোয়ার বন্দরেই, অগত্যা, নামানো হলো বৃহদাকার সেই মুদ্রণযন্ত্র। তারপর ক্রমে সেখানেই তা স্থায়ীভাবে প্রতিষ্ঠিত হলো। এবং এই মুদ্রণযন্ত্রই ১৫৭৮ খ্রীষ্টাব্দে প্রসব করলো ভারতে মুদ্রিত প্রথম পুস্তক ‘ডক্ট্রাইনস অফ ক্রিশ্চিয়ানিটি’।
 
মাত্র ছাব্বিশটি অক্ষর সম্বল করে ইংরেজিভাষা আজ সারা বিশ্বের দরবারে শ্রেষ্ঠ সমৃদ্ধশালী ভাষা হিসেবে স্বীকৃত ও প্রতিষ্ঠিত। সারাবিশ্বে একমাত্র ভাববিনিময়কারী ভাষা। পৃথিবীর বহু উল্লেখযোগ্য ধ্রুপদী সাহিত্য এই ভাষায় রচিত ও অনূদিত হয়েছে-এই ছাব্বিশটি অক্ষরের দাক্ষিণ্যেই। কেবলমাত্র আমেরিকান সাহিত্যিক আর্নেস্ট ভিনসেন্ট রাইট (Ernest Vincent Wright)-এর লেখা একটি উপন্যাস এর বিরল ব্যতিক্রম। উপন্যাসটির নাম Gadsby (গ্যাডসবাই)।
কল্পবিজ্ঞানাশ্রিত একখানি ইংরেজি উপন্যাস। ব্যতিক্রম এই জন্যে যে, যদিও এই উপন্যাসটির শব্দসংখ্যা সাকুল্যে পঞ্চাশ হাজার একশো দশটি, কিন্তু এতে ব্যবহৃত হয়েছে ইংরেজি বর্ণমালার পঁচিশটি অক্ষর। একটি অক্ষর বিলকুল বাদ। বর্জিত সেই অক্ষরটি হলো E (ই)। যথেষ্ট মুন্সিয়ানার সংগে এবং সচেতনভাবে ও সুকৌশলে একটি অক্ষর বা বর্ণকে এড়িয়ে গিয়ে সার্থকভাবে সাহিত্যসৃষ্টির এই পদ্ধতিকে বলে Lipogram (লিপোগ্রাম)।

যাইহোক, এহেন অভাবনীয় পদ্ধতিতে লেখা এই উপন্যাসটি শেষ করতে লেখকের সময় লেগেছিল একশো পঁয়ষট্টি দিন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ১৯৩৯ খ্রীষ্টাব্দে Gadsby প্রথম পুস্তকাকারে প্রকাশিত হয়। দু’শো ষাট পাতার বই। প্রকাশকালে বইটির বিক্রয়মূল্য ছিল মাত্র তিন ডলার প্রতি কপি।। ভারতীয় মুদ্রায় সেই সময়ের নিরিখে যার মূল্য ছাব্বিশ টাকার মতো। অধুনা দুষ্প্রাপ্য এই বইখানির মূল্য প্রায় একহাজার ডলার। সহজেই বোঝা যায়, বইটির দুষ্প্রাপ্যতা এবং অভিনবত্বই এরকম আকাশচুম্বী মূল্যবৃদ্ধির কারণ।

অভূতপূর্ব এই উপন্যাসের সমালোচনা প্রসঙ্গে তদানীন্তন পত্রিকা “লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমস” লিখেছিল : “Try to write a single ten-word sentence without an ‘e’, and you will get an idea of the task he set himself.”

পরবর্তীকালে প্রায় তিরিশ বৎসরকাল ধরে ‘গ্যাডসবাই’ তার ‘E’-লুপ্ত জনিত অভিনবত্বের দিক দিয়ে উপন্যাসের জগতে প্রায় একচ্ছত্রাধিপতি ছিল। ১৯৬৯ সালে জর্জ প্যারেক নামে এক ফরাসি লেখক একটি বই প্রকাশ করেন। বইটি ফরাসিভাষায় রচিত। এবং ‘E’ বর্জিত। এমনিতে ফরাসি ভাষার মধ্যে ‘E’ স্বরবর্ণটি ব্যবহারের আধিক্য চোখে পড়ার মতো। অথচ সেই ‘E’ ছাড়াই ফরাসিভাষায় লেখা হয়ে গেল আস্ত একখানা বই। সেদিক থেকে বিচার করলে ‘গ্যাডসবাই-এর লেখক আর্নেস্ট ভিনসেন্ট রাইট-এর চেয়ে ফরাসি লেখক জর্জ প্যারেক-এর কৃতিত্বই বরং বেশি। যদিও আর্নেস্ট ভিনসেন্ট রাইট-ই এহেন অভিনব রীতির প্রথম উদ্গাতা।

আর্থিক বিচারে পৃথিবীতে সর্বোচ্চ মূল্যে বিক্রিত বইটির নাম – ‘গুটেনবার্গ বাইবেল’। বইটির প্রথম মুদ্রণ ১৪৫৪ খ্রীষ্টাব্দে। অধুনা লুপ্তপ্রায়। বহু কষ্টে, বহু কাঠখড় পুড়িয়ে ১৯৭৮ সালে আমেরিকার টেক্সাস ইউনিভার্সিটির কর্মকর্তারা এই বইয়ের একখানি মাত্র কপি সংগ্রহ করতে পেরেছিলেন দু’কোটি চারলক্ষ ডলারের বিনিময়ে। না, এই মোটা অঙ্ক উক্ত বইয়ের মুদ্রিত মূল্য নয়। এই আকাশচুম্বী পিলে-চমকানো দামের আসল রহস্য হচ্ছে বইটির দুষ্প্রাপ্যতা। পুরোনো চাল ভাতে তো বাড়বেই!

সেদিক দিয়ে দেখলে প্রকৃত অর্থে বিশ্বের সর্বাপেক্ষা মূল্যবান বই হলো – ‘The Apocalypse’ যার দাম ভারতীয় মুদ্রায় পনেরোলক্ষ টাকা মাত্র। বইটি ১৯৬২ সালে স্পেন থেকে প্রকাশিত। লেখক ‘স্যালভেদর দ্যালি’ নামে এক স্প্যানিশ চিত্রকর।

মূল্যগত বিচারে এই বইটি বিশ্বের দরবারে স্পেনের মুখরক্ষা করলেও আকৃতিগত ভাবে পৃথিবীর বৃহত্তম বইটি প্রকাশের দাবীদার কিন্তু আমেরিকা। ১৯৭৬ সালে প্রকাশিত ন’ফুট বাই দশফুট এই বিশালকায় বইখানির নামটিও বেশ সুপ্রযুক্ত – ‘সুপার বুক’ (Super Book)। তুলনায় পৃষ্ঠাসংখ্যা নিতান্তই নগন্য। তিনশো পৃষ্ঠা। আর ওজন? দু’শো তিপান্ন কেজি।

এর ঠিক বিপরীত দৃষ্টান্তও বিরল নয়। জাপানের টোকিও থেকে ১৯৮০ সালে প্রকাশিত ‘অ্যারি’ (Ari) নামক পুস্তকটির প্রস্থও দৈর্ঘ – দু’দিকের মাপই এক দশমিক চার মিলিমিটার করে। ‘অ্যারি’ অর্থে পিঁপড়ে। পিপীলিকার মতোই ক্ষুদ্রাকৃতি এই বই। মাইক্রোস্কোপ ছাড়া খালিচোখে এর একটি অক্ষরও পাঠযোগ্য নয়।

যে-কোনো বইয়ের ক্ষেত্রেই একটা জুৎসই শিরোনাম অনিবার্য। পুস্তক জগতে এই নামকরণের মধ্যেও নানান বৈচিত্র্য বিদ্যমান। কেবলমাত্র এই বিষয়টাই একটি বৃহদাকার প্রবন্ধের উপকরণ হতে পারে। সুতরাং আপাতত সভয়ে ওইপথ এড়িয়ে গিয়ে শুধু এটুকু বলা যাতে পারে যে, কোনো বইয়ের নামকরণের ক্ষেত্রে অক্ষর-সংখ্যার কোনোরকম সীমাবদ্ধতা নেই। একটিমাত্র অক্ষরও যেমন বইয়ের শিরোনাম হতে পারে, তেমনি আবার – ‘Shouting-Geneuine and Spurious, in all Ages of the Church, from both of Creation, When the Sons of God Shouted for joy, Until the Shout of the Archangel, with Numerous Extracts from the old and New Testament and from the works of Wesley Evans, Edwards, Abbott, Cartwright and Finley Giving a History of the Outward Demonstrations of the spirit, Such as Laughing, Screaming, Shouting, Leaping, Jerking and Falling under the Power & C’

না। এটি কোনো বইয়ের অন্তর্ভুক্ত বিশেষ কোনো অংশ বা উদ্ধৃতি নয়। বিশ্বাস করুন অথবা না-ই করুন, এটি আদ্যোপান্ত একটি বইয়ের শিরোনাম মাত্র। একটা বইয়ের নাম এতখানি দীর্ঘ? বাপরে! লেখকের নামটি কিন্তু সে তুলনায় বেজায় ছোটো। জি ডবলিউ হেনরি। পুরো নামটা হয়তো আর একটুখানি বড় হতে পারে। এই অত্যাশ্চর্য বইটির প্রকাশকাল ১৮৫৯ খ্রষ্টাব্দ।

এক একটি পুস্তক রচনার পেছনে থাকে লেখকের অমানুষিক পরিশ্রম, সহজাত প্রতিভা ও অকৃত্রিম নিষ্ঠা। কিন্তু এসব ছাড়াও কোনো বই যদি লেখকের দেহচর্ম দিয়ে প্রস্তুত হয়, তাহলে তা নিশ্চয়ই এক চমকসৃষ্টিকারী চাঞ্চল্যকর সংবাদ হিসেবে মানুষের মনোযোগ আকর্ষণ করতে বাধ্য।

জেমস অ্যালেন ছিলেন একজন দুর্ধর্ষ আমেরিকান দস্যু। শেষজীবনটা তাঁর দীর্ঘকাল কারাগারে অতিবাহিত হয়। এবং এইসময় কারাগারে বসেই তিনি রচনা করলেন তাঁর আত্মজীবনী। অবশেষে ১৮৩৭ সালে জেমস অ্যালেনের মৃত্যুর পর তাঁরই গায়ের চামড়া দিয়ে বাঁধাই করে বইটি প্রকাশের ব্যবস্থা করা হয়। কারণ এটাই ছিল জেমস অ্যালেনের অন্তিম ইচ্ছে। এবং তা অক্ষরে অক্ষরে পালিতও হলো।

ভুটান থেকে প্রকাশিত আর একখানি বিরল দৃষ্টান্ত বইয়ের কথা এখানে উল্লেখ না করে উপায় নেই। বইটি এমনিতে দেখতে খুবই সাধারণ, নজর কাড়ার মতো নয়। তবে পৃষ্ঠাগুলি ঘোর কৃষ্ণবর্ণের। এবং এরপরও যে রোমহর্ষক ব্যাপারটি এরমধ্যে নিহিত তা হলো, এর এক-একটি পৃষ্ঠা পালাক্রমে সোনার কালি ও সাদা কালি দিয়ে লেখা। তার মানে, একটি পৃষ্ঠা সোনার কালি দিয়ে লেখা এবং ঠিক পরের পৃষ্ঠাটি সাদা কালিতে। তারপর ফের আবার সোনার কালি, ফের আবার সাদা কালি – এইভাবে। সোনার কালি সত্যিসত্যিই কিন্তু সোনার জলে তৈরি। আর সাদাকালি? সে-ও এক রোমাঞ্চকর ব্যাপার। সর্বজন শ্রদ্ধেয় জনৈক বৌদ্ধসন্ন্যাসীর দেহাবসানের পর তাঁর শরীরের অস্থি ও হাড়কে গুঁড়ো করে তার মন্ড থেকে প্রস্তুত এই সাদা কালি। ভাবা যায়!
পৃথিবীতে সবচেয়ে দ্রুত-মুদ্রিত বইয়ের নাম হলো – ‘The Pope’s Journey to the United States’। ‘ন্যুয়র্ক টাইমস’-এর সংগে যুক্ত একান্নজন এডিটরের যৌথরচনায় সমৃদ্ধ এই বইখানির পৃষ্ঠসংখ্যা একশো ষাট। মূল্য, পঁচাত্তর সেন্ট। বইটি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য এই কারণে যে, মাত্র সাড়ে-ছেষট্টি ঘন্টার মধ্যে এটির প্রকাশ সম্ভব হয়েছিল। কোনো বইয়ের এত ত্বরিত-প্রকাশ বিশ্বের ইতিহাসে এই প্রথম। এবং নজিরবিহীন। মুদ্রণালয়ে যাবতীয় পান্ডুলিপি জমা পড়েছিল ১৯৬৫ সালের অক্টোবরের চারতারিখ দুপুর দেড়টার সময়। এবং তা বইয়ের আকারে বেরিয়ে এলো ওই বছরের ওই মাসেরই সাততারিখ সকাল ঠিক আটটার সময়।

  পেজ- এ লাইক দিন👇

Post a Comment

1 Comments

  1. বহু না জানা তথ্য জানা গেল। ধন্যবাদ লেখিকাকে।

    ReplyDelete