জ্বলদর্চি

সদাহাস্যময় পদার্থবিজ্ঞানী রিচার্ড ফাইনম্যান এবং তাঁর QED থিওরি /পূর্ণচন্দ্র ভূঞ্যা

বিজ্ঞানের অন্তরালে বিজ্ঞানী ।। পর্ব ― ১৫

সদাহাস্যময় পদার্থবিজ্ঞানী রিচার্ড ফাইনম্যান এবং তাঁর QED থিওরি 

পূর্ণ চন্দ্র ভূঞ্যা


'গ্রাউন্ড জিরো'তে উপস্থিত শ-আড়াই বৈজ্ঞানিক। ১৯৪৫ সালের জুলাই মাসের ষোলো তারিখ। ঐতিহাসিক ক্ষণ সমাগত প্রায়। দীর্ঘ আড়াই বছরের কঠোর পরিশ্রমে তৈরি হয়েছে যে-বোমা তার সফল প্রয়োগ স্বচক্ষে দেখতে প্রহর গুণছেন পণ্ডিতগণ। 'গ্রাউন্ড জিরো'তে। 'গ্রাউন্ড জিরো' হল বোমা ফাটানোর জায়গা। সম্পূর্ণ জনশূন্য মরু প্রান্তর।নিউ মেক্সিকোর আলমোগোর্ডো। জোর্নাডা ডেল মুয়ের্তো মরুভূমির বুকে।

ইতিপূর্বে ১৯৪৫ সালের মাঝামাঝি সময়ে তিনটি পরমাণু বোমা তৈরি করেছে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র। দুটো প্লুটোনিয়াম পরমাণুর― 'ট্রিনিটি' আর 'ফ্যাটম্যান', একটি ইউরেনিয়ামের― 'লিটল বয়'। মোট দেড় হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে। এক একটি যেন সাক্ষাৎ ব্রহ্মাস্ত্র। তবে তা খাতায়-কলমে। বাস্তবে এর পরীক্ষামূলক প্রয়োগ আজ পর্যন্ত হয়নি। তাই 'গ্রাউন্ড জিরো'তে ব্যবস্থা করা হয়েছে 'ট্রিনিটি' টেস্টের। নির্ধারিত দিনে আলমোগোর্ডোর জনবিরল প্রান্তরে উপস্থিত হয়েছে সকলে।

'গ্রাউন্ড জিরো' থেকে প্রায় নয় কিলোমিটার দূরে বসানো হয়েছে তিনটি অবজারভেশন পোস্ট। বিশেষভাবে নির্মিত ভূগর্ভস্থ গুহায়। বিস্ফোরণের তীব্রতা মাপা হবে এখানে। রেকর্ড করা হবে ক্ষয়ক্ষতির হিসাব। বেসক্যাম্প পাতা হয়েছে ষোলো কিলোমিটার দূরে। সেখানে সমস্ত বৈজ্ঞানিককে দাঁড়িয়ে দেখা নয়, উপুড় হয়ে শোওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। চোখ-কান বন্ধ করে। ঠ্যাঙ বোমার দিকে, মাথা উল্টোদিকে। সকলের কানে তুলো গোঁজা থাকবে। নয় কিলোমিটার দূর থেকে বোতাম টিপে রেডিও'র মাধ্যমে ফাটানো হবে বোমা। এদিকে বৃষ্টি শুরু হল। রাত দুটোর পর পরিস্কার হবে আকাশ― আবহাওয়াবিদদের এমনই পূর্বাভাস। 
      
শেষমেশ বৃষ্টি থামলে কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গেল। তিরিশ, উনত্রিশ, আঠাশ...। সবাই চোখ-কান বন্ধ করে উপুড় হয়ে শুয়ে প্রতীক্ষা করছে ঐতিহাসিক মূহুর্ত্তের। একজন খালি এ আদেশ মানেননি। আর মাত্র সাত সেকেন্ড বাকি। এমন সময় তড়াক করে লাফিয়ে উঠে দাঁড়ালেন তিনি। বলে ওঠেন― 'দুত্তোর! দশ মাইল দূরে ঘোড়ার ডিম হবে।'
নোবেলজয়ী আর্নেস্ট লরেন্স শুয়ে আছেন তাঁর পাশে। কানে তুলো গোঁজা। তবুও ঠিক শুনতে পেলেন কথাটা। তবে কে উঠে দাঁড়িয়ে পড়েছে ঠাহর করতে পারছেন না। চোখ বন্ধ অবস্থায় লরেন্স পাশ থেকে বলে বসেন―'আরে, মশাই, শুয়ে পড়ুন! না হলে মারা পড়বেন যে!
লোকটাও চিৎকার করে উঠল― 'কী বকছেন স্যার পাগলের মতো।'
এবার না-দেখেও লোকটিকে চিনতে অসুবিধা হল না লরেন্সের। কিন্তু জবাব দেওয়ার সময়ও ছিল না। তার আগেই ঘোষক বল্লে― 'নাউ'। 
ঘড়িতে তখন সময় সকাল পাঁচটা উনত্রিশ। আর মূহুর্তে আলোয় আলোময় হয়ে উঠল চারপাশ। চোখ ঝলসে গেল। চোখে আর মাথায় যন্ত্রণা অনুভূত হল লোকটার। ঠিক দেড় মিনিট পরে এল বিস্ফোরণের শব্দ। লরেন্স ঠিকই চিনেছিল― লোকটা আর কেউ নয়, সদাহাস্যময় রিচার্ড ফাইনম্যান। সম্মুখে যত বড় পণ্ডিত ব্যক্তিই উপস্থিত থাকুন না কেন, কথায় কথায় 'পাগলের মতো' শব্দবন্ধটি তিনি ব্যবহার করবেনই। নিজের অজ্ঞাতে। সেটি তাঁর মুদ্রা দোষে পরিনত হয়েছে। বলা যায়, তাঁর ট্রেডমার্ক ফ্যাশন। তখন চোখে না দেখেও শুধু কানে শুনে বলে দেওয়া যায় বক্তার নাম।

একবার লস অ্যালামসে প্রথমবার বক্তৃতা দিতে এসেছেন বর্ষীয়ান সায়েন্টিস্ট নীলস বোহর। সবার খুব শ্রদ্ধার পাত্র তিনি। নিজের নতুন আবিষ্কার প্রসঙ্গে লেকচার দিতে তাঁর এখানে আসা। নির্ধারিত দিনের আগের দিন ফাইনম্যানের টেলিফোনের রিং বেজে উঠল। ফোনের ওপাশ থেকে―
'আমি জিম বেকার বলছি। বাবা আপনার সঙ্গে একটিবার সাক্ষাৎ করতে চান। আপনি একবার গেস্ট হাউসে আসবেন, প্লিজ।'
'জিম বেকার। কিন্তু আমি ঠিক আপনাকে চিনতে পারছি না'― অবাক হয়ে ফাইনম্যান বললেন।
'আমার বাবার নাম নিকোলাস বেকার।'
চমকে ওঠে ফাইনম্যান। সব মনে পড়ে যায়। নিকোলাস বেকার আসলে নীলস বোহর-এর ছদ্মনাম। ম্যানহাটন প্রোজেক্টের জন্য। শ্রদ্ধেয় বৈজ্ঞানিকের ছেলে জিম বেকার ওরফে অ্যাগি বোহর। ঘটনার আকষ্মিকতায় খানিকটা কিংকর্তব্যবিমূঢ় ডিক তথা ফাইনম্যান। শ্রদ্ধেয় বৈজ্ঞানিক কেন তাঁকে ডাকবেন? ওভারকোটটা গায়ে চাপিয়ে তড়িঘড়ি গেস্ট হাউসে পৌঁছে গেলেন ডিক। সেখানে তাঁর জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন সিনিয়র বোহর। ডিককে দেখে তিনি বলে উঠলেন― 
'তুমিই বুঝি ফাইনম্যান?'
'ইয়েস, প্রফেসর।'
'বস। এই হল আমার রিপোর্ট।'
আটটা অজ্ঞাত চলরাশি আর সাতটা মাত্র সমীকরণ। তা দিয়েই পেতে হবে সমাধান। আপাত অসম্ভব কাজ। প্রফেসর বোহর অনেক ভেবেচিন্তেও তার সমাধান পাননি। অথচ আগামীকাল বক্তৃতার দিন ধার্য হয়েছে। তাই এ হেন সমাধানের গুরুভার ন্যস্ত হয়েছে ডিক-এর উপর। অঙ্কটা দেখেই হঠাৎ চিৎকার করে ওঠে ডিক―
'কী লিখেছেন মশাই পাগলের মতো!'
ব্যস আর যায় কোথায়! পাশে দাঁড়িয়েছিল জিম বেকার। মূহুর্তে কর্ণমূল লাল হয়ে ওঠে তার। কী শুনল নিজের কানকেই বিশ্বাস করতে চাইছে না। তার বাবাকে কেউ পাগল বলে সম্বোধন করতে পারে, এতদিন এটা তার কাছে কল্পনাতীত ছিল। যদিও রাত তিনটে নাগাদ শেষ হল অঙ্ক কষা। মিলল সমাধান।
ফিরে আসার সময় অতিথিকে দরজা পর্যন্ত এগিয়ে দিতে এলেন জিম। ফাইনম্যান তাকে জিজ্ঞেস করলেন―
'আচ্ছা, এত বৈজ্ঞানিক থাকতে আমাকে কেন ডেকে পাঠালেন আপনার বাবা?'
'শিকাগোতেই আপনার নাম শুনেছিলেন বাবা।'
'কিন্তু আমি এখনও বুঝতে পারছি না; ফার্মি, বেথে, ৎজেলার্ড, ফন নয়ম্যান-এর মতো আরও সব ধুরন্ধর বৈজ্ঞানিক থাকতে প্রফেসর আমাকে ডেকে পাঠালেন কেন?'
'তাদের কেউ আমার বাবাকে 'পাগল' বলবার সাহস রাখেন না।'
''পাগল'! কে বলল?'
'কেন? আপনি তো বলেছেন?'
'কে? আমি? ইম্পসিবল। আমি, রিচার্ড ফাইনম্যান প্রফেসর নীলস বোহরকে পাগল বলব! কী সব বলছেন পাগলের মতো?'

লস অ্যালামসে সবচেয়ে অদ্ভুত চরিত্র হচ্ছেন এই রিচার্ড ফাইনম্যান। ডাক নাম ডিক। ম্যানহাটন প্রোজেক্টে আরও একখানি ছদ্মনাম চালু হয়েছিল তাঁর― মসকুইটো বোট। অসম্ভব ফুর্তিবাজ একজন মানুষ। দুষ্টুমিতে ভরা। একেবারে ছেলেমানুষ। দুর্দান্ত সব ধাঁধা তৈরি করতে পারতেন তিনি। বিভিন্ন ধাঁধার চটজলদি নিখুঁত উত্তর দেওয়া তাঁর জলভাত।

আপেক্ষকীয় বলবিজ্ঞান এবং কোয়ান্টাম মেকানিক্স যখন সমৃদ্ধ হয়ে উঠছে, নিত্য নতুন সমীকরণ আবিষ্কারে কোয়ান্টাম বলবিজ্ঞান সাবালক হচ্ছে; ঠিক এরকম একটা আবহে ১৯১৮ সালের মে মাসের এগারো তারিখে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের অন্তর্গত নিউইয়র্ক শহরের 'কুইন্স'-এ জন্মগ্রহণ করেন ফাইনম্যান। পুরো নাম রিচার্ড ফিলিপস ফাইনম্যান। বড়ো হয়ে ওঠা 'ফার রক-অ্যাওয়ে'তে। ছোটবেলায় তাঁর ডাক নাম ছিল রিট্টি। তাঁর ব্যবসায়ী পিতা রুশীয় ইহুদী মেলভিল আর্থার ফাইনম্যান মাত্র পাঁচ বছর বয়সে রাশিয়া ছেড়ে আমেরিকা চলে আসেন। তাঁর মাতা লুসিল ফিলিপস পোল্যান্ডের অধিবাসী। রিট্টি'র পিতা-মাতা উভয়েই চাইতেন তাদের প্রথম সন্তান পুত্র সন্তান হোক আর বড় হয়ে সে-ছেলে সায়েন্টিস্ট হবে। সেই মত তাঁকে গড়ে তুলেছেন তাঁর বাবা-মা। জন্মসূত্রে ইহুদি হলেও রিট্টিকে মুক্ত মনের মানুষ হিসেবে গড়ে তুলেছিলেন তারা। মেলভিল ছেলের মধ্যে যথার্থ বিজ্ঞানানুরাগ সঞ্চারিত করতে সমর্থ হয়েছেন। ফলে, বিজ্ঞানী ফাইনম্যান হয়ে ওঠেন মুক্ত মনের মানুষ। ছোট্ট রিচার্ড ছেলেবেলাতে তাঁর মায়ের কাছ থেকে গল্প বলার ক্ষমতা ও কৌতুক করার মানসিকতা পেয়েছিলেন। পরবর্তী জীবনে এই দুটি গুণ রিচার্ড-এর মধ্যে অত্যন্ত সাবলীলভাবে গ্রথিত হয়েছিল।
            
রিচার্ড-এর একটি ছোট্ট বোন ছিল জোয়ান। তাঁর থেকে নয়-দশ বছরের ছোট। জোয়ানের বয়স যখন তিন-চার বছর, গভীর রাতে ঘুম ভাঙিয়ে বোনকে নিয়ে ফার রক অ্যাওয়ের গল্ফ কোর্সে চলে যেত কিশোর রিট্টি। একটা বিষ্ময়কর দৃশ্য দেখাতে। গল্ফ কোর্সের অন্ধকার মোড়া আকাশের গায়ে ফুটে উঠত মেরু জ্যোতির অপূর্ব সব দৃশ্য। এই বিরল আলোর জ্যোতি দেখে মুগ্ধ ও বিষ্মিত হত ছোট্ট জোয়ান। ভবিষ্যতে এই জোয়ান একজন বিখ্যাত জ্যোতিঃপদার্থবিজ্ঞানী হয়েছিলেন।

ফাইনম্যানের প্রথম স্কুল ছিল 'পাবলিক স্কুল 39' পরবর্তীতে যা খুব খ্যাত হয়েছিল নিউইয়র্কে। অবশ্য স্কুলে ঢোকার আগেই বীজগণিতে বেশ দক্ষ হয়ে উঠেছিল সে। কিশোর বয়সে নিজের শোবার ঘরে একটি ছোটখাটো ল্যাব‍রেটরি বানিয়ে ফেলেছিল। পরীক্ষাগারে তাঁর প্রিয় বিষয় ছিল তড়িৎ এবং তড়িৎ সংক্রান্ত বর্তনী। এছাড়াও থাকত রাসায়নিক, দূরবীনের লেন্স আর অন্যান্য যন্ত্রপাতি। তখনই সে বানিয়ে ফেলল 'বার্গলার অ্যালার্ম' (Burgler Alarm)। রেডিও'র খারাপ হয়ে যাওয়া বর্তনীগুলো এই বয়সে সহজাত দক্ষতায় সারিয়ে তুলতে পারত সে। স্কুলের কবিতা লেখার হোমওয়ার্ক খাতায় তাঁর লেখা কবিতার মধ্যে প্রচ্ছন্নভাবে বিজ্ঞান ধারণা অন্তর্ভুক্ত হয়।

নিউইয়র্কের হাইস্কুলগুলির মধ্যে প্রায়শই অঙ্ক নিয়ে প্রতিযোগিতা হত। প্রতিটি স্কুল থেকে পাঁচ জনের একটি দল প্রতিযোগিতায় অংশ নিত। একজন মাস্টার মশাই-এর কাছে একই সারিতে পাশাপাশি বসত দুটি দল। দুই দলকে একই অঙ্ক কষতে দেওয়া হত। যে-দল এই বুদ্ধিদীপ্ত প্রশ্নের সঠিক উত্তর প্রথম দিত, সে-দলকেই জয়ী ঘোষণা করা হত। স্কুলের ক্লাস রুমে বসত এই প্রতিযোগিতা। ফাইনম্যানের অত্যন্ত পছন্দের ছিল প্রতিযোগিতাটি। অঙ্কের প্রতি তাঁর প্রবল আকর্ষণ। ছাত্র জীবনে এ হেন অঙ্কের প্রতিযোগিতা অন্য মাত্রা এনেছিল। তাঁদের একটা 'ফিজিক্স ক্লাব'ও ছিল। সেখানে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা হাতেকলমে করে দেখানো হত। একবার স্কুলে তাঁর 'বুদ্ধ্যঙ্ক' (IQ) মাপা হয়। আইকিউ-এর স্কোর হয়েছিল ১২৫। যা প্রমাণ করে স্কুলজীবনে তাঁর বুদ্ধিমত্তা খুব বেশি আহামরি কিছু ছিল না। গড়পড়তা রেজাল্ট। গণিত ও বিজ্ঞান ছাড়া বাকি বিষয়ে ফল আশানুরূপ নয়। ফার রকঅ্যাওয়ে হাইস্কুলে তাঁর স্কুল জীবন শেষ হয় ১৯৩৫ সালে। ওই বছরই নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত প্রতিযোগিতায় তিনি প্রথম হন।

স্কুল ছাড়ার পর অনেক কলেজ-ইউনিভার্সিটিতে দরখাস্ত করলেন। সে-সময় কলেজ-ইউনিভার্সিটিতে ইহুদীদের জন্য খুব কম সংখ্যক আসন সংরক্ষিত ছিল। তাই শুধুমাত্র ইহুদি হওয়ার সৌজন্যে সব আবেদন বাতিল হয়ে যায়। শেষমেশ ভর্তি হলেন 'ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি' (MIT)-তে। অঙ্ক নিয়ে পড়াশুনা শুরু করলেন। শেষ করলেন পদার্থবিজ্ঞানে অনার্স ডিগ্রি অর্জন করে। তিনি কলেজে 'Phi Beta Delta' নামের Fraternity-তে যোগ দিয়েছিলেন। এই সময় তিনি 'ড্রাম' বাজানোয় খুব পারদর্শী হয়ে উঠলেন এবং তাঁর গভীর বন্ধুত্ব হয়েছিল সুন্দরী আরলাইন গ্রিনবাউম-এর সঙ্গে। বান্ধবীকে 'আরলিন' নামে ডাকতে বেশি স্বচ্ছন্দ বোধ করেন তিনি। MIT-তে চার বছর পড়াশুনার পর ১৯৩৯-এ ফাইনম্যান ফিজিক্সে অনার্স-সহ স্নাতক হলেন। 
             
স্থির করলেন MIT-তে ডক্টরেট সম্পূর্ণ করবেন। অধ্যাপক জন স্লেটার তখন MIT-র ফিজিক্সের বিভাগীয় প্রধান। ফাইনম্যান দেখা করলেন অধ্যাপকের সঙ্গে। ব্যক্ত করলেন মনের সুপ্ত বাসনা। অধ্যাপক তাকে পাঠিয়ে দিলেন প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটি। প্রিন্সটনের হ্যারি স্মিথকে লিখলেন চিঠি। বলা ভাল, একখানা সুপারিশ চিঠি। কিন্তু স্লেটার-এর কাছে জানতে চাইলেন স্মিথ― 
'Is Feynman Jewish?' ফাইনম্যান কি ইহুদি?
ব্যাস, নাকচ হয়ে গেল প্রিন্সটনে মেধাবী ফাইনম্যানের ডক্টরেটে ভর্তির সুপারিশ। স্লেটার আবারও চিঠি লিখলেন স্মিথকে। তাঁর সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দিলেন যত্ন করে। এবার বরফ গলল। স্লেটারের সনির্বন্ধ অনুরোধে 'ইহুদি' ফাইনম্যান ডক্টরেটে ভর্তি হয়ে গেলেন প্রিন্সটনে। অধ্যাপক জন হুইলার-এর অধীন শুরু হল গবেষণা। তাঁর প্রথম সেমিনারে ফিজিক্সের দিকপাল সব পণ্ডিত শ্রোতা হয়ে উপস্থিত ছিলেন। আলবার্ট আইনস্টাইন, পাউলি আর ভন নিউম্যান। কোয়ান্টাম বলবিজ্ঞানকে তিনি নতুনভাবে উপস্থাপন করলেন 'ন্যূনতম ক্রিয়া' (Least Action)-র নীতি প্রয়োগ করে।

এসময় জোরকদমে শুরু হয়ে গেছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ। ১৯৪১-এ আমেরিকা সরাসরি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে। এরই সূত্র ধরে ১৯৪১―১৯৪২ সালে ফাইনম্যান জড়িয়ে পড়লেন ম্যানহাটন প্রোজেক্টে। গবেষণার পাশাপাশি পরমাণু বোমা কর্মসূচিতে অংশ নিতে তাঁকে বাধ্য করা হল। এতে খুব অসন্তুষ্ট হলেন তিনি। বোমা প্রকল্পে কাজ না-করেও উপায় নেই। প্রিন্সটনে থেকেই কাজ করতে লাগলেন ম্যানহাটন প্রকল্পে। তেজস্ক্রিয় ইউরেনিয়াম―২৩৮ থেকে কীভাবে ইউরেনিয়াম―২৩৫ পরমাণুকে পৃথক করা যায় তার তত্ত্ব আবিষ্কার করা তাঁর কাজ। ১৯৪২ সালে প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেট উপাধি পেলেন।

ডক্টরেট প্রাপ্তির কিছুদিন পর কলেজ জীবনের বান্ধবী 'আরলিন'কে বিয়ে করতে চাইলেন। বাড়ির সকলে অরাজি। কারণ অতি সম্প্রতি আরলিন যক্ষ্মা রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। বেশিদিন বাঁচবেন না। তখন এ রোগ ছিল দুরারোগ্য ব্যাধি। যক্ষ্মারোগগ্রস্থদের বিবাহও নিষিদ্ধ ছিল সে-সময়। ফাইনম্যান কারও কথা শুনলেন না। বিয়ে করলেন আরলিনকে। ইতিমধ্যে গণিতবিদ ও পদার্থবিজ্ঞানী হিসাবে প্রিন্সটনে বেশ সুনাম ছড়িয়েছে তাঁর। বিয়ের পরে পরে পদার্থবিজ্ঞানী রবার্ট উইলসনের নির্দেশে রওনা হয়ে গেলেন লস অ্যালামস। সেটা ১৯৪৩ সালের গোড়ার দিক। সেখানে তখন পুরোদমে চলছে পরমাণু বোমা তৈরির কাজ। ফাইনম্যান রইলেন লস অ্যালামসে। আর আরলিনকে ভর্তি করে দিলেন আলবুকের্কের হাইওয়ের ধারে একটি স্যানাটরিয়ামে। এখানে তাঁর চিকিৎসা ঢিলেতালে চলতে থাকে। কারণ বহুবিধ। এক, হাসপাতালে কর্মী সংখ্যা অত্যন্ত কম এবং ব্যবস্থাপনাও বেশ খারাপ। দুই, যক্ষ্মা রোগের প্রকৃত চিকিৎসা কী তা কারও জানা ছিল না সেসময়। ফলে আরলিনের অবস্থা দিনকে দিন খারাপ হতে থাকে। কাঠের খাটে শুয়ে বেশির ভাগ সময় মৃত্যু চিন্তায় দিন কাটে তাঁর।

এই সময় শুক্রবার বিকেলে অথবা শনিবার সকালে আরলিনের কাছে যেতেন ফাইনম্যান। তাকে দেখতে। সঙ্গ দিতে। সপ্তাহের বাকি সময় লস অ্যালামসে ব্যস্ত থাকতেন বোমা সংক্রান্ত কাজে। এত ব্যস্ততার মধ্যেও নিয়মিত চিঠি লিখতেন প্রিয়তমা পত্নীকে। আরলিন যে আর বেশিদিন বাঁচবেন না তা একপ্রকার স্থির হয়ে গেছিল। তবুও স্বামীকে ভবিষ্যৎ জীবনের নানান রঙিন স্বপ্ন দেখাতেন আরলিন। আর আড়ালে রাতের পর রাত কেঁদে ভাসাতেন নিজে। নিজের কষ্টের জন্য। স্বামীকে সুখ না-দিতে পারার জন্য। 

অফিসে এসময় লোকের আনাগোনা ও চিঠিপত্রের ওপর খুব সেনসরশিপ করা হত। আসলে গোপনীয়তার মোড়কে বোমা তৈরির কাজ চলছে সেখানে। খুব সেনসিটিভ বিষয়। বাকি বিশ্বের চোখের আড়ালে চলছে সে-কাজ। তাই এত নিরাপত্তার বেড়াজাল। সেনসরের বড় কর্তা ম্যাককিলভি না-পড়ে কোনও চিঠি পাস করেন না। তা নিয়ে ফাইনম্যানের সঙ্গে একবার খুব জোর বেধে গিয়েছিল ম্যাককিলভি'র। সেজন্য অধিকাংশ সময় সাংকেতিক ভাষায় চিঠি লিখতে শুরু করলেন ফাইনম্যান। 
          
একবার ফাইনম্যান দেখলেন তাঁর প্রেমপত্রখানা খোলা অবস্থায় ফেরৎ নিয়ে এসেছে ম্যাককিলভি। কী ব্যাপার? দেখা গেল― এক জায়গায় ফাইনম্যান স্ত্রীকে লিখেছেন 'সাত হাজার ফুট উঁচুতে থাকায় নিউ মেক্সিকোর গরমটা আমরা টের পাচ্ছি না'। বোঝ ঠ্যালা! এর জন্য আটকে পড়েছে চিঠিখানা। ম্যাপ খুলে তাঁর স্ত্রী খুব সহজেই বুঝে যাবেন বিজ্ঞানীর অবস্থান― এই ভয়ে আটকে গিয়েছে চিঠি। কেটে বাদ দিতে হবে এ লাইন― এমনটাই ম্যাককিলভির হুকুম। রাগে গর গর করতে করতে চিঠিখানা ছিনিয়ে নিলেন ফাইনম্যান। তারপর কুচি কুচি করে ছিঁড়ে ফেলে দিলেন ডাস্টবিনে। হাসতে হাসতে ফিরে গেল ম্যাককিলভি।

কিন্তু পরক্ষণেই ফিরে এল সে। হাতে যথারীতি ধরা আরেকখানা চিঠি। খাম খোলা। এবার ফাইনম্যান স্ত্রীকে লিখেছেন―
''RETEP' কেমন আছে? SBM OBMOTA এ বছর এসে পৌঁছতে পারবেন বলে মনে হয় না।'
পড়ে মাথামুন্ডু কিছু বুঝতে পারেনি ম্যাককিলভি। অগত্যা চিঠির প্রেরকের নিকট আগমন। বললেন―
'Retep অথবা Sbm. Obmota কারও নাম হয় নাকি? এক্সট্রিমলি সরি, প্রফেসর, এমন অদ্ভুত নাম আমি জীবনে শুনিনি।'
'ঠিক তাই। এমন অদ্ভুত নাম আমিও প্রথম শুনছি। আর প্রফেসর ফাইনম্যান কে? আমি তো মিস্টার হেইলি!'
'না...মানে...ইয়ে...হয়েছে কী, এখানে তো বাইরের কেউ নেই। তাই...'― থতমত খেয়ে বলে ম্যাককিলভি।
'বাইরের কেউ নেই বলে আপনি কোডনেম বাদ দিয়ে আমাকে 'প্রফেসর ফাইনম্যান' বলে ডাকবেন? আপনার আষ্পর্ধা কম নয় তো! জানেন, দেওয়ালেরও কান আছে! আপনার বিরুদ্ধে আমি উচ্চ কর্তৃপক্ষকে রিপোর্ট করতে পারি?'―বেশ করে ধমকে দেয় ফাইনম্যান। 
ধমক খেয়ে একেবারে মিইয়ে যায় বেচারি। বলে―
'আমি দুঃখিত। কিন্তু চিঠির সারবত্তা কিছুই যে বোধগম্য হচ্ছে না প্রফেসর।'
ফাইনম্যান গম্ভীর হয়ে বল্লেন―
'প্রেমপত্রটি আপনাকে লিখিনি আমি। আপনার না বুঝলেও চলবে।'
'কিন্তু স্যার, না-বুঝে কী করে পাস করি বলুন? নিদেনপক্ষে 'Retep' ও 'Sbm. Obmota' এ দুটো কথার অর্থ কি, দয়া করে যদি বলেন?'
''Retep' হচ্ছে 'Peter'― আমার ছেলে আর 'Sbm. Obmota' হচ্ছেন Mrs. Mobota― আমার পুত্রের গর্ভনেস, কিউবান মহিলা। ছুটি নিয়ে দেশে গেছেন। এ বছর আর ফিরবেন বলে মনে হয় না।'
ওহ, এই সামান্য কথা! যেন ঘাম দিয়ে জ্বর ছাড়ল ম্যাককিলভির। অসংখ্য ধন্যবাদ জানিয়ে বিদায় নিলেন। পাস হয়ে যায় চিঠি। কিন্তু রিটার্ন চিঠিতে তাঁর স্ত্রী লেখে 'পিটার' নামে তাদের কোনও পুত্র সন্তান ছিল না। এমনকি Mrs. Mobota নামে কোনও কিউবান মহিলাকে জানেন বা চেনেন না তাঁর পত্নী। এ চিঠি দেখে আকাশ থেকে পড়লেন সিকিউরিটি অফিসার। অজানা ভয়ে সারা শরীর কাঁপছে। এই ঘটনায় পাক্কা তিন বছর নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারেনি ম্যাককিলভি।

এভাবে শত শত বিজ্ঞানীর দীর্ঘ আড়াই বছরের দিন-রাত-এক-করা-পরিশ্রমে তৈরি হল তিনটি পরমাণু বোমা। 
১৯৪৫-এর জুনে। ১৬ জুলাই ভালোয় ভালোয় ট্রিনিটি টেস্ট সম্পন্ন হল। লিটল বয় আর ফ্যাটম্যান'কে  ফেলা হল যথাক্রমে হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে। আগস্ট মাসের ছয় ও নয় তারিখে। ছয়ই আগস্ট পরমাণু বোমার সাফল্যে লস অ্যালামসে তখন মিশ্র প্রতিক্রিয়া। 
ক্লাউস ফুকস বললেন― 'আজ উৎসব হবে। সারা রাত সবাই নাচব। খানা, পিনা ঔর নাচনা!'
ৎজেলার্ড বলেছিলেন― 'ছয়ই আগস্ট তারিখটা আমার জীবনে একটা কালো দিন।' 
অধিকাংশ বিজ্ঞানী সেদিন আনন্দ উৎসবে মেতে উঠলেও কতিপয় বৈজ্ঞানিক এক লক্ষ জাপানির মৃত্যুতে তীব্র শোকাহত। গভীর বেদনায় তাদের অন্তরাত্মা সেদিন নিজেদের ধিক্কার জানিয়েছিল। একটা পাপ বোধ কুরে কুরে খাচ্ছিল তাদের হৃদয়। তারা সেদিন উৎসবে যোগদান করতে অস্বীকার করলেন। ব্যাঙ্কোয়েট হল ছেড়ে বেরিয়ে গেলেন নিরবে। এদের অন্যতম হাঙ্গেরিয় লিও ৎজেলার্ড এবং আমেরিকান রিচার্ড ফাইনম্যান। 
           
অনেক পরে এই ট্রমা থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছিলেন ফাইনম্যান। ইতিমধ্যে তাঁর যক্ষ্মারোগগ্রস্থ প্রিয়তমা পত্নী আরলিন ট্রিনিটি টেস্টের আগে দেহত্যাগ করেছেন ১৯৪৫-এ। সে-বছর নভেম্বর মাসে তিনি অধ্যাপক পদে যোগ দিলেন করনেল বিশ্ববিদ্যালয়ে। ১৯৪৬-এ মারা গেলেন তাঁর পিতা মেলভিন ফাইনম্যান। সব হতাশা কাটিয়ে উঠলেন ১৯৪৬-এর শেষে। চার বছর পর ১৯৫০-এ অধ্যাপক পদের জন্য দুটি ইউনিভার্সিটি থেকে ডাক এল। প্রথমত, ক্যালিফোর্নিয়ার পাসাডেনার 'ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি', সংক্ষেপে 'ক্যালটেক' (Caltech)। দ্বিতীয়ত, প্রিন্সটনের 'ইনস্টিটিউট ফর অ্যাডভান্সড স্টাডি'। ছাত্র পড়ানো ফাইনম্যানের কাছে নেশার মতো ছিল। অথচ প্রিন্সটনে ছাত্র পড়ানোর সুযোগ নেই। তাই বেছে নিলেন 'ক্যালটেক'। এখানে এসে তিনি সম্পূর্ণ মনোনিবেশ করেন ফিজিক্সে। অসাধারণ প্রতিভাসম্পন্ন ফাইনম্যান তাঁর কোয়ান্টাম-তড়িৎ-গতিবিদ্যার (Quantum Electrodynamics বা QED) মাধ্যমে আলো এবং বস্তুকণার মিথস্ক্রিয়ার যে তত্ত্ব খাড়া করেন, তা তরঙ্গ এবং কণার ধারণা বদলে দেয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর পদার্থবিজ্ঞানীদের মধ্যে সবচেয়ে বুদ্ধিমান ও প্রভাবশালী বৈজ্ঞানিকে পরিনত হন তিনি। কোয়ান্টাম বলবিজ্ঞান নতুন গতি লাভ করে তাঁর প্রতিভার ছোঁয়ায়। সেজন্য ১৯৬৫ সালে ফিজিক্সে নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনীত হলেন। তাঁর QED সংক্রান্ত তত্ত্ব আবিষ্কারের জন্য শিন-ইকিরো তোমোনাগা এবং জুলিয়ান সেমর সুইঙ্গারের সঙ্গে তিনি নোবেল পুরস্কার নিলেন সুইডেনের রাজা গুস্তাফ ষষ্ঠ অ্যাডলফ-এর হাত থেকে।

বাকি জীবনটা তিনি 'ক্যালটেক'-এ কাটিয়ে দেন। সারা জীবনে অনেক বই লিখেছেন ফাইনম্যান―
১) There's Plenty of Room at the Bottom, ১৯৬০
২) Quantum Electrodynamics, ১৯৬১
৩) Theory of Fundamental Process, ১৯৬১
৪) The Feynman Lectures on Physics, 3 vols, ১৯৬৩―১৯৬৫
৫) The Character of Physical Law, ১৯৬৫
৬) Photon-Hadron Interaction, ১৯৭২
৭) Statistical Mechanics: A set of Lectures, ১৯৭২
৮) Surely You are Joking Mr. Feynman! Adventures of a Curious Character, ১৯৮৫
৯) QED : The Strange Theory of Light and Matter, ১৯৮৫ ইত্যাদি।

১৯৮৭ সালের শরৎকালে ফাইনম্যানের শরীরে পুনরায় একটি টিউমার দেখা দিল। প্রথম ক্যান্সার দেখা দিয়েছিল নয় বছর আগে। ১৯৭৮-এ। তারপর আবার ১৯৮৭-তে। ততদিনে টিউমার ক্যান্সারে রূপান্তরিত হয়েছে। অস্ত্রোপচার করা হল। অবস্থার আরও অবনতি হলে ১৯৮৮ সালের ৩-রা ফেব্রুয়ারি মাসে তাঁকে UCLA হাসপাতালের আইসিইউ (ICU)-তে ভর্তি করা হল। পরীক্ষা করে দেখা গেল পাকস্থলী ও ক্ষুদ্রান্ত্রে ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে। ক'দিনের মধ্যে দ্বিতীয় কিডনি কাজ করা বন্ধ করে দিল। দুটো কিডনি অকেজো। ডায়ালিসিস চলল ক'দিন। এদিকে রোগীকে নিয়ে মহাসমস্যায় পড়া গেল। ডায়ালিসিস করাতে আর আগ্রহী নন তিনি। শান্তভাবে বললেন―
'আমি মরতে চলেছি। আমার মৃত্যু আসন্ন।' 
তাঁর ইচ্ছানুসারে বন্ধ করে দেওয়া হল ডায়ালিসিস। স্বেচ্ছায় মৃত্যুর প্রতীক্ষায় দিনক্ষণ গুণতে শুরু করলেন তিনি। যন্ত্রণা কমানোর জন্য 'মরফিন' দেওয়া হল মাঝে-সাঝে। আর অক্সিজেন। জবাব দিয়েছেন ডাক্তাররা। শেষমেশ ১৯৮৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের পনেরো তারিখে শেষ হল লড়াই। চিরঘুমের দেশে চলে গেলেন বিংশ শতাব্দীর অন্যতম সেরা তীক্ষ্মধী বিজ্ঞানী রিচার্ড ফিলিপস ফাইনম্যান। এক বর্ণময় কর্মজীবনের বর্ণাঢ্য পরিসমাপ্তি ঘটল।

আরও পড়ুন 

Post a Comment

0 Comments