জ্বলদর্চি

জঙ্গলমহলের জীবন ও প্রকৃতি/পর্ব -৭/ সূর্যকান্ত মাহাতো

জঙ্গলমহলের জীবন ও প্রকৃতি

পর্ব -৭

নয়াগ্রাম রাজবংশ ও তপোবন

সূর্যকান্ত মাহাতো


জঙ্গলমহলে অবস্থিত 'নয়াগ্রাম' নামটা শুনলেই যে দুটো জিনিস সবার প্রথমে মাথার মধ্যে ঘোরাফেরা করে তাঁর একটা হল, রাজাদের ইতিহাস, আর অন্যটা হল এক টুকরো রামায়ণের পৌরাণিক কাহিনী। 

ঝাড়গ্রামের বড় বড় শাল গাছের সৌন্দর্য অতিক্রম করে বেশ কিছুটা এগোলেই পড়বে লোধাশুলি। তারপর হাইওয়ে দিয়ে আরো বেশ কয়েক কিলোমিটার এগোলেই পড়বে গোপীবল্লভপুর যাওয়ার রাস্তা। গোপীবল্লভপুর ঢোকার মুখেই পড়বে সুবর্ণরেখা নদী। নদীগর্ভের বিস্তৃত বালুকারাশির বুক দিয়েই সুতোর মতো বয়ে চলেছে তার প্রবাহ ধারা। দীর্ঘ সেতুপথের উপর দিয়ে যেতে যেতে সুবর্ণরেখার সৌন্দর্যে একরকম মুগ্ধ হয়ে পড়তেই হবে।  তারপর আরও দীর্ঘ চল্লিশ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত এই নয়াগ্রাম। ধু ধু করছে মাঠ। মাঝে মাঝেই গভীর জঙ্গল। গ্রাম ও জনপদগুলোকে যেন সর্বক্ষণ আড়াল করে রেখেছে।

প্রথমেই নয়াগ্রাম রাজবংশের ইতিহাসে চোখ ফেরানো যাক। প্রায় পাঁচশ বছর আগে নয়াগ্রামে রাজত্ব করতেন রাজা প্রতাপচন্দ্র সিংহ। নয়াগ্রাম রাজ্যে দুটো গড় ছিল। একটি হল "খেলাড় বা খেলার গড়"। অন্যটি হলো "চন্দ্ররেখা গড়"। রাজা প্রতাপচন্দ্র সিংহ ছিলেন খেলার গড়ের রাজা। ১৪৯০ খ্রিস্টাব্দে তিনি খেলার গড়ের ভিত স্থাপন করেন। প্রতাপচন্দ্র সিংহ ছিলেন মান্ধাতা বংশের রাজা। তার পুত্র বলভদ্র সিংহ মান্ধাতা পরবর্তীকালে খেলার গড়ের নির্মাণ কাজ শেষ করেছিলেন। রাজবংশের কোনও কিছুই আজ আর অবশিষ্ট নেই। নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়া ভগ্নস্তূপের মধ্যে কেবল দেওয়ালের কিছু অংশ, কিছু ইঁট, এবং প্রবেশ দ্বারের কিছুটা অংশ এখনও কোনও মতে রয়ে গেছে। আর ঘোড়ার পিঠে চড়া কয়েকটি নর-নারীর মূর্তি কেবল দেখা যায়।  তবে এখানকার রাজাদের অবদান সেরকমভাবে কোনও কিছু নেই বললেই চলে।
নয়াগ্রামের অন্য গড়টির নাম হল, 'চন্দ্ররেখা গড়'। ষোড়শ শতাব্দীতে চতুর্থ রাজা চন্দ্রকেতু এই গড় নির্মাণ করেছিলেন। এই গড়ের আয়তন দৈর্ঘ্যে ১০৫০ গজ এবং প্রস্থে ৭৮০ গজের মতো। সুতরাং গড়টি যে আকারে বেশ বড় ছিল তা বলাই যায়। যদিও এই গড়ের কোনও কিছুই আজ আর অবশিষ্ট নেই। একরকম নিশ্চিহ্নই হয়ে গেছে বলা যেতে পারে।

নয়াগ্রামের 'মান্ধাতা' বংশের শেষ রাজা ছিলেন পৃথ্বীনাথ সিংহ মান্ধাতা। তার দুই রানী ছিলেন, কুঙরমণি ও গোলকমণি। রাজার কোনও পুত্র সন্তান ছিল না। ১৮৮৪ সালে রাজার মৃত্যুর পর তার দুই রাণীর মধ্যে উত্তরাধিকার নিয়ে বেশ বিবাদ ঘটেছিল। তাই ১৮৮৬ সালে নয়াগ্রাম এস্টেট "কোর্ট অব ওয়ার্ডস" এর হাতে চলে যায়। পৃথ্বীনাথ সিংহ এত বেশি দেনা করে গিয়েছিলেন যে, ১৮৯০ সালে ৫ লক্ষ টাকা দিয়ে মুর্শিদাবাদের নবাব নিলামে নয়াগ্রাম পরগণা কিনেও নিয়েছিলেন। নয়াগ্রাম রাজবংশের ইতিহাস তেমনভাবে উল্লেখযোগ্য ছিল না। ইতিহাস কেবল এটুকুই। রাজাদের প্রভাব বা অবদানও বিরাট রকমের ছিল না।

তবে নয়াগ্রাম এর পৌরাণিক ইতিহাস বরং অনেক বেশি গভীর। এমন কী এর প্রভাবও দারুণ রকমের।  নয়াগ্রাম রাজবংশের শেষ রাজার নাম পৃথ্বীনাথ সিংহ মান্ধাতা। নামের শেষটা শুনে বিস্মিত হয়ে আপনার মনে তখন প্রশ্ন জাগবে, 'মান্ধাতা?' মান্ধাতা নামটা শুনেই তখন মনে পড়ে যাবে পৌরাণিক কাহিনী ও তাঁর কথা। মনে পড়ে যাবে, 'মান্ধাতার আমল' বা 'মান্ধাতার যুগ' বলে কখনও পড়া ও শুনে আসা কথাগুলো। 'মান্ধাতার যুগ' মানে অতি প্রাচীনকাল বোঝাতেই কথাগুলো সাধারণত ব্যবহৃত হয়।

তা কে ছিলেন এই মান্ধাতা? বিষ্ণু পুরাণ মতে, মান্ধাতা ছিলেন নাকি সূর্য বংশের রাজা। বহু বছর পর এই মান্ধাতার বংশেই জন্ম নিয়েছিলেন পৌরাণিক রাজা রামচন্দ্র। যাইহোক মান্ধাতার পিতা ছিলেন যুবনাশ্ব। আশ্চর্যজনকভাবে হলেও সত্যি এই যে, মান্ধাতা নাকি তাঁর পিতৃ গর্ভেই জন্মগ্রহণ করেছিলেন।

কী ছিল সেই কাহিনী? যুবনাশ্ব দীর্ঘদিন ধরে নিঃসন্তান থাকায় সন্তান লাভের জন্য মুনি-ঋষিদের আশ্রমে কঠোর তপস্যা করেছিলেন। মুনি-ঋষিরা সেই কঠিন তপস্যায় সন্তুষ্ট হয়ে তখন যুবনাশ্বকে এক ঘড়া মন্ত্রপূত জল প্রদান করেন, তার পত্নীকে খাওয়ানোর জন্য। কারণ এই মন্ত্রপূত জল খেলেই যুবনাশ্বর স্ত্রী গর্ভবতী হয়ে পড়বেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে রাত্রিবেলায় যুবনাশ্বকে প্রবল জল তেষ্টা পেলে  ওই ঘড়ার মন্ত্রপূত  জল ভুল করে খেয়ে ফেলেন। কী হবে এবার? পরে অবশ্য মুনি-ঋষিরা জানালেন যে, যুবনাশ্বের গর্ভেই জন্ম নেবে সন্তান। তারপর মুনি-ঋষিরা যুবনাশ্বকে মাতৃ-যন্ত্রনা থেকে মুক্তি দিতে যুবনাশ্বের পেট কেটে মাত্র ১২ দিন পরেই জন্ম দিয়েছিলেন মান্ধাতাকে।

তবে অতি প্রাচীন সেই সূর্যবংশীয় রাজা  মান্ধাতার বংশই নয়াগ্রাম এর রাজবংশ কী না তা বলা সম্ভব নয়। সেটা বরং গবেষণার জন্যই তোলা থাক।

তবে মান্ধাতা রাজবংশ নয়, বরং নয়াগ্রাম অন্য একটি পৌরাণিক দিক থেকে অনেক বেশি উজ্জ্বল। তা হল তপোবন। সীতার চরিত্র নিয়ে যখন নানান প্রশ্ন উঠেছিল রামরাজ্যে, তখন এই তপোবনেই সীতাকে নির্বাসনে পাঠিয়ে ছিলেন স্বয়ং রাম। তাই তপোবন নামটির মাহাত্ম্য পৌরাণিক কাল থেকেই বেশ তাৎপর্যময়। অনেক বেশি গভীরও। জঙ্গলমহলেও যে এমন এক টুকরো রামায়ণ বা তপোবন স্বমহিমায় অবস্থান করছে তা অনেকেই জানে না। এখন সেটা পর্যটকদের কাছে বেশ আকর্ষণীয়ও হয়ে উঠেছে।
গোপীবল্লভপুর থেকে প্রায় ২০-২২ কিলোমিটার দক্ষিণ পূর্বে অবস্থিত তপোবন। বিশাল ঘন ও গভীর এক শালের জঙ্গল। নাম না জানা অন্যান্য গাছও আছে তার ফাঁকে ফাঁকে।  শুধু তপোবন নয়, এই আশ্রমের সাধু ও পূজারীরা বলছেন, ভারতে যে কয়েকটি তপোবন আছে তারমধ্যে এটা হল 'বাল্মীকি তপোবন'। এইটুকু পড়ে আপনারা হয়তো একটু বাঁকা হাসি হাসলেন! মনে মনে হয় তো ভাবছেন, কোথায় রামায়ণ, আর কোথায় জঙ্গলমহল! কোথায় অযোধ্যা আর কোথায় গোপীবল্লভপুর- নয়াগ্রাম। আপনি বাঁকা হাসি হাসতেই পারেন, সেটা আপনার নিজস্ব ব্যাপার। তাই বলে এটাকে হেসে উড়িয়ে দিলেই তো সেটা উড়ে যায় না। যেমনভাবে আছে, সেরকম ভাবেই সেটা থেকে যাবে। রামায়ণে বর্ণিত সেই তপোবন এই তপোবন কী না সেটা ঐতিহাসিক বা গবেষকরা ভালো বলতে পারবেন। রাম-সীতার কাহিনীর সঙ্গে জঙ্গলমহলের এই তপোবন কতটা অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত সেটাও গবেষকরা ভালোভাবে বলতে পারবেন। তবে বিশ্বাস করুন জায়গাটার নামকরণ "বাল্মীকি তপোবন" পৌরাণিক ভাবে যতটা না সার্থক, বাস্তব দিক দিয়ে বরং তার থেকেও ঢের বেশি যথাযথ ও সার্থক। অন্তত আমার তাই মনে হয়েছে, কারণ গোপীবল্লভপুর থেকে তপোবনে যাওয়ার সময় রাস্তার দু'পাশে একটু ছাড়া ছাড়াই মাঝে মাঝে চোখে পড়বে একমানুষ সমান উঁচু উঁচু বিশাল বিশাল আকারের "বল্মিক" বা উইয়ের ঢিবি। অদ্ভুতভাবে এই 'বল্মিক'গুলো তপোবনের মধ্যে এবং বাইরে বিশাল এলাকা জুড়ে এখানে ওখানে গড়ে উঠেছে। দেখতেও দারুণ! লাল ও মেটে রঙের ফুটো ফুটো শরীর নিয়ে লম্ব বা খাড়াভাবে উপরে উঠে গেছে একেবারে চুড়ার মতো। সুতরাং 'বল্মিক' থেকেই তো বাল্মীকি শব্দটি এসেছে। সেই দিক থেকে "বাল্মিকী তপোবন" নামটা তাই দারুণ রকমের সত্যি।

তপোবনে প্রবেশের সময় রাস্তার দুপাশে পড়বে গভীর শাল জঙ্গল। মাঝখানে সরু লাল মোরাম এর কাঁচা রাস্তা। অনেকটা নববধূর মাথায় লাল সিঁদুর মাখা সিঁথির মতো। জঙ্গলের অনেকটা ভিতরে ও গভীরে অবস্থান করছে একটি আশ্রম। আশ্রমে ঢোকার মুখেই পড়ে একটি খাল। নাম সীতানালা। কথিত সীতাদেবী নাকি এখানে স্নান করতেন। খালটা পেরোলেই মুখোমুখি পড়বে একটি বিশাল আকারের উঁচু বল্মিক বা উইয়ের ঢিবি। প্রতিবছর বর্ষার জলে ভেঙে পড়লেও অদ্ভুতভাবে আবার সেটা গজিয়ে ওঠে। এই বল্মিক দেখলেই মনে পড়ে যাবে বাল্মীকির কথা। তারপর যেই একটু ইতিউতি তাকাবেন অমনি বাম দিকের একটি বেদীর চোখ পড়ে যাবে। সেই উঁচু বেদীর উপর আছে একটি সমাধিক্ষেত্র। তার উপর লেখা আছে 'বাল্মিকী সমাধি'। সমাধির পাশেই আছে লব কুশের আঁতুড়ঘর। সর্বক্ষণ সেখানে অগ্নিকুণ্ড জ্বলে চলেছে। কত বছর ধরে সেটা জ্বলছে তা কেউ বলতে পারল না। উল্টোদিকে আছে রাম-সীতার মন্দির। তার পাশে একটি শিব মন্দিরও আছে। তবে দেখে মনে হল আশ্রমটা একটু একটু করে গড়ে তোলা হয়েছে। সেটা দেখলেই বোঝা যায়। তবে এর প্রাচীনত্ব হল এর প্রাকৃতিক রূপ। ঘন ও গভীর প্রাচীন জঙ্গল আর প্রাকৃতিক ভাবে গড়ে ওঠা জলধারা। বিশাল বিশাল দুটি ডুমুর ও তেঁতুল গাছ। ওই দুটো গাছের নিচেই গড়ে উঠেছে মুল আশ্রমটি। আছে একটি ফলে ভরা কেন্দুগাছও।

ঘন ও গভীর এই জঙ্গলের কোলে পৌঁছালেই এক প্রশান্তি আপনাকে ঘিরে ধরবে। চরম ব্যস্ততা আর আর সর্বক্ষণ ইঁদুর দৌড়ের জীবন  থেকে বেরিয়ে এসে এখানে পৌঁছালেই মনে হবে আহঃ!  কী দারুণ নিস্তব্ধতা, নীরবতা, নিঝঝুম নিরালা এক পরিবেশ। সত্যিকারের দু- দন্ড শান্তির এক জায়গা। নেই কোনও কোলাহল। আছে কেবল টুপটাপ পাতা খসার শব্দ, আছে তো মর্মর ধ্বনি, আছে ঝিরঝির করে বয়ে চলা জলের শব্দ। আর আছে শাল পাতার একটা বুনো গন্ধ। সেই সঙ্গে একটা অজানা চাপা ভয় বিরাজ করবে মনে প্রাণে। জঙ্গলের এই পরিবেশ আর বুনো গন্ধ আপনার গায়ে কাঁটা দেবে। সেইসঙ্গে মাঝে মাঝেই বুনোহাতির উপস্থিতি আপনার বুকের ধুকপুকুনিকে আরও কয়েকগুন বাড়িয়ে দিবে। মনে মনে তখন একটা বেশ আ্যডভেঞ্চার অনুভব হবে। আমি গত রবিবার(১৩/২/২২) যখন তপোবনে যাই, তখন সেখানে ১০ থেকে ১৫ টি বুনো হাতি জঙ্গলের মধ্যে ছিল। আশ্রমের পাশ দিয়েই তারা হেঁটে ঘুরে বেড়িয়েছে। গোল গোল বিশাল সেই পায়ের ছাপ তখনও বেশ টাটকা ছিল।

পূজারী জগন্নাথ দাস বলেন, হাতিগুলো যেমন ভয়ের, তেমনি আবার তাদের একরকম পাহারাদারও বটে। দুষ্টু লোকেরা রাত্রির অন্ধকারে হাতির ভয়েই আশ্রমের কোনও ক্ষতি করতে আসার সাহস পায় না।

সীতা-নালা খালটিও দেখতে বেশ সুন্দর। ইংরেজি ইউ(U) আকার নিয়ে তপোবনকে ঘিরে রয়েছে। তাই তপোবন সৌন্দর্যে বাস্তবিকই তপোবন হয়ে উঠেছে। বর্ষাকালে জঙ্গলের বন্যা বা ঢল কিংবা হড়কা বানের স্রোত খালের একটা পাড়কে এমন ভাবে ধসিয়ে দিয়েছে যে, সেটা দেখতে অনেকটা ছোটখাটো পাহাড়ের মতোই হয়ে উঠেছে। সেই পাড় ভাঙা পাহাড়টির একটি নামও আছে, তিলকমাটির পাহাড়। কপালে যে তিলক কাটা হয় এই মাটি নাকি তাতে ব্যবহৃত হয়। অনেকে তাই তপোবনে বেড়াতে এসে এই মাটি সঙ্গে করে বাড়ি ফেরেন। জঙ্গলের আরও গভীরে আছে একটি হনুমান চৌকি। কিন্তু বুনো হাতির ভয়ে এই যাত্রায় সেটা আর দেখার দুঃসাহস  হল না।

তবে বিনয় ঘোষের কথাটাও মিথ্যে নয়। উনি বলেছেন, "কিন্তু এই তপোবন, এই খাল এবং চারিদিকের এই জঙ্গল, মধ্যে মধ্যে আদিবাসী উপজাতিপ্রধান গ্রাম, ঠিক মুনি ঋষিদের আশ্রমের পরিবেশ নয়। মনে হয় জনমুক্তি সংগ্রামের সৈনিকদের শিক্ষা শিবিরের আদর্শ পরিবেশ তপোবন। লোকমুখে শুনেছি এইরকম একটা শিক্ষাশিবির ছিল ১৯৬৯-৭০-৭১-৭২ এর দিকে।"(পশ্চিমবঙ্গের সংস্কৃতি:বিনয় ঘোষ, ২য় খণ্ড, ১২৭ পাতা)

চন্দ্ররেখা গড়ের মাইলখানেক দূরে অবস্থান করছে রামেশ্বর শিব মন্দির। এই মন্দির যাওয়ার পথেও রাস্তার দুই ধারে দেখা যায় অসংখ্য ছোট-বড় উইয়ের ঢিবি। রাজা চন্দ্রকেতু নাকি স্বপ্নে রামের নির্দেশ পেয়ে এই মন্দিরটি নির্মাণ করেছিলেন। দারুণ এক পরিবেশে গড়ে উঠেছে এই মন্দিরটি। উড়িষ্যার রেখদেউলের মতো এই মন্দিরটি। জগমোহন ও নাট মন্দিরও আছে। মন্দিরের পিছনের দিকে ৬০টি সিঁড়ি নেমে গেছে নিচের একটি জলাশয়ের মুখে। আর সামনে একটি পার্ক নির্মাণ করা হয়েছে। মন্দির থেকে ওই দূরে তাকালেই দেখা যায় ছক কাটা কাটা দিগন্ত জোড়া সবুজের ক্ষেত। সত্যিই দারুণ এক পরিবেশ। সেই সঙ্গে রাম-সীতার অদৃশ্য উপস্থিতি।  রামায়নের কাহিনী যেন দারুণ ভাবে উপস্থিত এলাকার গ্রামবাসীদের মনে।

তথ্যসূত্র: ১) পশ্চিমবঙ্গের সংস্কৃতি: ২য় খণ্ড, বিনয় ঘোষ
২) মেদিনীপুরের ইতিহাস: যোগেশচন্দ্র বসু
৩) ঝাড়গ্রাম ইতিহাস ও সংস্কৃতি: মধুপ দে

জ্বলদর্চি পেজে লাইক দিন👇

Post a Comment

2 Comments