জ্বলদর্চি

ভ্যালেন্টাইন্স এবং অতীতঘর /অলক জানা

ভ্যালেন্টাইন্স এবং অতীতঘর 

অলক জানা 

টানা শীতের ভেতর উষ্ণতার খানিকটা আঁচ ঢুকে পড়লে মনটা কেমন উদাস উদাস বালখিল্য হয়ে যায়। সরস্বতী আরাধনার রেশ এখনো বাতাসে কানাঘুষো। এরই মধ্যে ভ্যালেন্টাইন্স ডে-এর সাগ্রহ উপস্থিতি, মননের সমস্ত বাঁধন আর বুঝি আন্তরিক থাকছে না। মেরুপ্রদেশের বরফ স্বভাবে গলে যাচ্ছে দেদার। ফেব্রুয়ারী যেন প্রেম-প্রত্যয়-ভাষা শিল্প- সুষমার একচেটিয়া অধিকার নিয়ে বসে আছে। কবিতার পাললিক বয়ে যার দিন কাটে এই মহার্ঘ সময়ে কিছু লেখালেখি হবে না তা মোটেও ভালো দেখায় না। 

কি লিখি, কি লিখবো ভেবে শুরু করেছি এই নিবন্ধ, মনে পড়ছে না। তবে ক্রমার কথা আজ খুব খুব মনে পড়ছে। এ্যানার্জি ড্রিংকের মতো। শারীরিক মানসিক সমস্ত অস্থির অবসন্নতার অবসান ঘটে যায়। কাজে গতি আসে, অসুখ বিসুখও ধারে ঘেঁষতে সাহস দেখায় না। আসলে প্রিয় মুখ প্রতিক্রিয়াহীন বয়ে বেড়ানো সম্পর্ক দুরারোগ্য ব্যাধির চেয়ে কমকিছু নয়, যাকে ছোটোখাটো খুটখাট রোগগুলি ভয় পায়। আজ তাকে চোখে নিয়েই কেটে যাক একটা অখণ্ড দিন। 

আজ একবার সাগর এবং পাহাড় পাশাপাশি আসুক দুই চোখের সীমান্তে। প্রতিটি শিরা-উপশিরা সুখপাঠ্য হোক। মন পড়ে আছে মেদিনীপুর ! জুতো শাড়ি পারফিউম, অন্তর্বাসের সুচতুর দায়িত্ব প্রিয় স্পর্শের অধিকারবোধে তফাতে সরে যায়। ঠিক তখনি পায়ের পাতায় শুরু হয় ঠোঁটের ভাসান। কবিতাকে প্রত্যক্ষ করার তপস্যা কবির আজন্ম অধিকার। লালনের পড়শী, মনের মানুষ তর্পণের মতো। আজ ক্রমার সঙ্গে অখণ্ড বাক্যে একাকার কবি শ্রীকেশ। 

এনার্জি ড্রিংকের বিমূঢ় নেশা কেটে গেলে মনে পড়ে প্রতিটি প্রেমিকের একটি নিজস্ব ঘর আছে। ঘর মানেই "তিনি" ছুটিহীন পূর্ণবৃত্ত কক্ষপথ। যার কাছে ফিরে আসাই নিয়তি। চা, সকালের জলখাবার, রাতের রুটিসবজির অবৈতনিক আধার। সেই পাথরযুগ থেকেই কবিকে পালন করার বিরামহীন এক চুক্তিপত্র। 
"তিনি" বরাবরের অতীত, অতীত নিয়ে প্রতিদিনের ঘর, ক্রমা শুধু কবিতায় মানায়।

জ্বলদর্চি পেজে লাইক দিন👇


Post a Comment

1 Comments

  1. অসাধারণ লেখনী, অসাধারণ ভবনা।।খুব সুন্দর।।

    ReplyDelete