বনমহোৎসব /অমিতরূপ চক্রবর্তী

বনমহোৎসব অমিতরূপ চক্রবর্তী ভোরের দিকে ঘুম ভাঙল আমার। চোখ খুলে তাকাতেই টের পেলাম মস্তিষ্ককে পেঁচিয়ে ধরা নেশার চাপটা এখনো আছে। ঘরের আলো নেভানো হয়নি। ঠা ঠা করে আলোটা জ্বলছে। ক’টা বাজতে পারে আন্দাজ করার চেষ্টা করলাম। এখন কি রাত না কি ভোর-ভোর? সময় দেখার জন্য কোনো ঘড়ি কোথাও খুঁজে পেলাম না। রান্নাঘরের দিকে দরজার ওপরে একটা ছিল, এখন সেটা নেই। কেউ সরিয়ে নিয়েছে হয়তো। গলা অবধি চাদর টেনে শুয়েছিলাম। এখন টের পেলাম গায়ে, গলায় ঘাম এসেছে। ফেলে দিলাম চাদরটা। উঠে বসতে গিয়ে দেখলাম নেশাটা এখনো বেশ শক্তভাবে চেপে বসে আছে আমার ওপর। খাট থেকে মেঝেয় পা রেখে দাঁড়াতেই খানিকটা টলে গেলাম। তারপর খানিকটা সময় দাঁড়িয়ে থেকে রান্নাঘরে গিয়ে দেওয়াল হাতড়ে আলো জ্বাললাম। জল তেষ্টা পেয়েছে। সিংকের সামনে খুচরো কিছু বাসন। দেখে বুঝলাম রাতে কারও খাওয়া হয়নি। কোনো বাসনে নতুন এঁটোর দাগ নেই। কয়েকটা প্লেটে কিছু টোমাটো সস আর কাঁটাচামচ রাখা। এলোমেলো কয়েকটি গেলাস। একটা পলিথিনের ক্যারি, তার মধ্যে ভিজে নেতিয়ে থাকা খবরের কাগজ। কেমন একটা গন্ধ আসছে তা থেকে। এলোমেলো গেলাসের একটি সিংকে ধুয়ে জল খেলাম। জলটা মুখে টানতেই গা-টা ঘুলিয়ে উঠল।