ছোটোবেলা বিশেষ সংখ্যা ১১৬
সম্পাদকীয়,
ফুলেল মানে কি জানো? ফুলেল মানে পুষ্পময়। শীতের হাওয়ায় বাগানে বাগানে ফুলেরা দুলে দুলে উঠছে। গাঁদা, চন্দ্রমল্লিকা, ডালিয়ার রঙে চোখে ধাঁধা লেগে যাচ্ছে। আর যদি একবার গ্রাম বাংলায় যাও তবে তো চোখে সর্ষে ফুল দেখবেই দেখবে। তোমাদের ছোট্ট বন্ধুটি আবার সর্ষে ফুলের সঙ্গে ছবিও তুলে নিয়েছে। সেই ছবি ঋপণ আঙ্কেল প্রচ্ছদের জন্য পাঠিয়ে দিল। নতুন বছরের সঙ্গে সঙ্গে জাকিয়ে শীত পড়েছে। নতুন বছরের আগমণের ছবি পাঠিয়েছে শুভঙ্কর। আঁকার কথায় মনে পড়ে গেল ফাল্গুনী পিসি পোগোর আঁকা নিয়ে দারুণ মিষ্টি সুবাসের গল্প উপহার দিয়েছে। আর প্রিয়াঞ্জলি পিসির ছড়া পড়ে তো আমি আনন্দে নেচে উঠলাম। তবু মনে রেখো আজ আশাপূর্ণা দেবীর জন্মদিন তাঁকে শ্রদ্ধা জানিয়েছে শাশ্বতী দিদি, আর ১২ জানুয়ারী স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিন সে কথা মনে করিয়ে দিয়েছে দোলনচাঁপা পিসি। জন্মদিন মানেই কিন্তু আনন্দের দিন শুধু নয় কিছু অঙ্গীকারেরও দিন। তোমাদেরই মনীষীদের কাজকে এগিয়ে নিয়ে যাবার অঙ্গীকার নিতে হবে। তারই সঙ্গে জানিয়ে রাখি তৃষ্ণা আন্টির লেখা জয়াবতীর জয়যাত্রা শেষের পথে। এটি বই আকারে প্রকাশ পেলে আনন্দ আমাদেরই। পুরো উপন্যাসটি হাতের মুঠোয় চলে আসবে। এত সবের সঙ্গে অর্চিষ্মান আর কিরণের আঁকা দেখে নিও। আর আজকের ছোটোবেলার বাগানের সেরা ফুলটি কিন্তু মলয় জেঠুর পাঠপ্রতিক্রিয়াটি সেকথা তোমাদের হয়ে আমিই বললাম। মলয় জেঠু দেশবিদেশ ঘুরে বেড়ান কিন্তু আমাদের ছোটোবেলার নিয়মিত পাঠক। মলয় জেঠুকে ফুলের ব্যাজ পাঠালাম জ্বলদর্চির তরফে। ছোটোবন্ধুরা,তোমাদেরও পাঠালাম শীতের ফুলেল সুবাস। কি খুশি তো? - মৌসুমী ঘোষ।
ধারাবাহিক উপন্যাস
জয়াবতীর জয়যাত্রা
পর্ব ৪১
তৃষ্ণা বসাক
৪৫
সব্বো ঠিক সময়েই লেঠেল নিয়ে এসেছিল। তার আগেই ডাকাতদের গলায় ফাঁস পড়ে গেল।এই ফাঁস ডাকাতদের কাছ থেকে শিখে তাদেরই গলায় পরাল এই চারটে পুঁটে মেয়ে। এরপরে জয়াবতী তার পুঁটলি থেকে পাতার ঠোঙ্গায় মোড়া কী একটা রস গাছের ওপর থেকে ওদের মুখ লক্ষ্য করে ছেটাল। তার আগে অবিশ্যি সবাইকে নাকমুখ আঁচল দিয়ে ভাল করে ঢেকে নিতে বলতে ভুলল না। নিজেও তাই ঢাকল। গলায় ফাঁস লেগে ডাকাতরা ভয় যত পেয়েছিল, আশ্চর্য হয়েছিল তার ঢের বেশি। এ ফাঁস নিয়ে তাদের মন্ত্রগুপ্তি আছে। যার মানে হল নিজেদের বাইরের কাউকে এ জিনিস শেখানো যাবে না।তাহলে কে তাদের গোপন কায়দা শিখে নিয়ে তাদেরই গলায় এ ফাঁস পরাল? এদিক ওদিক তাকিয়ে তারা দেখল অনেক উঁচুতে গাছের ডালে এলোচুলে ডুরে শাড়ি পরা চারটে মেয়ে যেন। চোখে ঝিলিমিলি লেগে গেল। তারা নিজেদের চোখকে বিশ্বাস করতে পারল না। তারা কি ভুল দেখেছে? পরক্ষণেই তাদের মনে হল, নির্ঘাত মা দুগগা এসেছেন। এখন তো তাঁরই পুজো হচ্ছে চারদিকে। নিশ্চয় মণ্ডপে দাঁড়িয়ে থেকে থেকে কোমর ধরে গেছে, লোকের শোরগোলে কানে তালা লেগে গেছে, তাই একটু শান্তির জন্যে তিনি এই বনে এসেছেন।
ডাকাতরা যতই দুর্ধর্ষ হোক না কেন, তারা আবার খুব মা কালীর ভক্ত। ডাকাতি করতে যাবার আগে তারা সবাই মা কালীর পুজো করে। তাই চোখের সামনে জ্যান্ত দুর্গা দেখে তারা ‘জয় মা জয় মা’ বলে উঠল। হাতের কলকে রেখে পেন্নাম করতে যাবে, তার আগেই কীসের যেন রস তাদের নাকে এসে পড়ল। অমনি ঘুম এসে জড়িয়ে ধরল তাদের। অত লম্বা চওড়া চার চারটে জোয়ান ডাকাত কাটা কলাগাছের মতো পড়ে গেল মাটিতে।
এতক্ষণ ওরা দম বন্ধ করে দেখছিল কী হয় কী হয়। ওদের মাটিতে পড়ে যেতে দেখে পেরজাপতি ভয়ে ভয়ে জিজ্ঞেস করল ‘ও জয়াদিদি, একেবারে মরে যায় নি তো?’
জয়াবতীর বদলে পুণ্যি মুখ খুলল। ‘মরলে কী হবে? কত লোককে মেরেচে, এই তো আমাদের সই উমাশশীকে বাপ মায়ের কোল থেকে তুলে এনেচে, ওরা মরলেই ভাল। কিন্তু গঙ্গাজল তো ঘুমের ওষুধ দিয়েছে, ওরা এখন সন্ধে অব্দি পড়ে পড়ে ঘুমুবে। মরবে কেন? চল, বাকি দড়ি দিয়ে এদের হাত পা বেঁধে ফেলি। সাবধানের মার নেই’
জ্যাবতী সপ্রশংস চোখে পুণ্যির দিকে তাকাল। সেই ভীতু মেয়েটা আর নেই। শুধু সেনমশাইয়ের কাছে পড়তে গিয়েই নয়, এই পেরজাপতিকে শাসন করতে করতেও পুণ্যি বেশ তালেবর হয়ে উঠেছে। আর জয়াবতীর মুখের দিকে চেয়ে বসে থাকে না। মনের মধ্যে খুব আরাম হল তার। সে তো এইই চেয়েছিল। সবাই ভয়, লজ্জা ঘৃণা ফেলে একসঙ্গে কাজ করবে। খালি এটা করতে নেই, সেটা করতে নেই ঘোমটা টেনে না শুনে, উলটে জিজ্ঞেস করবে ‘কেন করতে নেই শুনি? যুক্তি দিয়ে বোঝান দিকি’ এই তো তার পুণ্যি তৈরি হয়ে উঠেছে। আহ্লাদে তার চোখে জল এল। তাই দেখে পুণ্যি বলল ‘অবাক করলি গঙ্গাজল! ডাকাত ধরে কোতায় হাসবি, তা না কাঁদছিস। চল চল ওদের হাত পা বেঁধে ফেলি’
‘সে বেশ কথা। কিন্তু নাকের আঁচল সরাসনি। তাহলে ওদের পাশেই ঘুমিয়ে পড়তে হবে’
ওরা সবাই যখন হাত পা বাঁধছিল, তখনি লেঠেলরা এসে হাজির হল। এসে তাদের কি হম্বিতম্বি। কেন এইটুকু মেয়েরা একা একা এইসব সাংঘাতিক ডাকাত ধরতে এসেছে? কেন তাদের বলে আসেনি?
পুণ্যি হেসে গড়িয়ে পড়ল শুনে ‘আমরা কি ডাকাত আছে জানতাম? ঘুরতে ঘুরতে দেখা হয়ে গেছে। তাছাড়া চারজন একা একা হয় কী করে?’
এমন সময় পেছন থেকে গম্ভীর গলায় কে যেন বললেন ‘তোদের বলবে কী করে রে হতভাগা? সবাই তো ভাঙ খেয়ে পুরোনো কাছারির ভাঙ্গা ঘরে ঘুমুচ্ছিলি। আমি গিয়ে ঠেলা না দিলে তোরা উঠতিস? এই পাঁচটা মেয়ে ছিল বলে এই গ্রাম আজ রক্ষে পেল। আজ রাতে নাচঘরে কীর্তনের আসর বসার কথা মায়ের হুকুমে। সারা গ্রাম সেখানে থাকবে। সে কথা জেনেই এরা ফন্দি এঁটেছিল। কান ধরে ক্ষমা চা আমার এই মায়েদের কাছে’
জমিদারমশাই খোদ এসেছেন দেখে আনন্দে বিস্ময়ে জয়াবতীর অব্দি বাক্যি হরে গেছে। তারপর জমিদারমশাই যখন বললেন ‘মা, কোন উপহারই তোমাদের জন্য যথেষ্ট নয়। এই গ্রাম, আমার পরিবার তোমার কাছে কৃতজ্ঞ। তুমি কী চাও বলো’
তখন এক মুহূর্ত জয়াবতী কোন কথা খুঁজে পেল না। তারপর আস্তে আস্তে বলল ‘ছিখেত্তর যাবার ব্যবস্থা করে দেবেন আপনি, যদি যাওয়া স্থির হয়, সে কথা তো আগেই বলেছি। আজকে ডাকাত ধরার জন্যে আপনি আমাকে একটা জিনিস দেবেন?’
‘কী বলো মা’
‘আমি চাই আপনি আপনার বাড়িতে একটা পাঠশালা খুলুন, সেখানে সব্বো পড়বে, আর গাঁয়ের বাকি মেয়েরা এমনকি কচি বউরা অব্দি পড়তে আসতে পারবে’
জমিদারমশাই অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকেন তার দিকে। গাছের ফাঁক দিয়ে সোনালি রোদ্দুর হেসে ওঠে জয়াবতীর কথা শুনে। ( ক্রমশ)
বর
ফাল্গুনী পান্ডা
আজ বার্ষিক পরীক্ষার শেষ দিন ছিল | আজ ছিল পরিবেশ বিজ্ঞান পরীক্ষা | পোগো বেশ ভালো পরীক্ষা দিয়েছে, তাই সে খুশি মনে বাড়ি ফিরছিলো | আজ কত দিন পরে সে টিভি দেখতে পাবে, তার সেই প্রিয় সিরিয়াল কন্ধকাটার হাল হদিস |
ভাবলেই বেশ শিহরণ জাগছে | বাড়ি ফিরতেই সে দেখে টিফিনে তার মামিমা তার ফেভারিট লুচি আর মটর পনীর বানিয়েছে |
কিন্তু দাদু খেতে পারলো না আজ | দাদুর শরীরটা ভালো নেই | পোগো জানে মামা - মামিমা দাদুর শরীর খারাপ এর জন্যই দাদুকে ভালো মন্দ খাবার খেতে দেয় না | তাই দাদু মাঝরাতে ফ্রিজ থেকে খাবার চুরি করে খায় | এইসব ভাবতে ভাবতে বেশ রাত হল | রাত প্রায় বারোটায় ভূতের সিরিয়াল শুরু হল |
পোগো ছাড়া বাড়ির সবাই ঘুমিয়ে পড়েছে |
হঠাৎ ই কোথাও কিছু নেই খুট খুট আওয়াজ হচ্ছে | টিভিটা ঝিরঝির করছে, কোনও ছবি আসছে না !
হঠাৎই টিভি থেকে ছোটখাটো নীল রঙের জন্তু বেরিয়ে এল | তার শরীর মানুষের মতো আর মাথাটা হাঁসজারুর মতো | সে খুব কাঁদছে |
পোগো ভীষণ অবাক কি করবে বুঝতে পারছে না ! পোগো জিজ্ঞাসা করে তাকে তুমি এত কাঁদছো কেন ?
কে তুমি ? সেই জন্তুটা বলে আমি ভূত আমার নাম গজা | তুমি আমায় গজাভূত বলেই ডাকবে |
আচ্ছা পোগো তোমরা মানুষেরা আজ কাল ভূতে ভয় পাওনা কেন ? আমি ভূত জানার পরেও দেখো তুমি ভয় পেলে না ! বলেই আবার হু হু করে কাঁদতে থাকলো গজা ভূত ! সে কাঁদতে কাঁদতে আবার বলল রোজ রোজ খালি পেটে এত অভিনয় করা যায় নাকি পোগো !
তুমি আমায় কিছু খেতে দাও দিকি |
পোগো বলে তুমি তো ভূত চাইলেই তুমি অদৃশ্য হয়ে খাবার খেতে পারো !
ভূতটা বলল আমার গুরু ব্রহ্মদত্যির কাছে এখনো ট্রেনিং টা শেষ হয়নি ! তাই অদৃশ্য হওয়ার ক্ষমতা আমার নেই !তাছাড়া আমায় অনেক রোল করতে হয় |
কন্ধকাটা হচ্ছে সিরিয়ালের ডিরেক্টর | তার হাজার রকম ফরমাস | তার ছেলেকে বিদেশে ড্রাকুলা ইনস্টিটিউটে দিতে নিতে যাওয়া সব আমায় করতে হয় | শাকচুন্নি হল কন্ধকাটার বৌ | সে আবার ভূতেদের হিরোইন | খুব ব্যস্ত মহিলা | ভূত 2,বাস্তুশাস্ত্র, কুহেলি, ইত্যাদি সিনেমাতে অভিনয় করেছে !
আমি তার কত কাজ করে দিই | যদি ডিরেক্টর মশাইকে বলে সিনেমাতে ভয় দেখানোর ছোটখাটো রোল পাইয়ে দেয় আর কি ! তাহলে খেতে পাই |
সিরিয়াল করে আবার গুরু দক্ষিনা দিতে গিয়ে নিজেরই খাওয়া জোটে না ! কচি কচি ছাগল, মুরগির ঘাড় মটকে তার রক্ত খেতে পাই মাসে দুএকবার ! ওটাই আমার মাইনে | এখন তো মানুষ সহজে ভূত কে ভয় পায়না ! তাই সিরিয়ালে আমার রোল গুলো খুব কঠিন হয়ে গিয়েছে |
এই দেখো এত কথায় ভুলেই গিয়েছি | আমায় কিছু খেতে দাও পোগো | পোগো ফ্রিজ থেকে কেক, বিস্কুট, এনে দিয়ে বলল রাতের খাবার সব শেষ এই দিয়ে তোমায় কাজ চালাতে হবে | পোগো র কথা শেষ হওয়ার আগেই ভূত টা খেয়ে ফেলেছে যা ছিল খাবার !
সে ঢেকুর তুলে বলে কি সুস্বাদু খাবার গো ! কত দিন আগে সেই মানুষ ছিলাম যখন সে সময়ে খেয়েছি !
পোগো দেখে ভূতটা এখনো কাঁদছে ! সে কিছু বলার আগেই ভূত টা বলে জানো আমি ওই বিপিন দের ভাঙা পোড়ো বাড়িতে থাকি | ওখানে কয়েকটা কঙ্কাল মিলে মেস বানিয়েছে ! কিন্তু শুনছি ওখানে ফ্ল্যাট উঠবে| আমরা কোথায় যাবো বলোতো ? পোগো বলে তুমি তো রাত জাগো সিরিয়াল করবে বলে, তাহলে দিনে তুমি আমাদের চিলেকোঠায় থাকতে পারো |
কিন্তু একটা শর্ত আছে তোমাদের ভূতেদের রাজার সাথে আমায় দেখা করিয়ে দিতে হবে | আমার কিছু বর দরকার |
গুপী গাইন, বাঘা বাইনকে তো রাজা মশাই খুব ভালো বর দিয়েছিল |
সেই দিনের প্রায় সপ্তাখানেক পরে গজা ভূত বলল আজ সে ভূতদের রাজার কাছে পোগোকে নিয়ে যেতে এসেছে |
যাবার সময় কচি মুরগি নিয়ে সন্ধ্যার মুখে তারা বেরিয়ে পড়ল | নীলমনিদের পোড়ো বাড়ি তে ঢুকতেই সেই চেনা কণ্ঠস্বর শোনা গেল" সোজা পথে চল, বাঁকা পথে চলিস না, চলিস না, চলিস না "সবুজ আলোয় ভূতের রাজার মুখ স্পষ্ট হয়ে উঠলো | পোগো রাজা মশাইকে নমস্কার জানিয়ে কচি মুরগি তুলে দিয়ে হাতে বলল, নমস্কার রাজা মশাই আমি পোগো আপনার কাছে বর চাইতে এসেছি !
পোগোর সাহসে রাজামশাই খুশি হয়ে বলল যা চাই চেয়ে নাও বর !
পোগো বলে আমার বাবা,মা চাকরি সূত্রে অনেক দূরে থাকে | আমি আমার বাবা মা এর সাথে থাকতে চাই আর কিছু চাই না | ভূতের রাজা বলে কাল ই তোমার বাবা মা তোমার কাছে ফিরবে আমি তোমার কাছে তাদের উড়িয়ে নিয়ে দিয়ে আসবো | সঙ্গে নাও এই রঙ তুলি এটা দিয়ে যা আঁকবে তাই জীবন্ত হয়ে উঠবে ! তোমার সাহসিকতায় খুশি হয়ে আমি এটা তোমায় দিলাম | পোগো এখন তার বাবা মা এর কাছে এসেছে | আজ সে রাজার দেওয়া রঙ তুলি দিয়ে আঁকতে শুরু করেছে | এত দিন পরে মা বাবার সাথে দেখা তাই বাবা মা কে কিছু দিতে হবে তো | আস্তে আস্তে রঙ তুলি র ছোঁয়াতে একটা ঢাকাই শাড়ি আর বাবার পাঞ্জাবি জীবন্ত হচ্ছে …
পরিজন
প্রিয়াঞ্জলি দেবনাথ
এই দেখো বিধুকাকু হেসে হেসে ডাকে আয়
জলযোগ করে যাস সন্ধ্যার ঘটিকায়।
পিছনেতে যেই যাব তার যত আক্রশ
বলে, ব্যাটা বিচ্ছিরি শয়তান রাক্ষস।
আমাদের চানু পিসি মধুমাখা মুখ যার
কাকিমাকে বলে শুনি ভাইপোটা নচ্ছার।
গরু গাধা খচ্চর নিন্দেটা তুলে রাখে
সামনে তে তবে কেন বাবা বাছা বলে ডাকে!
মামা জ্যাঠা মাসিমনি পরিজন তারা সব
ভালোবেসে কাছে এসো, ঘুচে যাবে সব রব।
অর্চিষ্মান গড়াই, চতুর্থ শ্রেণী, শীতলগ্রাম প্রাথমিক বিদ্যালয়, বীরভূম
শতবর্ষ পেরিয়েও ফিরে দেখা: আশাপূর্ণা দেবী
শাশ্বতী কর, প্রথম বর্ষ
"সানগ্লাস ঢাকা দুচোখে তোমার অন্ধকার..... "- সেই ঢেকে রাখা গণ্ডির আশপাশ দিয়ে ক্ষীণ যে সূর্যরশ্মির ছটা দৃষ্টিকোণ কে অন্য মাত্রা দেখায়, সময়কে ধাক্কা দিতে পারে আর সাধারণ জীবন যাপনকে এক আলোর দিশারী করে তুলতে পারেন পরবর্তী প্রজন্মের কাছে - তিনি আশা পূর্ণা দেবী ।
ঠাকুমার অনুশাসনে প্রথাগত শিক্ষা না হলেও দাদাদের পড়া শুনে শুনে মাত্র আড়াই বছরের মধ্যে পড়তে শিখেছিলেন তিনি। পরবর্তীকালে তিনি বলেছেন "...ইস্কুলে পড়লেই যে মেয়েরা ....বাচাল হয়ে উঠবে, এ তথ্য আর কেউ না জানুক আমাদের ঠাকুরমা ভালোভাবেই জানতেন.."। কিন্তু এহেন প্রতিকূল পরিবেশে সাহিত্য আর চিত্রের মেলবন্ধনে গঠিত হয়েছিল তাঁর মনন। মা সরলাসুন্দরী দেবী ছিলেন সাহিত্য প্রেমিক এবং বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের অধীনস্থ দুই লাইব্রেরীর সদস্য, তাই বাড়িতে প্রচুর বই আসতো। সেই সময়ের প্রায় সমস্ত পত্রপত্রিকা, গ্রন্থাবলীর নিয়মিত আনাগোনা ছিল।
বহু জায়গায় তিনি তাঁর মার অবদানের কথা বারবার বলেছেন -"মায়ের বই পড়া মানে সে প্রায় কুম্ভকর্ণের খিদের মতই"।আশাপূর্নার কাছে বই পড়া ছিল ভাত খাওয়ার মতোই গুরুত্বপূর্ণ। অপরদিকে বাবা ছিলেন একজন চিত্রকর।
তাই তাদের জীবন যাপন ছিল খুবই সাধারণ। জীবনস্মৃতির পাতা উল্টাতে গিয়ে বলেছেন,'... দুঃখ-দুর্দশা-অভাব অথবা ঐশ্বর্যের ঝলক। সেদিক দিয়ে বলার নেই ,স্রেফ মধ্যবিত্ত ব্যাপার।.... সেই হেতুই হয়তো অন্যান্য আত্মীয় জনের ছেলে মেয়েদের সঙ্গে আমাদের মানসিকতার কিছু তফাৎ ছিল"।
হয়তোএই মানসিকতার তফাতের মানুষগুলোর জন্যই কিছু কিছু মানুষ স্রোতের বিপরীতে হাঁটতে শেখে, উচিত- অনুচিতের প্রভেদ শেখে আর জীবনকে অন্যভাবে দেখতে শেখে।
তারপর এক ইতিহাস তৈরীর পালা যা থেকে আমরা পরবর্তীকালে নারী চরিত্রকে বিভিন্ন আঙ্গিকে দেখতে পাই ।মাত্র ১৩ বছর বয়সে শিশুসাথী পত্রিকায় প্রথম কবিতা 'বাইরের ডাক' ছাপা হয়। সম্পাদক ছিলেন রাজনারায়ণ চক্রবর্তী,-" আরো লেখা দিতে পারবে? গল্প লিখতে জানো ?"এই কথাগুলোই আশাপূর্ণার লেখিকা জীবনের আলো দেখায়। পরবর্তী সময়ে তিনি রাজনারায়ণ চক্রবর্তীর প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বীকার করেছেন।
তারপর থেকে তো পাঠক মহলে চমকের পথ চমক।'প্রথম প্রতিশ্রুতির' সেই বকুলের গল্পই হোক বা 'সুবর্ণলতার'
জীবনের গল্পই হোক তাঁর লেখায় বারবার উঠে এসেছে নারীদের গল্প। এক সাধারণ ঘরের মেয়ে -বউয়ের গল্প। নারী চরিত্রকে তিনি বারবার প্রধান ভূমিকায় দাঁড় করিয়ে পর্দার আড়াল থেকে নয় সেখান থেকে বেরিয়ে এসে আধুনিক চিন্তা দিয়ে যুদ্ধে জয়ী হওয়ার উদাহরণ হিসেবে দেখিয়েছেন।
আবার 'ছিন্নমস্তা' গল্পে জয়াবতীর মতো মায়ের সন্তান হারানোর আর্তনাদ আর শাশুড়ি - বউমার এক চাপা লড়াইকে কোথায় যেন একটা ট্রাজিকের সুরে বেঁধেছেন।
'এখন যারা ছোট্ট আছে /ডাইনে বাঁয়ে সামনে পাচ্ছে,..' এমন মজার কবিতা দিয়ে তিনি শৈশবকালকে তুলে ধরেছেন।
কখনো বা তিনি ১৯৪২ এর আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে 'ডাক' দিয়েছেন -"ওই দেখ কারা আসে দলে দলে,/দেশ জননীর পূজা বেদিতলে.."। অপরদিকে 'একি লাইন এলো দেশে দাদা 'তে নিত্যজীবনকে ছন্দে বেঁধে ব্যঙ্গার্থক ভঙ্গিতে দেখিয়েছেন।
এভাবেই ১০০ বছর পেরিয়েও আশাপূর্ণা দেবী সমীহ আদায় করে চলেছেন প্রবীন ও নবীনের কাছে।কারোর কাছে তিনি তপনের না পূরন হওয়া স্বপ্ন আবার কারোর কাছে সংসারের জন্য মুখবুজে সারাদিন খেটে যাওয়া এক সাধারণ মেয়ে যার কাছে মেয়েবেলা নেই, আনন্দ নেই। আজ তাঁর ১১৪ তম আবির্ভাব দিবস ।এমন মহীয়সী লেখিকার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি।তাঁর দেখানো পথ যেন আমাদের মতো মেয়েদের স্বাধীন হতে শেখায়, বাঁচতে শেখায় ,এক শৃঙ্খলাবদ্ধ জীবনের ইতিসুরে বাঁধতে শেখায় যারা স্রোতের বিপরীতে হাঁটতে চায় তাঁদের কাছে আলোর দিশারী হয়ে ওঠে।
স্মরণীয় দিবস
জাতীয় যুব দিবস
কলমে - দোলনচাঁপা তেওয়ারী দে
আজ ১২ই জানুয়ারী স্বামীজির ১৫৯ তম জন্মবার্ষিকী।
প্রতিবছর ১২ ই জানুয়ারি দিনটিকে ভারতে "জাতীয় যুব দিবস" হিসেবে পালন করা হয়। এই দিনে নরেন্দ্রনাথ দত্ত অর্থাৎ স্বামী বিবেকানন্দ জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৮৪ সালে ভারত সরকার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন যে, ১৯৮৫ সাল থেকে প্রতিবছর স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিনটিতে "জাতীয় যুব" দিবস হিসেবে পালন করা হবে।
স্বামী বিবেকানন্দ যুব শক্তির প্রতীক, বিশ্বাস করা হয় যে, এই দিনটিতে যুবকদের শাশ্বত সত্যি জাগিয়ে তোলার এবং তাদের অনুপ্রাণিত করার এক সুন্দর দিন, যে দিনে যুব ও জাতির সমৃদ্ধি ঘটবে পরিপূর্ণভাবে।
স্বামীজি আধুনিক মানুষের আদর্শ,বিশেষভাবে যুব সমাজের জন্য তিনি যে পথ দেখিয়েছেন আমাদের তার জন্য আমরা গর্বিত।
তিনি দেশের সমগ্র মানুষের বিশেষ করে শিশু ও যুবদের মনে আশা জাগিয়েছেন, কারণ তিনি বিশ্বাস করতেন যে, লৌহ পেশী এবং ইস্পাতের স্নায়ু যুবদের মধ্যে থাকে। একমাত্র যুবক- যুবতীরাই সমাজে সদর্থক পরিবর্তন নিয়ে আসতে পারে। তাঁর দেওয়া বাণী সমাজের যুবদের জন্য এক আলোর দিশারী। স্বামীজি তরুণ সম্প্রদায়ের কাছে অনুপ্রেরণার প্রতীক।
তিনি ধর্ম- দর্শন -শিল্প-সাহিত্য- ভূগোল- ইতিহাস ও সমাজ বিজ্ঞান সব বিষয়েই সমান পারদর্শী ছিলেন। এমনকি ভারতীয় শাস্ত্রীয় সংগীতে তাঁর পাণ্ডিত্য ছিল অগাধ। তাঁর মূল্যবান চিন্তা ভাবনা ও বাণী, তরুণ সম্প্রদায়কে অনুপ্রেরিত করে।
এই দিনটি স্বামী বিবেকানন্দের উপর বক্তৃতা, সেমিনার, নানা প্রতিযোগিতা, বিভিন্ন ক্রীড়া,ব্যায়াম ,যোগাসন ও সম্মেলনের মাধ্যমে পালিত হয়।
তিনি ধর্মীয় সহিষ্ণুতার প্রচার ও পাশ্চাত্য বস্তুগত অগ্রগতির সাথে ভারতীয় আধ্যাত্মিকতার সমন্বয়ের পরিচয় দিয়েছিলেন।
স্বামী বিবেকানন্দের জন্যই বিশ্বের মানুষ আধ্যাত্মিক ভারতকে চিনতে পেরেছিল।
জ্বলদর্চি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে যুক্ত হোন। 👇
পাঠ প্রতিক্রিয়া
( ছোটোবেলা ১১৫ নিয়ে ভ্রমণপিপাসু লেখক মলয় সরকার যা লিখে পাঠালেন)
এবারে ঠিক করেছি, কিছুতেই মৌসুমীকে নিয়ে কিছু বলব না।শুধু পত্রিকাকে নিয়ে বলব।
তবে হ্যাঁ, এটা বলতেই হবে, যার শুরুতেই থাকে শিশু আর ফুল বা গাছ, তা যেন অনুষ্ঠানের শুরুর উদবোধনী গানের মত হয়ে যায়।আর একটা কথা তো আমরা সবাই জানি, যে কোন জিনিসের শুরুটা যদি মনোগ্রাহী হয় তার পরে কি আছে সে দিকে সবার আকর্ষণ বা আগ্রহ বাড়বেই।তবে ছবিটিকে শুধু ছবি হিসাবে দেখা বোধ হয় ঠিক নয়।তার কিছু ভিতরের অর্থও খুঁজে পাওয়া যায়।
এখানে দুটিই শিশু, মানবশিশু এবং বৃক্ষশিশু।এদের কাছে এখন উন্মুক্ত প্রকৃতিতে স্বপ্ন আগামী দিনের।তা সুন্দর হয়ে উঠতে পারে কিসে? তা- ও মানব শিশুটি দেখিয়ে দিচ্ছে - প্রকৃত জলসিঞ্চনে বা প্রকৃত যত্নে।নতুন বছরও তেমনই এক শিশু বছর, যার জন্ম হয়েছে মাত্র কয়েকদিন আগে। তাকে সুন্দর করে তোলা যায় একই রকম ভাবে সকলের ইচ্ছা চেষ্টা ও যত্নে।তাই এই ছবিটি আমার মনে হয়েছে এক সুন্দর দ্যোতক।সমস্ত শিশুদের সঠিক স্নেহ ভালবাসা আদর ও যত্ন দিয়ে আগামী সুন্দর দিনের জন্য তৈরী করা বা নিজেরা তৈরী হওয়া আমাদের প্রত্যেকের কর্তব্য।
তৃষ্ণা বসাক পাকা লিখিয়ে।ওনার কথা বলে আর কি করব! জয়াবতীর ঘোড়া যেমন পক্ষীরাজের মত উড়ে চলেছে, গল্পের পক্ষীরাজও উড়ে চলেছে অতীত হারিয়ে যাওয়া দিনের ছবি আঁকতে আঁকতে নতুনদের চোখে আর এক জয়াবতী হওয়ার স্বপ্নের কাজল বুলিয়ে দিয়ে।
রঞ্জনা বসু এদেশের শীতের যে বাঙালী ঘরের প্রতীক মোয়া পিঠে পুলির সঙ্গে বিদেশের শীত বা বড়দিনের গল্পের এক সংযোগ ঘটিয়েছেন।আসলে শীত অনেক দেশের শিশুদের কাছেই আনন্দের, যদিও হয়ত সারা পৃথিবীর সব দেশেই তা নয়।
তবু আমাদের শিশুরা, অনেক দেশের শিশুদের মতই, শীত মানেই যে আনন্দের মজায় মেতে ওঠে, তাই শোনা গেল লেখায়।
সুব্রত দেবের লেখাতেও শীতের খুশীর কথাই ধরা পড়েছে ছন্দের মিলে।
রকি হালদার আবার বুঝতে পেরেছে, মা ছাড়া শিশুর জগত শূন্য।সেই স্মৃতিকেই আঁকড়ে ধরে বেঁচে থাকা, মায়ের কথা জীবনের প্রতি পদে মনে করা, মায়ের শিক্ষায় জীবনভর পথচলা, এই আমাদের সবার মনের কথা। সে বুঝেছে, প্রকৃতই মায়ের আশীর্বাদ ছাড়া গোটা জীবনই বৃথা।এটাই চরম উপলব্ধি।আসলে আমরা স্বীকার করি আর না-ই করি, মায়ের একটা ছাপ ( সেটা স্মৃতি হিসাবেই হোক, বা আচার ব্যবহার, স্বভাবেই হোক) আমরা সারা জীবনই নিজের জ্ঞাত বা অজ্ঞাতসারে বহন করে চলি সমস্ত জীবজগতের মতই।
রাইলি বিশ্ব পরিবার দিবস নিয়ে লিখেছে।আসলে পরিবার বলতে আমরা যাকে বুঝতাম, সেই পুরানো ধ্যান ধারণা তো এখন পুরো ভেঙ্গেচুরে শেষ। এখনও যেটুকু আছে কিছুদিন বাদে তাও থাকবে না।তখন যৌথ পরিবার শব্দ বন্ধের ঠাঁই হবে অভিধানের পাতায়ই মাত্র।এখন, আগামী প্রজন্ম পাবে না কোন কাকু কাকীমা, পিসি পিসেমশাই, ভাই বোন মামা মামী ইত্যাদি।একমাত্র ঠাকুমা দাদু দিদিমা দাদামশাই- তাও অনেকের থেকেও সে স্বাদ থেকে তারা বঞ্চিত বিভিন্ন কারণে।
এই স্বার্থপর অনুপরিবারের যুগে, বিশ্বপরিবার দিবস কি শুধু 'দিবস' হয়েই খাতা কলমে থেকে যাবে কি না সেটাই বড় ভাবায়।
আজ তৈরী হতে হচ্ছে নিজের গণ্ডী ছাড়িয়ে বিশ্ব মানবতা বোধের দিকে হাত বাড়াতে।কিন্তু নিজের পরিবারের ভিতর সেই পারিবারিক সম্পর্কের শিক্ষা যদি না নেওয়া যায়, আগামী দিনে এই মেকী বিশ্বপরিবার কি হবে, কতটা মানুষকে একাত্ম করবে সেটা নিয়ে বিজ্ঞানীরাও যথেষ্ট চিন্তিত।তাই এই সমস্ত দিবসের ভাবনা আসছে। যখন এসব ছিল না, তখন কিন্তু কোন 'দিবস' ছাড়াই আমরা "বসুধৈব কুটুম্বকম" জানতাম, মানতামও।
আজ সব ভেঙ্গেচুরে তাকে নতুন করে ভাবতে শিখলে কি হবে জানি না।সেটা দেখার জন্য তোলা থাক আগামী প্রজন্মের হাতে।জানি না তখন হয়ত আবার শান্তি খুঁজতে মানুষকে বনেই ফিরে যেতে হবে কি না–
যাই হোক, শিশুদের পত্রিকা শিশুদের আঁকায়, বিশেষ করে সৌমি, শ্রীপর্ণা, সমৃদ্ধাদের ছবিতে সমৃদ্ধ হয়ে উঠেছে এটা মানতেই হবে।
তবে এটা যে শুধু শিশুরাই পড়ে এমনটি যে নয়, তা তো নিজেকে দিয়েই বুঝছি।রবিবার এলেই পড়ার জন্য মনটা ছটফট করতে থাকে লুকিয়ে লুকিয়ে।
এর জন্য যে দুষ্টু মেয়েটি দায়ী তার কথা কিছুতেই বলব না বলে প্রতিজ্ঞা করে লিখতে নেমে ছিলাম।কিন্তু শেষ কালে এসে সেই প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করতেই হল।কি আর করি! এত ভাল ভাল জিনিস থালা ভর্তি করে মুখের সামনে ( পড়তে হবে চোখের সামনে) ধরলে, কার আর প্রতিজ্ঞা রক্ষা হয়!শেষে সেই অক্লান্ত পরিশ্রমী গুণী মেয়েটিকে বাহবা দিতেই হয়, প্রতি সপ্তাহে নিরলস ভাবে একাদিক্রমে এত জিনিস সাজিয়ে গুছিয়ে 'সাপ্লাই' দেওয়ার জন্য।
বলতেই হয়, এগিয়ে চলুক এই 'ছোটোবেলা' আমাদের মত বুড়োদের ছেলেবেলাটা ফিরে দেখতে সাহায্য করার ব্রত নিয়ে।
জ্বলদর্চি তিরিশ পেরিয়ে 👇
0 Comments