জ্বলদর্চি

ছোটোবেলা বিশেষ সংখ্যা ১৫৮

ছোটোবেলা বিশেষ সংখ্যা ১৫৮

সম্পাদকীয়,
তোমাদের বন্ধু অস্মিতার গল্পটা পড়ে আমি আবার পুজোর আনন্দে ফিরে গেলাম। পাঠ প্রতিক্রিয়াতে নীতা পিসিও লিখেছে অদ্রিজা আর রাজদীপের  ছড়া পড়ে সেই একই আনন্দ পেয়েছে। ছোটোরা বড়দের এইভাবেই আনন্দ ফিরিয়ে দিতে পারে সব সময়। এটাই ছোটো হওয়াও মজা। এবারে প্রচ্ছদে ছোট্টো বন্ধু টিনটিনকে মা বউ সেজেছে। তাই দেখে আমরাও খুব খুশি। মধুমিতা আন্টি সেই ছবি পাঠিয়ে আমাদের আনন্দ বাড়িয়ে দিয়েছে। লাচুঙের নেকড়ে তোমরা পড়তে পড়তে উৎসব সংখ্যা শুরু হয়ে গেল। তাই আবার শ্রীকান্ত আঙ্কেল মনে করিয়ে দিচ্ছে সেই গল্পের ভুলে যাওয়া জায়গাগুলো। ২২ শে ডিসেম্বর জাতীয় গণিত দিবস সেটা দোলনচাঁপা আন্টি মনে করিয়ে দিল। দিলীপ জেঠু একটা ভূতের গল্প শুনিয়েছেন। শীতের দিনে ভূতের গল্পের জুড়ি মেলা ভার। শতদ্রু জেঠু শরৎচন্দ্রের ইন্দ্রনাথকে নতুন করে এনেছেন গল্পে। সুতরাং আজ আমরা স্মৃতিকে সোনার জলে চুবিয়ে ঝকঝকে আনন্দে ছোটোবেলার পাতা বুনেছি। তাতে সাথ দিয়েছে তিন ছোটো শিল্পী বন্ধু সাহিল,মানালী, অঙ্কুশ।  বড়দিন চলে এল। শীতও ঝাঁকিয়ে পড়েছে। কেক খেজুর গুড় আর মোয়া খেতে খেতে পড়ে ফেল ছোটোবেলা।  ---মৌসুমী ঘোষ।
ধারাবাহিক উপন্যাস
লাচুঙের নেকড়ে
শ্রীকান্ত অধিকারী

পর্ব ৩০

চুংথাং থেকে দুদিকে দুটো রাস্তা দুমুখো হয়ে নর্থ সিকিমকে ছুঁয়ে ফেলেছে। উত্তর পশ্চিম দিকে চলে গেলে লাচেন হয়ে গুরুদংমার। আর উত্তরপূর্ব দিকে গেলে লাচুং ছুঁয়ে ইয়ুম্থাং হয়ে জিরো পয়েন্ট। বরফ ঢাকা পাহাড় ক’টা পেরোলেই ওপারে চিন। অর্থাৎ চিন-তীব্বতের বর্ডার। 
তারপর লাসা,লামা,আইস বীয়ার আর তিব্বতি নেকড়ে। কথাগুলো ব’লে ছোটমামা রামসির দিকে তাকায়। 
-মানে ফরবিডেন সিটি। তিব্বতের রাজধানী! রামসি সোৎসাহে বলে।  
- হ্যাঁ ১৯৫১ সালে তিব্বত চীনা কমিউনিস্টদের নিয়ন্ত্রণে আসে। 
- তখন থেকেই নিষিদ্ধ শহর তাইতো? 
-ব্যাপারটা তা নয়, রাজনৈতিক যে কারণই থাক না মূল কারণ কিন্তু এর উচ্চতা। প্রায় ১৬  হাজার ফুট!বছরে আট মাস বরফে ঢাকা থাকে। তবে হ্যাঁ প্রাকৃতিক বাধাকে অতিক্রম করে বিশ্বের নজরে পড়ে এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। 
-মানে বড় বড় গাছ, ঘন বন, পাহাড়ি নদী আর বরফ? 
-না রে এ সব জায়গা পড়া মুখস্থর মত বলে গেলে হয় না, উপলব্ধি করতে হয়। বহি দৃশ্যের গভীর ফিলিংসটা তোর ভিতরে যখন প্রবেশ করবে তখন আর তুই কথা বলতে পারবি না। শুধু দেখতেই থাকবি। 
-ছোট মামা আমাদের তো ওখানে যাওয়া যাবে না! শিঙির কথা শুনে সকলেই হেসে ওঠে। 
ছোট মামা বলে, এই কি কম কীসের! তোর চারপাশে যা রয়েছে প্রকৃতির নিস্তব্ধতায় বেড়ে ওঠা সরল গাছ গাছালি, নানা পাখি আর বুনো জন্তু জানোয়ার –তুই আগে চল তো লাচুং। 
-এখানে জন্তু জানোয়ার আসে নাকি? রাস্তায়? অনেকক্ষণ পর বড়মামির কথা শোনা গেল। ঘুম চটকে গেছে হয়তো।  
গাড়ির কাউকে কিছু বলতে না দিয়ে গ্যাটসো উত্তর দিল, -ইধার নেহি হ্যায় মাইজি। ও তো আপার হিল এরিয়ায় থাকে। তবে কাভি কাভি নিচে নেমে আসে দেখা হ্যায়। ইধার কোই দেখা নেহি। কই ডর নেহি। 
--আপার হিল এরিয়া মানে? 
এবার রামসির মা বিষয়টা রামসিকে জানায়।– এই হিমালয় এরিয়ায় তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। এপার মিডল আর লোয়ার পার্ট। এখানে ন’খানা রিজার্ভ ফরেস্ট আছে। মূলত আপার হিল এরিয়ায়। আর সেখানেই যত রাজ্যের বুনো জন্তু। না বৌদি নো চিন্তা নো ভয়। 
বড়মামির মুখটা প্রশস্ত হয়ে এলো। 
 -তবে কাছেই কাঞ্চনজঙ্ঘা ন্যাশানাল পার্ক। সেখান থেকে বেরিয়ে পড়তেই পারে 
হিমালয়ের কালো ভালুক কিংবা লেপার্ড। কি বল গ্যাটসো?-বড়মামার কথাতে গ্যাটসো কিন্তু হাসে না। বরঞ্চ সে উদাহরণ টানে, থ্রি মান্থ প্যাহেলে রেইনি সিজিনে এখানে লেপার্ড নেমেছিল। 
-আর নেকড়ে? শিঙি ভয়ে ভয়ে বলে। এখনো ও বড়মামির কোল ঘেঁষে বসে আছে।  
-নারে শিঙি নেকড়েরা এমনিতে খুব বাধ্য হয়। নিজের মা বাবার কথা শোনে। বুড়ো বয়সে মা বাবার সেবাও করে। শিঙির মা বলে,-নেকড়েকে আরবিতে কী বলে জানিস?–ইবনে আল বার । মানে ভালো ছেলে।এদের বিশেষ গুণ হলো এরা বছরের পর বছর অনেক দূর দূর যেতে পারে। তাই ওরা একা একা কোথা যেতে পারে কেউ বলতে পারে না। এই তো দু হাজার আঠারো সাল নাগাদ একটা নেকড়ে পরীক্ষা করার জন্য গলায় রেডিও ট্রান্সমিটার লাগিয়ে ছেড়ে দিয়ে ছিল। সেই কলারের মাধ্যমে জানা গেল প্রায় নয় হাজার মাইল ঘুরে বেড়িয়েছে পাহাড়ে আর বুনো ঘাঁসের জঙ্গলে শুধুমাত্র খাবারের খোঁজে।গড়ে এরা এক দিনে বারো থেকে পনেরো কিমি হেঁটে যেতে পারে। কাজেই কেউ বলতে পারে না যে নেকড়ে আসবে না।
 -না না সিকিমে সেভাবে নেকড়ে থাকার কোন রেকর্ড নেই।বড়মামা বেশ জোর দিয়ে বলে।যেগুলো আসে সে গুলো সব বুনো কুকুর কিংবা ভাম খটাসের মত কিছু ছোট ছোট বন্য প্রাণী। যদিও বা থাকে তবে লোকালয় থেকে অনেক দূরে। তাছাড়া আমি যতদূর জানি ভারতে নেকড়ের অবস্থা খুব সঙ্কটজনক। হিসাব বলছে ভারতে এখন মোট নেকড়ে আছে প্রায় তিন হাজার থেকে সাড়ে তিন হাজারের মত।
-বড়মামা বাঘ হাতি পাখিদের স্যাংচুয়ারি আছে নেকড়েদের নেই? রামসি বলে।  
-মহুয়াদোনার উলফ স্যাঞ্চুয়ারি। ঝাড়খণ্ডের লাতেহার জেলায়-বেতলা ন্যাশানাল পার্ক। ভারতবর্ষের একমাত্র নেকড়েদের অভয়ারণ্য। 
 -এক্কেবারে ঠিক বলেছেন দাদা।-রামসির মা বলে। দিনদিন মেরে ফেলার জন্য বা শিকার করার জন্য সেই বৃটিশ আমল থেকেই এই ইন্ডিয়ান নেকড়েদের জীবন সঙ্কটে। আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে তো দুশো বছর আগেই এদের শেষ করে দেওয়ার চেষ্টা হয়।   
-তাই ওরাও এখন ঘন অরণ্যে লুকিয়ে থাকে। লোকালয়ে আসতে চায় না।-বড়মামা বলে। 
এই তো বছর দুয়েক আগে বাঁকুড়ার পাত্রসায়েরে নেকড়ে ঢুকে পড়ে একটা ঘরে। এতক্ষণ রামসির বাবা এই নেকড়ের গল্পে যোগ দেয় নি।-তবে শোনা কথা। সঠিক জানি না। 
-আসতেই পারে।কাছেই তো পাত্রসায়ের জঙ্গল রয়েছে।-রামসির মা বলে।তাছাড়া 
দুবরাজপুর কুন্ডহিতের জঙ্গলে নেকড়ে দেখা যাচ্ছে। তবে এগুলো সব ছাগল ভেড়ার খোঁজে গৃহস্থের গোয়ালঘরে ঢুকে পড়ে। 
  -তা না হলে এত মানুষ এখানে বেড়াতে আসে। রামসির বাবা অভয় জোগায়। 
-তবে ওরা ঘন জঙ্গলে থাকলেও বেশির ভাগ যে গোচারণ ভূমি বা অনুর্বর মানে যেখানে কোনো চাষ হয় না, বড় বড় ঘাঁস গজিয়েছে সেখান থেকেও বেরিয়ে আসে। রামসির মা বলে।  
-গ্যাটসো আশপাশ মে কোই অ্যাইসা গোচারণ ভূমি হ্যায়? ছোটমামাকে দেখা গেল বেশ সিরিয়াস ভাবে প্রশ্নটা করতে । 
-কেন যে তুই এমন দাঁতভাঙা হিন্দি বলিস? বলেছিলাম হিন্দিটা ভালো করে শিখে নে। তখন শুনলি না।– ছোট মামার কোনো উ ত্ত রের অপেক্ষা না করেই বড়মামা বলে,--আবার!
 কিছু বুঝতে বা বুঝতেই গাড়ি থামিয়ে গ্যাটশো খুব দ্রুত কিছু কাগজপত্র নিয়ে সামনে দাঁড়িয়ে থাকা পুলিস ভ্যানের কাছে গিয়ে কিছু বলে, মাথা নাড়িয়ে বুঝিয়ে আবার গাড়িতে উঠে ভোঁ করে গাড়ি ছেড়ে দেয়। পিছনে পড়ে থাকে ঘন বনে হারিয়ে যাওয়া আঁকাবাঁকা পথ, আর পুলিশের ভ্যান। 
পাশ দিয়ে উঠে যাওয়া খাড়াই জমাট গ্রানাইট পাথরের অনুচ্চ পাহাড়। আর লাচুং থেকে বয়ে আসা লাচুং চু। একদিকে লাচুং চু আর লাচেন থেকে বেরিয়ে আসা লাচেন চু দুটো নদী মিশে হয়েছে তিস্তা। এটা সেই চুংথাঙেই মিশে গেছে। 
বড়মামা নামতে যাচ্ছিল, হয়তো কিছু বলত কিন্তু গ্যাটসো দ্রুত কাজ সেরে চলে আসার জন্য আর নামতে হল না। শুধু গজগজ করলো,--চেকিঙেরও একটা প্রসেস থাকা উচিৎ।
পেছনের গাড়িটা সমানে একসঙ্গে আসছে। 
  চলতে চলতে লাচুঙের দোরগোঁড়াই যখন পৌঁছোলো তখন সুর্য অনেকটা হেলে গেছে। মাঝে অবশ্য ভাত আর ওদের তৈরি মিক্সড ডাল আচার খেয়ে নিয়েছিলো। শিঙি ওর মামির কোলে ঘুমিয়েছে। এখন ছোট ছোট টিলার মত উঁচু উঁচু পাথুরে জায়গায় ছোট ছোট পাথুরে ঘর বা কাঠের পাটা দিয়ে বানানো চারচালা দেখা যাচ্ছে। রাস্তার পাশে ঘরগুলো থেকে দু এক জন করে লোক দেখা গেলেও কেউ যেন কিছুই দেখে নি এমন ভাব দেখিয়ে আবার নিজের কাজে মন দেয়। রামসি আর শিঙি হাঁ করে তাকিয়ে থাকে। 
গাড়ির গতি কি বেড়েছে! গ্যাটসোকে দেখা গেল একটু রিল্যাক্সড মুডে আছে। মুখে কিছু একটা চিবোচ্ছে। কাছ থেকে খুব জোরে জল পড়ার শব্দ কানে আসে,-একটানা। ওরা সবাই ছটফট করে ওঠে। সার দিয়ে লম্বা লম্বা গাছগুলো কখনো রাস্তাটাকে আড়াল করে দিচ্ছে। এমনি এক রাস্তায় বাঁক নিতেই ওদের গাড়িটা হঠ করে থেমে যায়। বড় মামা আর গ্যাটসো চুপ। গ্যাটসো ফিস ফিস করে-ইন্ডিয়ান ঢোল! 
(ক্রমশ)
মানালী সরকার 
বেথুয়াডহরি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, বেথুয়াডহরি, নদিয়া, সপ্তম শ্রেণি


এ কালের ইন্দ্রনাথ     

শতদ্রু মজুমদার  

আন্দুল রাজবাড়ির বাম  দিকে খুব ছোট্ট একটা মাঠ  !এই মাঠের গায়ে একটা বাড়ি ! খুবই অগোছালো এই বাড়িটা !সবাই বলতো বাবু বাড়ি ! কিন্তু কে বাবু, কেউ জানে না! সম্ভবত রাজবাড়ির চাকর-বাকরদের বাসভূমি !  ওই বাড়ির এক তোলার একটা ঘরে আমরা ভাড়া থাকতাম! তখন আন্দুলে সবে ইলেকট্রিকের তার ঢুকছে ! তো বাবুদের বাড়িতে ইলেকট্রিক লাইট ছিল ! ভাড়াটেদের জন্য হেরিকেন ! ঢাউস  চোং ওয়ালা কলের গান বাজ- তো বাবুদের ঘরে : মেরা জুতা হায় জাপানি---- বাড়িওয়ালার ছোট  ছেলে র নাম বোতন  !আমার থেকে একটু বড় !কিন্তু বন্ধুর মত মিশতাম! খুব মারকুটে ! কত যে মার খেয়েছি ওর হাতে !তখন   ভাড়াটেদের ছোটলোক বলা হতো ! ভদ্রসমাজে তারা ব্রাত্য ! আমার কোন বন্ধু ছিল না তাই ! বোতন সামাজিকতার বাইরে ! আমাকে  সে বন্ধু করে নিয়েছিল !ওদের বাড়ির সামনে ছিল একটা আশফল গাছ !খুবই ফলন্ত ! একদিন বোতনের কাঁধে দাঁড়িয়ে আমি গাছে  উঠলাম।মনের সুখে  আঁশফল পারছি ! দুই পকেট ভর্তি !হঠাৎ  দেখি  বোতন নেই ! অনেক কষ্টে গাছ থেকে নামতে হল !মনে মনে প্রতিজ্ঞা করলাম, বোতনের সঙ্গে আর মিশব না ! কিন্তু নিজের প্রতিজ্ঞা নিজেই ভঙ্গ করলাম !বাড়িতে ঢুকতে বিশাল একটা দেউড়ি !সেখানে বেশ বড় একটা ঘর ছিল তখন ! ওখানে অগ্রদূত ক্লাবের রিহার্সাল হতো ! পুজোর সময় নাটক হবে !সিদ্ধেশ্বরী তলা এবং   বারোয়ারি মাঠে !পরিচালক ছিলেন রুপেন মিত্র !লুঙ্গির উপর ফিন ফিনে আদ্দির পাঞ্জাবি ! আন্দুলে থাকাকালীন  এই পোশাকেই তাকে আমি দেখেছি !শুনেছি অসাধারণ তার নাট্য পরিচালনা !বোতন বলেছে !সে যাই হোক ! আমার দেখা প্রথম নাটক সম্ভবত অগ্রদূত ক্লাবের বোবা কান্না ! বোতনই নিয়ে যায় !১৯৭৬ সাল নাগাদ অগ্রদূত ক্লাব ওখান থেকে উঠে গেল !তারপর কি ওদের নাটক আর হয়েছে  ? জানিনা  ! আমার জানার কথাও নয় ! তখন আন্দুলের পাঠ চুকিয়ে আমি চলে এসেছি চন্দননগরে। যা বলছিলাম, ক্লাস ফোরে আমাদের পাঠ্য ছিল শ্রীনাথ বহুরূপী ! শরৎচন্দ্রের শ্রীকান্ত উপন্যাসের প্রথম পাঠের একটা অংশ !  ইন্দ্রনাথ চরিত্রটা খুব ভালো লেগে গিয়েছিল আমার !শ্রীকান্ত প্রথম পর্ব পড়েছিলাম! তখন মনে হয়েছিল বোতন  ইন্দ্রনাথের মত !ইন্দ্রনাথ গভীররাতে   শ্রীকান্তকে বাড়ি থেকে বের করে  নৌকায়  পাড়ি দিয়েছিল ! একদিন ভর দুপুরে বোতন আমাকে  সাইকেলে করে নিয়ে গিয়েছিল অনেক দূরে ! তাও সেটা লেডিস সাইকেল ! পিছনে বসার কোন জায়গা ছিল না ! তাহলে কোথায় বসবো আমি ?সাইকেলের  হ্যান্ডেলে বসলাম ! বোতনের  দুটো কাঁধে হাত রেখে !এই ভাবেই বোতন আমাকে নিয়ে সাই সাই ছুটে ছিল! ওর মুখভঙ্গি দেখে আমি একবার হেসেছিলাম !ওমনি ঠাস করে একটা চড় : চোখ বুজে থাকবি !তাই ছিলাম ! হঠাৎ বলল, এবার চোখ খোল !চোখ খুলে দেখি এটা মাকড়দহ। ওকে কোনদিন বই পড়তে শুনিনি !ক্লাসে ফেলও করেনি কোনদিন ! তাহলে কি বোতন খুব মেধাবী ছাত্র ছিল ?তা তো কেউ কোনদিন বলেনি! বলার কথা নয় !কারণ বোতনের  মত ছেলেরা কারোর কথার ধার ধারে না ! তারা নিজ গুনেই শ্রেষ্ঠ ! নিজের অগুনে নিকৃষ্ট ! 
আমার লেখা ছোটদের গল্পে এই চরিত্রটা অনেকবার ঘুরে ফিরে এসেছে ! 
পুবপাড়ায় উকি বামনী ছেলেদের কাছে ত্রাস সঞ্চার করেছিল !তাকে আতুরি ডাইনির মত দেখতে ! তুক তাক জানত !ছোট টালির ঘরে বাস ! ঘরের সামনে কুলগাছ ! ফলে ভর্তি !কিন্তু কেউ গাছে ওঠে না !গাছের গোড়ায় তুক !লাল জবা -সিঁদুর -বেলপাতা -মাটির ঘট !কেউ গাছে হাত দিলেই রক্তবমি !তারপর কুপকাত !এক দিন দুপুরে বোতন লাথি মেরে সব ফেলে দিয়ে গাছে উঠে দেদার কুল পেরে নেমে এল !ওর কিছু হয় নি !
আন্দুলের বেশিরভাগ ছেলেরাই "খাচ্ছি দাচ্ছি ঘুমোচ্ছি চকচকে ব্লেডে দাড়ি কামাচ্ছি "গোছের! এদের থেকে স্বতন্ত্র ছিল বোতন ! সে আমার জীবনে এক স্বতন্ত্র জোয়ার !

সাহিল সেখ 
সেন্ট জেভিয়ার্স ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল, বেথুয়াডহরি, নদিয়া, প্রথম শ্রেণি

ছোটগল্প
কুণ্ডলার ভূতকাণ্ড
দিলীপকুমার মিস্ত্রী


পর্ব ১
 রাজস্থানের বাঁসওয়াড়া জেলা। রাজ‍্য বিদ্যুৎ পর্ষদের তত্ত্বাবধানে এখানে গড়ে উঠছে দু’টি হাইডেল প্রোজেক্ট- মাহী হাইডেল প্রোজেক্ট ওয়ান এবং টু। ইউনিট ওয়ানে প্রতিদিন পঁচিশ মেগাওয়াট  বিদ্যুৎ উৎপন্ন হবে। 
    এক শীতের বিকেল। ডিসেম্বরের মাঝামাঝি। গুজরাঠী ঠিকাদার সংস্থার অফিসে,চেয়ারে শরীর এলিয়ে আলস‍্য  মাপছেন সুদর্শনসাহেব। কিন্তু তাঁর চোখ হাতঘড়িতে। বিকেল তিনটে আট। সাহেব  সুদর্শন রায়  সাইট অফিসের ক্লার্ক-কাম-স্টোরকিপার। বছর দেড়েক হল  এখানে এসেছেন। ব‍্যাচেলর মানুষ। অফিস লাগোয়া অস্থায়ী স্টাফ কোয়ার্টারে থাকেন। পরভু তাঁর একমাত্র অ্যাসিসটেন্ট।
              পরভু কাছাকাছি গ্রাম কুণ্ডলার ছেলে। বয়স সবে ঊনিশ পেরুলো। লেখাপড়া বলতে, নিজের নামটুকু অতিকষ্টে হিন্দিতে গোট গোট করে লিখতে পারে- প র ভু। ওর পুরো নাম,প্রভু গৌতম পারমার কুণ্ডলা। প্রথমে নিজের নাম,তারপর বাবার নাম,পদবী, সবশেষে গাঁয়ের নাম। এখানে জনজাতিদের মধ্যে এভাবেই নিজের পরিচয় দেওয়ার রীতি রয়েছে। প্রভুকে স্থানীয়রা পরভু বলে ডাকে। সুদর্শন সাহেবও তাই। পরভুর গ্রাম কুণ্ডলা এখান থেকে চার কিলোমিটার দূরে,মাহী নদীর ধারে। গ্রামের সকলেই অনগ্রসর বাগড়ি সম্প্রদায়ভূক্ত।
            পরভু সাহেবকে উদ্দেশ্য করে বলল, ‘সাব,চায় বানাউ ?’
           সাহেব একটা লম্বা হাই তুলে বলল,’বানাউ তব।‘
          পরভু খুশি হয়ে হিটারে চা  বসাতে বসাতে বলল,’সাব,আপ থোড়ি দিন মে লোকল লোগোকো সাথ অচ্ছি তরফ সে মিলগই। হিন্দি কী সাথ-সাথ,লোকল  বাগড়িভী থোড়া-বহত বোল দেতে। লেকিন বিশওয়াসসাব আভিভী গড়বড় কর রহে। উনহনে হিন্দিভী কভী ঢঙসে  বোলতে নেহি।‘
          পরভুর কথা শুনে সাহেব মুচকি  হেসে বললেন,’বিশাওয়াসসাব কা ক‍্যায়া কসুর ?  বিশওয়াসসাব কো তুমলোগনে ঢঙসে কাঁহে নহি শিখাতে ? তুমহারা ইঁহা কোই হিন্দি,কোই বংলা,কোই পঞ্জাবী,কোই তামিল,কোই গুজরাতি,কোই কন্নড়,কোই ভোজপুরী,কোই ওড়িয়া;ফির কোই লোকল বাগড়ি মে বোলতে রহে। বিশওয়াসসাব নয়া আদমি,বেচারি কা করে ?’
       সাহেবের কথা শুনে পরভু  বলল,’সাব,আপনে সহি কঁহা। বাঁসবাড়ামে কোই ঢংসে হিন্দি  বোলতে নহি। কারণ,ইঁহা পর ইতনি পরদেশী আয়া,সব মিলকর খিচড়ি বনগই।  লেকিন আপনে বহতই জলদি হিন্দি শিখলিয়া। অর হমারা বাগড়িভী থোড়াবহত বোল দেতে।‘
         পরভু বলতে বলতে চা এনে সাহেবের টেবিলে রাখল। তারপর কাচুমাচু মুখ করে সাহেবের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে রইল। সাহেব তার দিকে একবার চাইতেই,সে আমতা আমতা করে বলল।
          ‘সাব,আজ মেরেকো থোড়ি জলদি ঘর যানা। সাম কো পহলে যানাই পড়েগা। হমারা গাঁও মে আজকল বহত ভূত আনা-যানা চল্ রহে। মাহী নদ্দী কি উসপার সে উহ ভূত আ রহে। এক-দো নহি,একসাত বিশ-পচ্চিশ আঁতে।‘
           পরভুর কথা শুনে সাহেব উচ্চস্বরে হাসতে লাগলেন। হাসতে হাসতে তাঁর হাতের কাপ থেকে চা ছিটকে পড়ল টেবিলের ওপর। সাহেব দ্রুত টেবিলে কাপ-প্লেট নামিয়ে,হাসি থামিয়ে পরভুকে বললেন,’পরভু,জলদি তুমহারা টেবল পুছনে কা উহ কাপড়া লাও না ইয়ার! ফির তুম ঘর যা সকতে। লেকিন সাওধান, ভূত বহতই খতরনক চিজ হোতে হ‍্যাঁয়। ভূত কা কোই ভরোসা নহি,বিসওয়াস করনা ভী ঠিক নহি।‘ 
             এ’কথা বলেই সাহেব আবার উচ্চস্বরে হাসতে লাগলেন। পরভু কাপড়টা এনে,টেবিল মুছতে মুছতে অবাক চোখে সাহেবের মুখে তাকিয়ে রইল। তারপর,গামছাটা গলা থেকে টেনে  হাতে নিয়ে,নমস্কার ভঙ্গিতে  বলল,’সাব,ত ম‍্যাঁয় যাঁউ?’
                সাহেব হাসি থামিয়ে, একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে  বললেন,’ যা ইয়ার। লেকিন মনমে কোই ডর ন রখনা। হিম্মত সে যানা। আরে ইয়ার,ভূত-জীন কুছ নেহি হ‍্যাঁয়। সব ঝুট, ফালটু, বগোয়াস। 
( ক্রমশ)

অঙ্কুশ কর্মকার 
ফিলোমেল পাবলিক স্কুল, বেথুয়াডহরি, নদিয়া, তৃতীয় শ্রেণি

ইচ্ছেশক্তির জয়
অস্মিতা ঘোষ
চতুর্থ শ্রেণি
সেন্ট জেভিয়ার্স ইন্সটিটিউশান
পাণিহাটি, কলকাতা

একটা ছোট গ্রামে আবির নামে একটা ছেলে থাকত।  সেই গ্রামের লোকেরা খুব গরীব ছিল। তাদের দুর্গাপুজো করবার সামর্থ ছিল না। আবির শুধু শুনেছিল যে কলকাতা শহরে বিশাল বড় বড় প্যান্ডেল আর লাখ লাখ টাকার পুজো হয়। তারর৷ স্কুলের মাস্টামশাই শহরে থাকতেন। তিনি তাদের এই গল্প করেছিলেন। সেই শুনে আবিরের খুব ইচ্ছে হয়েছে, সে গ্রামে দুর্গা পুজো করবে। কিন্তু সে এত টাকা পাবে কোথায়?  তাদের মাসে একশ টাকা রোজগার করতেই কত কষ্ট  করতে হয়। কিন্তু ত্তার মা তাকে বলেছিলেন যে কারোর কাছ থেকে কোনদিন কোনো সাহায্য চাইতে না। আবির খুব চিন্তিত হয়ে পড়ল। সে অনেককে বলল, গ্রামে দুর্গাপুজো করলে কেমন হয়৷ কিন্তু কেউ তার কথা পাত্তা দিল না। 

একদিন আবির ঘুরতে ঘুরতে নদীর ধারে চলে এল। হঠাৎ নদীর পাড়ের মাটি গুলো দেখে মনে হল যে সে তো ভাল মাটির কাজ জানে। তাহলে তো নিজেই সে মাটির প্রতিমা তৈরি করে বুড়ো বটতলায় দুর্গাপুজো করতে পারে। তাহলে তো কারুর কিছু বলার থাকবে না।

সে তখন প্রতিদিন স্কুল থেকে নদীর পাড়ে এসে মাটি দিয়ে প্রতিমা গড়তে লাগল একটু একটু করে। তারপর বটগাছের পিছনে লুকিয়ে রাখত। বাচ্চারা যাতে ভেঙে না ফেলে। কিন্তু পুরো ঠাকুরটা হয়ে গেলেও দুর্গার মুখটা কিছুতেই হচ্ছিল না। আবিরের খুব মন খারাপ, রাতে ঘুম নেই। সে ভাবছিল তাহলে কি পুজো আর হবে না? 

একদিন নদীর পাড়ে এসে আবির তো হতবাক। পাগলা জগাই আপন মনে মায়ের মুখ কি সুন্দর করে গড়েছে। আবির তো আনন্দে আত্মহারা। 
সেই সময় পুরোহিত দাদু নদীতে স্নান করতে আসছিলেন। মূর্তিটা দেখে পুরোহিত দাদু গম্ভীর গলায় বললেন, মূর্তিটা কে বানিয়েছে? আবির মাথা নিচু করে বলল, আমি আর জগাই কাকা। পুরোহিত দাদু বললেন, আজকে এর একটা হেস্তনেস্ত করেই ছাড়ব। সেই শুনে আবির খুব ভয় পেয়ে গেল। কিছুক্ষণ পর ঘোষণা হল, আজ মোড়লমশাই গ্রামে সভা ডেকেছে। তাতে যেন আবিরের মা- বাবা হাজির থাকে।

ঘোষণা শুনে আবিরের মা-বাবা খুব ভয় পেয়ে গেল। বিকেলে সবার সামনে মোড়ল মশাই বললেন, এই গ্রামে আবিরের জন্য দুর্গাপুজো হবে। সবাই যেন সেখানে হাজির থাকে। যে যেরকম ভাবে পারবেন সেই পুজোয় কাজকর্ম করে মায়ের আশীর্বাদ নেবেন। হলোও তাই।

পুজো খুব ভালভাবে মিটে যাবার পর মা আবিরকে বলল, ইচ্ছেশক্তির জোরে সবই সম্ভব।

স্মরণীয় দিবস।
জাতীয় গণিত দিবস
 (২২শে ডিসেম্বর)
কলমে-দোলনচাঁপা তেওয়ারী দে

গণিত এমন একটি বিষয়, যার সাহায্যে সামাজিক ক্রিয়া-কলাপসহ অনেক কিছুই সহজ ও মসৃণ হয়ে যায়। এটা বললেও ভুল হবে না যে, প্রত্যেক মানুষের দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গে গণনার ওতো-প্রোত সম্পর্ক রয়েছে আর সমাজের প্রয়োজনে এই উপলব্ধি নিয়ে 'জাতীয় গণিত দিবস' পালন শুরু হয়েছে।
বাইশে ডিসেম্বর দিনটিকে আমাদের জাতীয় 'গণিত দিবস' হিসেবে পালন করা হয়।
প্রবাদপ্রতিম গণিতবিদ শ্রী রামানুজনের জন্মদিন ২২শে ডিসেম্বর। ১৮৮৭ সালে তামিলনাড়ুর ইরোডে এক তামিল ব্রাহ্মণ আয়েঙ্গার পরিবারে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর গণিতের উপর পাণ্ডিত্য ও বিশেষভাবে দক্ষতার কারণে তিনি Man who new infinity নামেও পরিচিত ছিলেন।গণিতের সর্বকালের সেরা পণ্ডিতদের মধ্যে তিনি একজন।
ভারত সরকার ২২ শে ডিসেম্বর কে জাতীয় গণিত দিবস হিসেবে ঘোষণা করেছেন। ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং ২০১২ সালের ২৬ শে ফেব্রুয়ারি মাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভারতের প্রতিভাবান গণিতজ্ঞ শ্রীনিবাস রামানুজনের জন্ম দিন ২২ শে ডিসেম্বর তারিখটিকে (যেদিন তার ১২৫ তম জন্মদিবস হয়) 'গণিত দিবস' হিসেবে ঘোষণা করেন এবং ২০১২ সাল টিকে গণিত বছর হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
প্রত্যেকটা দিবসের একটা আলাদা করে উদ্দেশ্য থাকে, সেই রকম গণিত দিবসের ও একটি উদ্দেশ্য আছে। সাধারণ মানুষের গণিতের প্রতি যে ভীতি, সেই ভীতি কে কাটিয়ে ওঠা এবং গণিতের প্রতি যাতে মানুষের গভীর আগ্রহ ও ভালোবাসা তৈরি হয় এবং অবশ্যই মহান গণিতবিদ রামানুজনের অবদানকে স্মরণ করার জন্য তাঁরই জন্ম দিবসে গণিত দিবসটি পালন করা হয়।
যাঁর জন্ম দিবসে দিনটি পালিত হয়, অবশ্যই তাঁর সম্পর্কে একটু জেনে নেওয়া উচিত।
শ্রীনিবাস রামানুজন মৌলিক গণিতের কোন আনুষ্ঠানিক শিক্ষা বা প্রশিক্ষণ ছাড়াই গণিতের বিশ্লেষণ, সংখ্যা তত্ত্ব, অসীম শ্রেণী এবং সিরিজ বিভাজনের মতো বিষয়ে গণিতে অসীম অবদান রেখে গিয়েছেন। তাঁর জীবদ্দশায় রামানুজন  অনেক জটিল গাণিতিক সমস্যার সমাধানও করে গেছেন। তিনি প্রায় ৩০০৯টি সমীকরণ ও অসমতা সমাধান করেছেন, এছাড়াও বিভিন্ন গাণিতিক ফলাফল তৈরি করেছেন। সব থেকে বড় ব্যাপার হলো ওই গাণিতিক ফলাফলের অর্ধেক রামানুজনের নিজস্ব এবং অনন্য। এতে রামানুজন ফান্ডামেন্টালস, রামানুজন থিটা ফাংশন এবং কৃত্রিম ফাংশনের মতো উচ্চক্রমের অপ্রচলিত ফলাফল রয়েছে।
১৯১৮ তিনি উপবৃত্তাকার ফাংশন ও সংখ্যা তত্ত্বের ওপর গবেষণার জন্য রয়েল সোসাইটির একজন ফেলো নির্বাচিত হন। ওই বছরেই ট্রিনিটি কলেজেও তিনি ফেলো নির্বাচিত হন প্রথম ভারতীয় হিসেবে।
২০১২ সালের পর থেকে প্রত্যেক বছরই ২২ শে ডিসেম্বর স্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটি সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অসংখ্য শিক্ষামূলক ইভেন্টের মাধ্যমে গণিত দিবস পালিত হয়।

পাঠ প্রতিক্রিয়া
( ছোটোবেলা  ১৫৫ পড়ে নীতা রায় যা লিখলেন) 
ছোটবেলা ১৫৫ সংখ্যার কথা লিখছি আমি। 
এই সংখ্যার প্রচ্ছদ অসাধারণ। ওই শান্ত পরিবেশ দেখে মনে হচ্ছে, খাটিয়ায় গিয়ে একটু বসি। কিছুক্ষণ বিশ্রাম করি।
বিশ্রাম নিতে নিতেই নাহয় ছোট্ট বন্ধুদের সঙ্গে একটু কথা সেরে নিই!

সুমন-তিতলির ছোটকাকুর পরিবেশ - বান্ধব বন্ধুদের গল্প নিশ্চয় সবার পড়া হয়ে গেছে! ওজোন স্তরের প্রয়োজনীয়তা বিষয়ে জানাও হয়ে গেছে! 
এবার আসি কবিতায়। 
সোনামণি অদ্রিজা, তোমার কবিতায় এই সংখ্যার দরজায় সোনার ছাপ পড়ে গেছে ।খুব সুন্দর কবিতা। 
রাজদীপ দত্ত লিখেছে 'উমা' কবিতা। বাৎসরিক মাতৃবন্দনার সুন্দর ছবি এঁকেছেন ছন্দের মাধ্যমে। 
দুটি কবিতার পরেই পাশ থেকে উঁকি দিচ্ছে একটি হিরোর ছবি। বাব্বা! কী তার দৃষ্টি! ছোটরা নিশ্চয় চিনে ফেলেছ সেই হিরোকে! 
এঁকেছে সেখ মুস্তাফিজুর রহমান। 
এবার আছে, জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় এর লেখা কবিতা, ' এক যে আছেন বিদ্যাসাগর'। কত সরল ভাষায় বিদ্যাসাগর মহাশয়ের গুণের বর্ণনা করেছে সে! 
আর, শেষ কবিতা, বিনোদ মণ্ডল এর লেখা, - জাপান জল্পনা। কবিতা ছোট, তবে জল্পনা কিন্তু অল্প না! 
কী মজার রসে টইটম্বুর কবিতা। 
রাজার পিসি! সে কিনা মাছ বিক্রি করে! রাজা তো মনের দুঃখে নিরামিষ খাওয়া ধরেছেন। আমরা কিন্তু রাজকনে গোরি তোকি - র মত পান হরিতকি খেতে খেতে এ্যামেরিকাতে যেতে পারি। উৎসবের মরশুমে। একা একা নয়! বাসবদত্তা কদম আন্টির সঙ্গে! 
অল সোলস ডে বিষয়ে জেনে নিয়েছ সবাই। আনন্দও পেয়েছ নিশ্চয় খুব। 
পরের সংখ্যায় আবার আসবে 'ছোটবেলা' ।আনন্দ নিয়ে। ঝুলি ভরে।

Post a Comment

0 Comments