জ্বলদর্চি

কবিতা গুচ্ছ /বর্ণালী ভুঁইয়া

কবিতা গুচ্ছ
বর্ণালী ভুঁইয়া


শূন্যতার গলিপথ


 চাঁদের নামে ক্ষয়িষ্ণুতার মন্ত্র জপ করতে করতে নিজেকে দগ্ধ করি রোজ
পুড়ে ছাই হতে হতে একদিন রেখে যাবো
রাতের ভেতর শূন্যতার গলিপথ।

আঙুল ভেঙে যাওয়ার অছিলায় দিনের আলোয় যে বীজ রোপন করা ছিল ব্যালকনির টবে
অন্ধকারে তাকে অনায়াসেই বসিয়ে দেওয়া যায় পূর্ব দিকের মাটিতে,

গাছেদের শেকড় ই বহন করে চলেছে বংশপরম্পরার হিসেব।


স্বপ্ন বুনছে রাত্রি

স্বপ্ন বুনছে রাত্রি
নিঃশ্বাসের শব্দে ভোর হয়
তুমি শিশিরের জলে পা ধুয়ে এসো
আমি বিশ্রাম করি তক্তপোশে।

একদিন জঙ্গলে ঘুরে বেড়ানোর অছিলায়
তুমি রেখে যাবে পাতার ভাঁজে
আশ্বিনের বিরহ কথা
আমি ক্লান্ত শরীরে লিখে দেবো ঝড়-বাদলের
উপসংহার।

ঠোঁটের কোণে তুমি যতই সন্ধ্যা প্রদীপ দেখাও
উঠোন পাশে পড়ে থাকা বালির আস্তরণে ধানের বীজ গজিয়ে উঠেছে
এবার মাঠে যাওয়ার পালা। 


আমার জন্য

আকাশের রঙ কালো
জড়ানো আবেগ
 অনায়াসেই উপহার দিতে পারো নরম চাদর,
আমার সোয়েটার বোনার ক্রুস হারিয়ে গেছে।

বাঘ -হরিণের যুদ্ধে কে জেতে?
 ঘন কুয়াশায় জঙ্গলে নাইবা গেলে
আমার জন্য একটা টাটকা করবি আনতেই পারো,
গাছেদের সখ্যতা জমানোর মাটি আমার কাছে নেই।

চোখের দূরত্ব হৈমন্তিক রাতে কতদূর আর যাবে
পোড়ো বাড়ির দেওয়ালে লুকিয়ে না থেকে আর একবার ফিরে এসো রাস্তা বরাবর, 

দিনের আলোয় আমি সূর্যের দিকে তাকাতে পারিনা।


নগন্য নারী


আজ রাতে জানি কোনো গল্প হবে না মুখোমুখি
একসঙ্গে ওয়েব সিরিজ দেখার ইচ্ছেও নেই তোমার
অথচ জানালার রেলিং ধরে বসে পড়বে চাঁদের তত্ত্বকথা লিখতে
যেখানে সাধারণ খাদের কিনারার
সঙ্গে  আলোর উৎস সহজেই চোখে পড়ে
অন্ধকারের ভয় নেই বললেই চলে।

তোমার ফেরার অপেক্ষায় থেকে  পোষা বিড়ালেরও  খিদে পায়
আহারের খোঁজে বেরিয়ে পড়ে ধান চালের গুদামে,সামনের পড়ে থাকা জঞ্জালের ভেতর
তারপর ঘুমিয়ে পড়ে খাটের এক কোণায়।

আমি কেবল অভিমানের বাষ্পে নিজেকে আবিষ্কার করি নগন্য নারী হিসেবে.....



Post a Comment

0 Comments