জ্বলদর্চি

কয়েকটি রম্য কবিতা - ২৬ / শুভশ্রী রায়

কয়েকটি রম্য কবিতা - ২৬ / শুভশ্রী রায়

বিল্লি যাবে আগ্রা

আমাদের সোনা বিল্লি ঠিক করেছে এবার যাবে আগ্রা,
সহযোগিতা না করলেও বন্ধুরা দিও না যেন বাগড়া,
আগ্রা গিয়ে পুষি মহানন্দে চড়বে ঘোড়ায় টানা গাড়ি,
হাততালি দেবে আর বলবে, চালাও আরো তাড়াতাড়ি
সেই সঙ্গে অবশ্যই সে ঘুরে ঘুরে দেখবে খ্যাত তাজমহল,
মুগ্ধ হয়ে যাবে, তাজকে যখন ধরে রাখবে যমুনারই জল,
সেই সঙ্গে আগ্রাই খানাও তো সে খাবে তারিয়ে তারিয়ে
আর আমি দরকারে তোয়ালেটা, সাবানটা দেব বাড়িয়ে!
তার চলনদার হয়ে আমিও একটু বেড়িয়ে আসব আগ্রা,
কেউ যেন হিংসা কোরো না গো, কেউ দিও না বাগড়া।


চনমনে গুন্ডা

আমরা অ্যান্ডি-স্যান্ডি, বেশ সুন্দরী দুই চনমনে গুন্ডা,
চিবিয়েই খেয়ে নিই, যতটুকু ঠিক আছে মায়ের মুন্ডা!
সাত সাতখানা ভালো চাদর কাটাকুটি করেছি ভীষণ রঙ্গে
ফলে গোল গোল জানলা এখন চাদরগুলোর অঙ্গে,
এ ছাড়া মায়ের একটা মাত্র সোয়েটার আছে গোটা,
বাকিগুলোয় ফুটো করেও এখনো ধরতে পারিনি ওটা;
বন্ধুরা বলো- সব গোটাগোটা দেখতে লাগে কী ভালো?
তাই জানলা বানাই যার ফলে ঢোকে যথেষ্ট  হাওয়া-আলো।

বিকটকুমারী

বিকট রাজকুমারীর পালঙ্কটা হাতির দাঁতের
তোষকের তলায় পরাজিত মানুষের হাড়গোড়,
তারপরেও কানে আসে আমিষ তিনি ছোঁন না!
শুনতে পাই রাজার মেয়ে নিরামিষাশী ঘোর।

রাজকুমারী প্রায় কিছুই খাওয়াদাওয়া করেন না
তবে প্রাতরাশে রোজ চাই একটি কিলো কাজু,
কোটি কোটি মথ মেরে তৈরি রেশমি পোষাক,
পায়ে হরিণ-চামড়া চটি, কতটুকু বা তাঁর সাজু?

চামচে

রান্নাঘর থেকে কতই না কম শব্দ করে ওই সামান্য চামচে,
তাই বলে শ্রম কম নয় তার, দেখো দিনশেষে কী রকম ঘামছে!
নুন হলুদ আর মশলা তুলে রান্নায় দিতে সেই আসে কাজে,
আরো কত দরকারে লাগে, কেন তাকে ভাবো আজেবাজে?
চা কফির পেয়ালায় টুংটাং দুধ-চিনি কিম্বা মিঠে বড়ি গোলে,
এ ছাড়া তুলে নেওয়ার সময় তো থাকেই ঝোলে ঝালে অম্বলে,
একটু বা অনেকটা স্বাদের আচার যদি মুখে পুরে দিতে চাও,
সেই তো কাজে আসে, খাটিয়ে চামচের জুড়ি কোথা পাও?
সাবাশ, সাবাশ চামচে, ইস্পাত বা রূপো যারই তৈরি হো'ক,
শতমুখে গুণ গাইবই তার, অবহেলা করুক গে যত লোক।


সোহম কৈশোর

আমরা বইপত্র ঘাঁটি, কত অঙ্ক করি পুরো মন দিয়ে
তারপরেও খেলার সময়টার দিকে থাকি তাকিয়ে,
হইহই করে দলবল নিয়ে বার হ'ব করতে আনন্দ-খেলা,
তার আগে কষ্ট হলেও পড়াতেই কেটে যাক বেলা।

গ্যারেজ হ'চ্ছে আমাদের খেলার জায়গা কেড়ে নিয়ে,
দুশ্চিন্তার কারণ, হাল্কা বিকেলগুলো ভরাব কী দিয়ে?
ওই দিকের ফাঁকা মাঠের অনেকটাও আজ বহুতল,
শেষে খেলার মাঠ থাকবে না, সোহমের দু' চোখ সজল।

Post a Comment

0 Comments