জ্বলদর্চি

যেতে যেতে পথে -১০২/রোশেনারা খান

আলিপুরে আধিকারিক অনন্যা মজুমদারের অফিসে।

যেতে যেতে পথে

রোশেনারা খান

পর্ব ১০২

২০২২ এর জানুয়ারি থেকে জ্বলদর্চি পত্রিকায় আমার আত্মকথা ‘যেতে যেতে পথে’ ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশিত হবে। ওই কাজটি নিয়ে অন্য এক ব্যস্ততায় আছি।  বেশকিছু পর্ব ঋত্বিককে পাঠিয়েছি। লেখাটাই আমার কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ডাকলে যেতেই হয় মানুষকে সচেতনতার বার্তা দিতে, বিশেষকরে স্কুল, কলেজ ইউনিভার্সিটির প্রোগ্রাম গুলিতে। এই মাসে আরও কয়েকটি অনুষ্ঠান রয়েছে। ১৬ ডিসেম্বর চন্দ্রিমাকে সঙ্গে নিয়ে কলকাতা গিয়েছিলাম  ডাক্তারের কাছে, বালিগঞ্জে ফরটিসের একটি ব্রাঞ্চ রয়েছে, এখানে কিছু ডাক্তার সপ্তাহে একদিন করে বসেন। এখানেই নাম লেখানো ছিল।বিকেল ৩ টেতে ডাক্তার বসেন। আমরা কলকাতা পৌঁছে প্রথমে আলিপুরে অনন্যার অফিসে গেলাম। ওরজন্য উলের একটা স্টোল বুনেছিলাম। হঠাৎ চলে আসাতে বোনা কমপ্লিট করতে পারিনি বলে দেওয়া হয়নি। আজকে দিলাম। চন্দ্রিমা বাড়িতে তৈরি নিমকি নিয়ে এসেছিল। এখানে অনন্যার ভীষণ কাজের চাপ, সামনে গঙ্গাসাগর মেলা। আমি যাওয়াতে ভীষণ খুশি। ছবি তোলা হল, খাওয়া হল। তারপর আমরাও বেরিয়ে পড়লাম। অনন্যাও বেরিয়ে পড়ল।

     ফরটিসে গিয়ে অনেকক্ষণ অপেক্ষা করতে হল। ৩ টেতে রোগী দেখার টাইম হলেও ডাক্তার অনেক দেরিতে  এলেন। আমার সমস্যার কথা শুনে ডঃ গরগ  একটামাত্র ট্যাবলেট দিলেন। ১ মাস পরে যাওয়ার আগে সিটিস্ক্যান করে নিয়ে  যেতে বললেন। বাড়ি ফিরতে ৮ টা বেজে গেছল।

     অনুষ্ঠানগুলো খুব ঝামেলায় ফেলেছে। আজ খানকা শরীফ থেকে পিরেদের  বাড়ির একটি ছেলে এসেছিল দেখা করতে। ওর নাম সম্ভবত মীযান, শিক্ষিত   ছেলে।কলকাতায় থাকে, কথাবার্তা ও আচরণ বেশ মার্জিত। পিরেদের বাড়ির ছেলে হলেও ধর্ম ওকে সম্পূর্ণ গিলে খেতে পারেনি। ওরা এই শহরে একটি সাহিত্য সভা করতে চায়। সে বিষয়েই আলোচনা করতে এসেছে। এছাড়া একটি লেখা দিতে হবে। ৪ ফাল্গুন যে উরুস হয়, সেই উপলক্ষে স্মারক পত্রিকা প্রকাশ করবে। ইয়াসিনদা ওকে আমার ফোন নাম্বার দিয়েছেন।

    আমি ভেবে ছিলাম ১৯ ডিসেম্বর শনিবার, আজ জানলাম রবিবার। রবিবার সকালে ২ টি প্রোগ্রাম আছে। আজ অলিগঞ্জ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রাক্তনিরা  এসেছিলেন ওদের  স্কুলের প্রাক্তনিদের রক্তদান শিবির উদ্বোধনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার জন্য আমাকে গেস্টকার্ড দিতে।ওরা অনুমতি নিয়েই কার্ডে নাম ছাপিয়েছে। এদিকে ওই সময়ই কবিতাপাঠ চক্র এর অনুষ্ঠান আছে শ্যামসঙ্ঘতে। ওদের বক্তব্য, ওরা আগে আমন্ত্রণ জানিয়েছে, ওদের অনুষ্ঠানে আগে যেতে হবে।বিকেলে কর্নেলগোলা  আদি সার্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটি আমন্ত্রণ জানিয়েছে সম্বর্ধনা জানাবে বলে। কিছু একটা উপায় বের করতেই হবে।
অলিগঞ্জ ঋষি রাজনারায়ন বসু বালিকা বিদ্যালয়ে রক্তদান শিবিরের উদ্বোধন।

     আজ (১৯ ডিসেম্বর) সারাটা দিন খুব ব্যস্ততার মধ্যে কাটল। প্রথমে অমিত পণ্ডিতের কবিতা পাঠের অনুষ্ঠানে গেলাম। দেরি করে আরম্ভ করার জন্য কবিতা পাঠ করেই আমাকে চলে আসতে হল। নিচে গাড়ি অপেক্ষা করছিল। স্কুলে পৌঁছে দেখলাম, উদ্বোধনী সঙ্গীত শুরু হয়েছে। এর পরেই আমার বক্তব্য ছিল। আমার পর প্রধান শিক্ষিকা বক্তব্য রাখলেন। এরই ফাকে  আমাকে ও সুদীপকে  লাঞ্চ করাতে নিয়ে গেল। এর পরেও কিছুক্ষণ থাকলাম। কারণ তিনটের সময় এই পথেই কর্নেলগোলা আসতে হবে। ৩ টের সময় বাড়ি ফিরে ড্রাইভারকে  অপেক্ষা করতে বলে একটু ফ্রেস হয়ে ওই গাড়িতেই কর্নেলগোলার আদি দুর্গোৎসব কমিটির অনুষ্ঠানে পৌঁছালাম। দেখলাম, শহরের বিশিষ্ট ডাক্তার ডঃ গোলোক মাঝি, ডঃ বি বি মণ্ডল, সমাজসেবী সত্যব্রত দলুই(রজনীকান্ত দলুইয়ের পুত্র) পৌরপিতা সৌমেন খান প্রমুখ উপস্থিত হয়েছেন।উনিই আমার হাতে মানপত্র তুলেদিলেন। স্বাধীনতা আন্দোলনে যুক্ত মেদিনীপুর জেলার মহিলাদের কথা আমার বক্ত্যব্যে তুলে ধরলাম।

    এই সবের মাঝখানের সময়টা সংসারের ও নিজের কাজে আরও ব্যস্ততায় কাটছে। অনেকিছু সমস্যার সঙ্গে লড়তে ও গড়তে হচ্ছে।  গত এক দশকে জীবনটা কতখানি বদলেছে তা ভাবারও অবকাশ আমার নেই।  বছর শেষ হয়ে এল।কিন্তু কাজ শেষ হয়নি। আবৃত্তি শিল্পী মৈথেলী ওর অনুষ্ঠানের কার্ড দিতে এসেছিল ওর  বরকে সঙ্গে নিয়ে। মনীষা নাগ কার্ড দিয়ে গেছে, ২৬ ডিসেম্বর মাড়োতলা নামে একটি গ্রামে নিয়ে যাবে। সেখানে এক ভদ্রলোক আদিবাসী ও বিকলাঙ্গ শিশুদের নিয়ে কাজ করেন।

      ২৫ ডিসেম্বর নিয়ে আমার কোনও অনুভূতি কাজ করেনা। আমার কাছে বড়দিন, ছোটদিন  বলে কিছু নেই, সবদিনই সমান। আজ বাবলি জানালো ওরা ফেব্রুয়ারি মাসে আসতে পারবেনা। শুনে মনটা খারাপ হয়ে গেল। এই মন খারাপ আমার চিরসঙ্গি হয়েই থাকবে।

    আজ মনীষার সঙ্গে মাড়োতলা গেছলাম। এই সমস্ত প্রান্তিক এলাকার অসহায় শিশুদের নিয়ে অমিত পাল নীরবে কাজ করে চলেছে। ভদ্রলোক জানালেন, উনি আমার ফ্রেন্ডলিস্টে আছেন। জেনে ভাল লাগল। এঁরা অনেকখানি  শ্রদ্ধার যোগ্য।  এদের অতিথি বরণের রীতিটি ভারি সুন্দর! ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা কাগজের রেকাবিতে ফুলের পাপড়ি নিয়ে দুপাশে তোরণের মত সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। শুরুতেই পিতলের ঘটে জল ও আমের পল্লব নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা দুটি মেয়ে জলে আমপাতা ডুবিয়ে পা ধুইয়ে দিয়ে প্রনাম  করল। তারপর শঙ্খ বেজে উঠল। আমরা এ গিয়ে চললাম।সারিবদ্ধ শিশুরা আমাদের ওপর ফুলের পাপড়ি ছুঁড়তে লাগল।  

     বাচ্চাদের জন্য যে সমস্ত উপহার নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, সেগুলি আমরা ওদের হাতে তুলে দিলাম। আমাদের  সম্বর্ধনা ও বক্তব্যের পর খাওয়া দাওয়া হল (অমিত বাবুর মত প্রচার বিমুখ মানুষের সামনে সম্বর্ধনা নিতে সত্যিই খুব লজ্জা  লাগছিল)। ওদের জন্য মাংস ভাতের ব্যবস্থা হয়েছিল। সবার খাওয়া হয়া গেলে আমরা বাড়ির পথে রওনা দিলাম।

     আমার আত্মকথা ‘যেতে যেতে পথে’ ২০২২ এর জানুয়ারি থেকে প্রতি  শুক্রবার জ্বলদর্চি পত্রিকায় অনলাইনে প্রকাশিত হবে। পাঠকরা কতটা গ্রহণ করবেন জানিনা। ২৭  ও ২৮ ডিসেম্বর প্রদ্যোত স্মৃতি সদনে দুদিন ধরে ফিল্ম ফেয়ার হয়ে গেল। অতিথি হিসেবে ২ দিনই উপস্থিত ছিলাম। এটাই ছিল আমার এই বছরের শেষ অনুষ্ঠান।

     আজ ২০২২ এর ১লা জানুয়ারি। এই বছরটা কেমন কাটবে কে জানে?  এদেশেও ওমিক্রন জাঁকিয়ে বসেছে। ব্রিটেনে তো রোজ লাখ লাখ মানুষ  আক্রান্ত হচ্ছে। এই জন্যই বাবলিরা এখন আসবে না। এই পরিস্থিতিতে আমার মন মোটেও ভাল নেই। ওমিক্রনে মৃত্যুর হার খুবই কম, কিন্তু এর সাইড এফেক্ট কি হবে জানি না। গবেষকরা নিশ্চিতভাবে কিছু বলতে পারছেন না। ১৫ জানুয়ারির পর আবার লকডাউন শুরু হবে শুনছি। আমার আবার বাইরে যাওয়া বন্ধ হয়ে যাবে। তার আগে আমাকে কলকাতা যেতে হবে ডাক্তারের কাছে।আজ বছরের প্রথম শুক্রবার, আজ থেকে জ্বলদর্চি পত্রিকার অনলাইনে আমার আত্মকথা ‘যেতে যেতে পথে’র পথ চলা শুরু হল। পাঠকদের প্রতিক্রিয়া  ভালই দেখছি।

    আজ তানি ব্যাঙ্গালুরু রওনা হবে, দুপুরে ওর পছন্দের কিছু রান্না করলাম। স্টেশনে ওকে ছাড়তে গেল ও দিদি আর মা। আমি ছোটমাসিকে দেখতে গেছলাম।বিছানার সঙ্গে মিশে গেছে একেবারে। অবস্থা খুবই খারাপ। কোন বোধ নেই। মা অনেক ভাল অবস্থায় ছিলেন। সেই অবস্থাতেই চলে গেছেন। এসব নাকি কর্মফল।

    তানি পৌঁছে গেছে। এদিকে আমার আত্মকথা অনেকের মনে কৌতূহল সৃষ্টি করেছে। সবে তো এক পা বাড়িয়েছি, এখন অনেক পথ চলা বাকি। কোথায় শেষ হবে নিজেও জানি না। আজ সোশ্যাল মিডিয়াতে ‘আজকাল’ এর এক স্টাফের সঙ্গে আলাপ হল।রাজীব ঘোষের মৃত্যুতে মানসিক দিক দিয়ে ভীষণভাবে ভেঙ্গে পড়েছেন। আমার বুস্টার ডোজ ভ্যাক্সিনের মেসেজ এসে গেছে, কিন্তু খোঁজ নিয়ে জানলাম ভ্যাকসিন এখনো আসেনি। দুপুরে  সৌনক ফোন করে বলল, ভ্যাকসিন এসে গেছে। এখুনি চলে আসুন, আজ ভিড় কম আছে। গিয়ে লাইনে দাঁড়ালাম।বেশি সময়  লাগল না।

    সন্ধ্যায় রাজশাহী থেকে খুড়তুতো ভাই নীল ভিডিও কল করেছিল। রাজশাহী ইউনিভার্সিটির অধ্যাপিকা হুসনেয়ারা আমার ফেসবুক ফ্রেন্ড, উনি অনেকদিন ধরে আমার বই খুঁজছিলেন, কিন্তু পাচ্ছিলেনা। নীলের কাছে আমার এককপি বই ছিল, ওটাই ওঁকে এদিয়ে দিতে বলেছিলাম। সেই ‘বাঙালি মুসলিম সমাজ ও নারী’ বইটি উনি আজ নিতে এসেছেন। তাই ভিডিও কল করেছে। হুসনেআরার সঙ্গেও কথা  হল।

       আজ সারাদিন এটা সেটা করে কাটালাম। মনে করতে চাইছি না, তবুও এই সময়ের কথাগুলো মনে পড়ে যাচ্ছে। এর মধ্যেই কিছু প্ল্যান করেছিলাম। যা ইচ্ছে ছিল সেই মতই সব কাজ  হয়েছে।  যাকে যা দেবার কথা ভেবেছিলাম, দেওয়া হয়েছে। কিছুটা শান্তি বোধ করছি। এই সময়টা যে আমার কাছে খুবই বেদনাদায়ক. ১৫ জানুয়ারি আমার সম্রাটের জন্মদিন ছিল। কত যত্ন করে পায়েস রান্না করেছিলাম, চন্দ্রিমা কেক এনে ছিল। আর আজ আমি শূন্য দেউলে প্রদীপ জ্বেলে বসে আছি। এটাই আমার জীবন।

     শরীরটা কয়েকদিন ধরেই খুব খারাপ, যে জন্য কোথাও যেতে পারিনি। শুনলাম আজ চিত্রশিল্পী ওয়াসিম কাপুর মারা গেছেন,  রবীন্দ্র সদনে একটি  অনুষ্ঠানে দুজনেই আমন্ত্রিত ছিলাম। দ্বিতীয়বার আর দেখা হয় নি। উনি আমাদের ‘আওয়াজ’ এর সভাপতি ছিলেন। গতকাল অধ্যাপিকা ও নৃত্যশিল্পী সুতনুকার ছেলে-বউমার বিয়ের রিসেপ্সন পার্টি ছিল, যেতে ইচ্ছে করছিল না, তবুও গেছলাম। নাহলে হয়ত ভাববে, ‘আমি নাতাশার বিয়েতে যেতে পারিনি বলে দিদি এলেন না’।   

     আগামিকাল আমার সম্রাটের চলে যাওয়ার দিন। ওনার জন্য কিছুই করতে পারিনি। ঘরটাও উদ্ধার করতে পারিনি। কী করে সম্ভব হবে জানিনা। এদিকে চোখের অবস্থা দিন দিন খারাপ হচ্ছে। সৌনককে বলেছি ডঃ ইন্দ্রনীলের নাম লেখাতে। কোনও ভাবেই সে পেরে উঠছে না। রোটারি ক্লাবেই দেখাতে হবে।

   কয়েকদিনের পর আজ আকাশ বেশ পরিস্কার। কিন্তু মনের মেঘ কাটছে না। আজ সকালে বাজার করে নিয়ে এসে রান্না করলাম। মনি এসেছিল, খেয়ে গেল। রানী সারাদিন কী যে করে, মাকে  একবার ফোন করতে সময় পায় না। মা  সারাদিন মেয়ের ফোনের অপেক্ষায় থাকে।যাইহোক আজ আবার রাতে গোপাল বাবুর (সাহা)নাতির অন্নপ্রাশন উপলক্ষ্যে গ্রিন প্যালেসে নিমন্ত্রণ আছে। দূরে হলেও যেতে হবে। কারণ উনি আমার অনেক কাজ করে দিয়েছেন। যে  কাজ আমার পক্ষে এত তাড়াতাড়ি সম্ভব হত না।

    আজ (৬ ফেব্রুয়ারি) ভারতে নক্ষত্রপতন ঘটেছে। আমাদের সুরের রানী লতাজি আজ তাঁর সুরের দুনিয়ে ছেড়ে অজানায় পাড়ি দিয়েছেন। সমগ্র দেশ আজ শোকে মুহ্যমান হয়ে পড়েছে। ওনার বয়স হয়েছিল ৯২ বছর।আজ এই খবরই  সারাদিন কানে বাজছে।                                          আবহাওয়াও খুবই খারাপ আজ, গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি পড়ছে।এই দিনগুলোতে   মনখারাপ লাগে। ইদানিং খুব বেশি লিখতে পারছি না। দুপুরে খেয়ে উঠেই মালদ্বীপ থেকে তনভিরের ফোন পেলাম। কেমন আছি? খোঁজ নিয়ে বলল, ‘দিদি আপনার সঙ্গে কয়েকটা কথা আছে। ‘কণ্ঠস্বর’ এর লেখাটা মার্চের মধ্যে পাঠালে ভাল হয়।  আর  একটা কথা, কর্নাটকে হিজাব নিয়ে যা হয়েছে সে বিষয়ে আপনার মতামত জানার জন্য ‘চ্যানেল 9’ থেকে ওরা আপনার সঙ্গে যোগাযোগ করবে, আমি আপনার ফোন নাম্বার দিয়েছি’। আরও বলল, আপনার লেখা খুব ভাল হচ্ছে, আমার মা শুক্রবার হলেই আমার থেকে লিঙ্ক চান। ‘যেতে যেতে পথে’ র প্রতিটি এপিসোড মা পড়েন’। স্বভাবতই আমার খুব ভাল লাগল।

    কবি অভিনন্দন ঘাটালের কবিতা উৎসবে আমি  যাব কিনা জানতে চাইছিল।বাসে আমি যেতে পারব না। এটাই আমার না যাওয়ার কারণ, জানিয়ে দিলাম।আজ ‘চ্যানেল 9’ থেকে দুজন এসে আমার বক্তব্য নিয়ে গেছে। বলে গেছে আগামিকাল বিকেল ৫ টাতে দেখাবে। কবে যেন আর্ট একাডেমী আমন্ত্রণ জানিয়ে গেছে। সব আমন্ত্রণ রক্ষা করা আর সম্ভব হচ্ছে না।

   আজ গেছলাম ‘আর্ট এন্ড ফুড’ এগজিবিসনে। ফিরে এসে একটু রেস্ট নিয়ে লিখতে বসে যায়। একজন সুপরিচিত স্নেহভাজন শিক্ষকের কাজকর্ম দেখে আমার মনে হয়েছে বিশেষ কিছু স্পর্শকাতর বিষয়ের বিরোধিতা করে সরকারের কৃপা দৃষ্টি পেতে চাইছে। যা আমার ভাল লাগেনি। তাই আমার ওপর খেপে গিয়ে নিজে না লিখে অন্যদের দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াতে আমাকে নানা কথা লিখে আক্রমণ করার চেষ্টা করছে।

     আজ আমার বকুলের জন্মদিন, প্রতি বছরের মত আজও ছানার   বানালাম ওর জন্য।এই উপলক্ষেই মাড়োতলা গেছলাম ওই সমস্ত দুঃস্থ, বিকলাঙ্গ শিশুদের সামান্য কিছু জিনিস দিয়ে এলাম। ওদের মুখের হাসি দেখে শান্তি পেলাম।
প্রাক্তনীদের রক্তদান শিবিরে বক্তব্য রা‌‌খছি

   ইন্দ্রনীলের কাছে নাম লেখাতে না পেরে বাধ্য হয়ে অপূর্ব সামন্তকে চোখ  লেখালাম। পাওয়ার বাড়িয়ে কিছু হবে না, ছানি পড়েছে, সার্জারি করাতে হবে। মানে সময়সাপেক্ষ ও ব্যায়সাপেক্ষ ব্যাপার। সেকেন্ড  ওপিনিওন নেওয়ার জন্য  রোটারি ক্লাবের  ‘আই হাসপাতাল’ এ  নাম লেখালাম। এখানেও ডঃ ইন্দ্রনীল দেব একই কথা বললেন।

    আজ ২১ ফেব্রুয়ারি, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। ১৯৫২ সালে আজকের দিনে মাতৃ ভাষার জন্য রফিক, বরক্‌ত, সালাম শহিদ হয়েছিলেন। জাতিসঙ্ঘ ১৯৯৭ সালের ১৭ নভেম্বর ২১ ফেব্রুয়ারি দিনটিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। আমি শহরের দুটি জায়গায় আজ আমন্ত্রিত। তরুণ কবিদের আড্ডায় আর গণতান্ত্রিক লেখক শিল্পী সঙ্ঘে।দুটি জায়গাতেই অল্প সময়ের জন্য গেছলাম। গণতান্ত্রিক লেখক শিল্পী সংঘের তরফ থেকে প্রভাতদাকে(প্রভাত মিশ্র)সম্বর্ধনা দেওয়া হয়। দুই জায়গাতেই ছোট্ট করে বক্তব্য রেখে কিছু পরেই বাড়ি ফিরে আসি।

                                ক্রমশ

Post a Comment

0 Comments