রাধার বিলাপ
কৃষ্ণ ডাকে বংশী হাতে যমুনার ওই তীরে;
অভিসারে যাবো আমি আসবো নাকো ফিরে,
তোরা ত্বরা করে চল,
সখি জলকে যাবি চল,
কানুর বাঁশি শুনে আমার মন বসেনা ঘরে!
অভিসারে যাবো আমি আসবো নাকো ফিরে!!
কলঙ্কিনী বলুক লোকে শ্যামকে আমার চাই;
শ্যামের প্রেমে পাগল আমি বিনোদিনী রাই;
ননী,দধি নিয়ে সখি যাবি কিনা বল,
কৃষ্ণ নামে ডাকে ওরে যমুনার-ই জল,
থাকতে পারবোনা আর গোপীজনের ভিড়ে!
অভিসারে যাবো আমি আসবো নাকো ফিরে!!
জলে কৃষ্ণ,স্থলে কৃষ্ণ, কৃষ্ণ চারিধার,
কৃষ্ণ ছাড়া রাধার কাছে সবই অন্ধকার ;
বাঁশি সুরে শুনি শুধু রাধা রাধা নাম,
কিযে যাদু আছে সখি প্রাণে মরিলাম ;
কলসি কাঁখে মিলবো দুজন প্রেম কুঞ্জ নীড়ে!
অভিসারে যাবো আমি আসবো নাকো ফিরে!!
ওরে কানু রাধার জানু
ওরে কানু রাধার জানু যাসনে মথুরায়,
কৃষ্ণ কৃষ্ণ করে কেঁদে রাধার পরাণ যায়,
তোর লাগিয়া রাধা আজ হলো কলঙ্কিনী,
বাঁশির সুরে ছুটে যায়, হয়ে পাগলিনী,
কানাই কানাই বলে রাই ছুটে যায় যমুনায়।
কানহু তুই ফিরে আয়--যাসনে মথুরায়।
কানহু তুই ফিরে আয় তোর রাধার পরাণ যায় ।।
কানু নাম জপে রাধা ছোটে বৃন্দাবনে,
ফিরবে কবে প্রাণনাথ বসে প্রহর গোণে,
রাধিকার মন গগনে তোর নামের জপমালা,
সেই নামেতে মেতে ওঠে যত ব্রজবালা;
তোর কারণে রাধার হলো ঘরে টেকা দায়।
কানহু তুই ফিরে আয়--যাসনা মথুরায়;
কানহু তুই ফিরে আয়,তোর রাধার পরাণ যায়।
🍂
আমি শূনো যাবো ওড়ে
শূন্য থেকে এলাম ওরে,
একদিন শূন্যে যাবো ওড়ে,
নিভে যাবে জীবন-দীপ
এইনা ভবের ঘরে ;
আমি শূন্যে যাবো ওড়ে।
একদিন শূন্যে যাবো ওড়ে।।
আমার বলে নেইকো কিছু,
ছুটে বেড়াই মায়ার পিছু,
মন পাখিটা যাবে ছেড়ে,
শুধু দেহ থাকবে পড়ে;
আমি শূন্যে যাবো ওড়ে।
একদিন শূন্যে যাবো ওড়ে।।
কবিগুরু তোমায় জানাই প্রণাম
বিশ্বকবি তোমায় জানাই প্রণাম,
সবার-ই হৃদয়ে তোমার-ই তো নাম,
রবির কিরণ হয়ে দূর বহুদূরে,
কবিগুরু নামটি আলোয় ওড়ে,
তোমায় পেয়ে আমরা ধন্য হলাম!
কবিগুরু তোমায় জানাই প্রণাম।।
দিয়েছ বহুমুখী ভাবনা ধারা,
যেন রাতের আকাশ ভরা নক্ষত্র,তারা,
তোমার-ই গানে বহে প্রাণের বাতাস,
ঝলকিয়া ওঠে কত ভাব উচ্ছ্বাস,
যায় নাকো ভোলা তোমার-ই অবদান!
কবিগুরু তোমায় জানাই প্রণাম।।
এই জগতের কত দুঃখ,ব্যথা,
অশ্রু দিয়ে গাঁথা কাব্যকথা,
কত গভীরের সব ভাব-অনুভূতি
যতোই বলি সেসব হয়না তো ইতি,
তোমার-ই সুরে নাচে ছোটো,বড়ো প্রাণ।
কবিগুরু তোমায় জানাই প্রণাম।
আমি যাবোনা তোর নায়ে(ভাটিয়ালি)
আমি যাবোনা তোর নায়ে পারঘাটার ওই গাঁয়ে,
লোকে বলবে কলঙ্কিনী লাগবে আমার গায়ে,
লোকের কথায় বড়ো জ্বালা ওরে নিঠুর কালা,
সইতে আমি পারি নাকো কানে লাগে তালা,
হাতটা আমার ছেড়ে দেনা ধরি দুটি পায়ে !
আমি যাবোনা তোর নায়ে পারঘাটার ওই গায়ে!!
গাঁয়ের লোকের কাজ থাকেনা মন্দ কথায় নাচে,
ভয়ে আমার বুকটা কাঁপে পরাণ নাহি বাঁচে,
গরিব লোকের মাইয়া আমি কপাল দোষে মরি,
পাছে লোকে কিছু বলে সেই কারণে ডরি,
কেউ যদিরে দেখে ফেলে কইয়ে দেবে মায়ে !
আমি যাবোনা তোর নায়ে পারঘাটার ওই গাঁয়ে!!
মা যে আমার ভীষণ রাগী রাখবে নাকো কিছু,
তুই আমারে ছাইড়া দেনা লাগিস না আর পিছু,
পাড়ার লোকে দেইখা বলে আসছে রে মুখ পুড়ি,
ছোটো করে ডাকে সবাই আইবুড়ো এক ছুড়ি,
দূরে যারে আসিস না আর আমার পোড়া ছায়ে!
আমি যাবোনা তোর নায়ে পারঘাটার ওই গাঁয়ে!!
,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,
ওয়াহিদা খাতুন ( Wahida Khatun) , একটি উচ্চমাধ্যমিক স্কুলে সাহিত্যের শিক্ষিকা ও সম দায়িত্বে একজন কবি, গীতিকার। মুর্শিদাবাদ, পশ্চিম বঙ্গ, ভারত। ২০২১ সালে অডিশনে পাস করে Zodiak Muzik কোম্পানীর স্টাফ গীতিকার গ্রুপের একজন হয়েছেন। প্রায় আড়াইশ প্রতিযোগীর মধ্যে পাস করা মাত্র পনেরো জনের মধ্যে উনিও একজন। কলিকাতার এক প্রকাশনী থেকে বেরুচ্ছে এক শত কুড়িটি বাংলা সনেটের সংকলন গ্রন্থ। " ভয় " এই পূর্ণ দৈর্ঘের সিনেমায় দুটি গান লিখেছেন। সিনেমা রিলিজড হয়েছে ২০২৩, এপ্রিলে। সিনেমা ও ইউটুবে রিলিজ হওয়া অনেক গান ইউটুবে পাবেন। অয়ন্তিকা চক্রবর্তী, বিদুষী হৈমন্তি শুক্লা, কুমার চঞ্চল, সুপ্রীতি বিশ্বাস হালদার, মৌ আচার্য, শৈবাল চৌধুরি,সৌমিন্দ্র কুমার,মিস প্রীতি প্রমুখ অনেকেই ওয়াহিদার গান গেয়েছেন ও গাইছেন। প্রথম প্রকাশিত বাংলা গান " কেনো কাঁদো মা গো আমার ", সুর আর-কে-পাল, Mother voice : অয়ন্তিকা চক্রবর্তী, ও প্রথম প্রকাশিত ইংরেজি গান " We are all brothers in the world ", Music ; Kumar Chanchal, Mother Voice : Mou Acharjee. দিয়েই সংগীতের মাঠে নেমেছিলেন। তারপর পরপর পথ চলেছে। সাহিত্যের বহু বিষয়ে কাজ করতে চান। ২০২৩, নভেম্বরে, কবিতা ও সঙ্গীত রচনার জন্য আসামে পেলেন আন্তর্জাতিক স্বর্ণ পদক, মাদার টেরেজা গোল্ড এওয়ার্ড ও ড. ভূপেন হাজারিকা স্মৃতি সম্মাননা স্মারক। বিভিন্ন পত্রপত্রিকা, সংকলন ও ওয়েবসাইটে উপস্থিত।
------------------------------------
1 Comments
লেখাগুলো সত্যিই অসাধারন। বর্তমান যুগে সাহিত্য চর্চার প্রচলন খুব কম। আর যারা বর্তমানে লেখেন তাঁদেরও কবিতা, ছড়া, গল্প, প্রবন্ধ, ধারাবাহিক এর প্রতি বিশেষ ঝোঁক। হয়ত আমিও তাদের দলে। কিন্তু আর হতাশ আর কিচ্ছু নেই , জলদর্চি পত্রিকাতেই আমরা "ওয়াহিদা খাতুন" নামক এমন একজন লেখিকাকে খুঁজে পেয়েছি যিনি ব্যতিক্রমি হয়ে গান রচনার দায়িত্ব নিজের হাতে তুলে নিয়েছেন। লেখিকাকে আমার তরফ থেকে শুভকামনা রইল। রাহুল পাত্র
ReplyDelete