গুচ্ছ কবিতা - ৫
রূপকুমার কর্মকার
নকল সুখ
হঠাৎ করেই ওয়াকওভার
জিততে থাকা আমার ম্যাচ
প্যাভিলিয়নে যাচ্ছিল প্রায়
ফসকে গেল হঠাৎ ক্যাচ
এখনো আমার ছোট্ট ঘর
কে দেবে দিক নির্দেশিকা?
জানি তোমার বিশাল বাড়ি
যাকে বলে অট্টালিকা
মোড়ের মাথায় রোজই ফেরো
বিকেল বেলায় পুষ্পরথ
চুম্বক চোখে অনন্তকাল
হোঁচট আমার যাত্রা পথ
সেই সময় আমিও ফিরি
তখন কম রোদের আঁচ
একঘেয়েমি নীরবতায়
মাঝখানে ওই গাড়ির কাঁচ
এখনো আমার ঠান্ডা চোখ
অমন কেন পা চালও?
হঠাৎ কোথাও দেখলে পরে
আড়ালে ঠিক চোখ বোলাও
এখনো আমি বাউন্ডুলে
এখন পক্ক কেশ দাড়ি
রংবাহারী তোমার সাজ
ম্যাচিং করা ওড়না, শাড়ি
আমার গরিব চোখের কোন
চোয়াল ভাঙ্গা কালচে মুখ
উথলে পড়া তোমার ছবি
লুকিয়ে দেখি ....নকল সুখ
তিন মিনিট
লাড্ডু খাও না খাও
ঠিক পস্তাবে শেষে
হয়তোবা দেখাশোনা
নয় ওই ভালবেসে
লাজুক মুখটি করে
সন্ধ্যা টু সকালে
মনে মনে খুব ভয়
দেখবে কে অকালে
অথবা মাঘের শেষে
ভোরের ওই চাদরে
যদি হতে হাত রাখে
কেউ আবেগে ও আদরে!
এইসব ভেবে ভেবে
সকলে পিড়িতে বসে
জ্বলজ্বলে তারা সব
হটাৎ মাটিতে খসে
কিছু দিন চলে সব
রং চং বাহারে
তারপর কেঁদে মরা
যাই কই আহারে
বোঝাতে পারে না কেউ
কি অসহ ব্যাথা পায়
মনে মনে ভাবে শুধু
কেমনে উৎরে যায়
কিচ্ছু করার নাই
এ যেন ইঁদুর কল
বেরোনো সহজ নয়
থাকুক যতই বল
এমনি চলছে তবু
পুরো এই দেশটা
অনেক ভাবলে পড়ে
বোঝা গেল কেসটা
কেসটা কিছুই নয়
এটা এক ফন্দি
উদোম জীবন থেকে
করে দেওয়া বন্দি
তবু সকলে স্বপ্ন দেখে
স্বপ্নেতে বাঁধে বুক
আহা
ব্যথার পাহাড়ে চাপা
তিন মিনিটের সুখ!
🍂
উত্তরণের এক রাত
আমার জানালা থেকে অতদূর দেখা যায়না
যতদূরে হুহু বাতাসে কংক্রিট জাঞ্জালের চলকানো মদিরা ও লালনীল আলোর ঝলকানি পেড়িয়ে বরফের নদীর মত জেগে থাকে তোমার দুই চোখ
দূর থেকে ভেসে আসা তোমার আর্তনাদ এর তর্জমা করে দেখি এক পড়ন্ত বিকেলের গল্প…..হটাৎ নিভে যাওয়া পিতা...খিদেতে ঝলসানো ফ্যাকাসে কিছু মানুষ...ছেড়ে যাওয়া প্রথম প্রেমিকের হাত
পাড় ভাঙার শব্দ সহ্য হবেনা বলে বেশিক্ষণ অপেক্ষা করিনা আর....
তারপর হাজার আলোকবর্ষ অন্ধকারময় এক রাত শেষে পৃথিবীতে আলো নেমে এলে
দিগন্তের শেষ রেখায় এসে নিজেই নিজের সমাধির কাছে দাঁড়াই
হা হুতাশ করা অক্ষর জাতকেরা কলম থেকে ঠিকরে বেড়িয়ে আসতে চাইলেও
লিখতে পারিনা কিছুই
ভয় হয় ......লিখলে যদি মৃত্যু নেমে আসে আমাদের ছাদে !
0 Comments