জ্বলদর্চি

রাজকুমার সরকারের পনেরোটি কবিতা

রাজকুমার সরকারের পনেরোটি কবিতা


মুখ


অজানা-অদেখা আমায় কুরে কুরে খায় 
তবুও শেষ নেই.....
দেখি, শুনি-
ভোরের কুয়াশা ঢাকা মেঘে কার যেন উজ্জ্বল মুখ।


স্বপ্ন

একটু একটু করে দিন পার হয়। 
রাত আসে।
একটু-একটু করে ভালবাসা আসে, 
ঘনিয়ে আসে গভীর রাত।
রাতের  পর রাত  যায়.....
ভোরের স্বপ্ন ফিস্ ফিস্ কথা বলে।



আনন্দ

ভোরের রেলস্টেশনে এক ভিখারিনী; চাদর গায়ে মোড়া।
শিশুক্রোড়ে-
দিশাহীন।
আমার তোমার দেওয়া ভালবাসা, 
ওব জীবনের,অনাবিল আনন্দ।



ভিন্নপথ

তোমরা যখন লাল পথ ধরে হাঁটো
আমি তখন সবুজপথে- 
যখন তোমরা হলুদ পথ ধর আমি তখন শ্বেতসমুদ্রে স্নানরত।


নীল

নীল আকাশ
         নীল শাড়ি
               নীল আঁচল
                       নীল ছবি
                     নীল সমুদ্রের জল

কেন জানি না মুখ ফুটে কেউ
নীল মানুষদের কথা বলে না।


মানুষ খুঁজি

            
প্রতিদিন মানুষ খুঁজি
যে মানুষ খিলখিল হাসবে, বলবে জ্যোৎস্নার কথা
দেখাবে আলো .....
আমার জ্যোৎস্নামানুষ ভালো লাগে। যে মানুষ ছল,কপট, উগ্র, অহংকারী হবে না। 
যে মানুষের মনটি হবে আকাশের মত পবিত্র। 
যে মানুষের মুখে শুনবো খুশির খবর। জ্যোৎস্নার কথা।জীবনগান। 
এগিয়ে চলার কথা 
আগামী সবুজের কথা .....



চরৈবেতি

প্রতিদিন মনের বন্ধ দরজা
খুলি।
মেখে নিই সোনা রোদ।
গাছগুলোকে জল দিই
গাছেদের সাথে দু'দণ্ড কথা বলি....
ঝাপসানো চোখে উঁকি মেরে দেখে নিই জীবন কত ছন্দময়।
আকাশের দিকে চাইতেই চোখে পড়ে পাখিদের
আনাগোনা।

নীল আকাশের কাছে শপথ নিই আরও এগিয়ে চলার.......


তুলসীতলা


সবুজ  পাতা ঝরে পড়ে
আমার হলুদ  ডায়রীর পাতায়।
সোনালী  রোদ আজ,
মাথার  উপর  চিক্ চিক্ করে
স্নান  করি বালির সমুদ্রে।
এসো--
নতজানু  হই তুলসীতলায় ......



সিদ্ধান্ত

বাবা বললেন,  পূর্বে যাব
মা বললেন- পশ্চিমে,
স্ত্রী বললো, উত্তরে যাব
ছেলে বললো- দক্ষিণে,
আমি তখন সিদ্ধান্ত  নিলাম কোথাও যাব না।ঘর থেকেই  চাঁদ দেখে নেবো।


রাস্তার রঙ

প্রতিদিন রাস্তাটি নিজের রঙ বদল করে। 
মানুষগুলো হয় গিরগিটি। 
এক একটা পাথর; স্তম্ভ। 
মুখ দেখা হয়। 
বোবা কান্না... 
দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে দাঁড়কাক। 
কা... কা... করে। 
কেউ কান দেয় না। 
রাস্তাটি রঙ বদল করে প্রতিদিন। 
সকালে এক রঙ। 
বিকেলে অন্য রঙ... 
প্রতিদিন চলে শুধু রঙের খেলা।


সোনালী মুখ 


কিছু চাওয়া কিছু পাওয়ার মাঝে একটি সোনালী মুখ কিছু উদাস মানুষ... 
অবিরত জ্যোৎস্না ধারা 
পথ চলা; পথেই ঘর। 
কাঠ ফাটা রোদে কুকুর-জীবন চাপ সৃষ্টি করে না নীলচাঁদ আজ শুধু সোনালী 
রোদ রোদ খেলা...

জীবন


শুকনো ফুলের মালা আমায় পরিয়ে দাও, তোমার ভালোবাসায় ফুল সজীব হয়ে উঠবে নতুন জীবন পাবে।

ধ্রুবতারা চোখে দু'লে উঠবে পৃথিবী কল্পনা।


অপেক্ষা


চারিদিকে জল মাঝে এই পুষ্পিত বাগান। 
কিছু শুকনো ঝরা ফুল, 
তবুও দাঁড়িয়ে - 
অপেক্ষা করি প্রিয় আগামীর।

যন্ত্রণা


অব্যক্ত যন্ত্রণা বুকের মধ্যে ভেঙে পড়ে। 
ভারাক্রান্ত বুক 
দ্বিধাভরা ভবিষ্যত
আমি আজ - 
বিজন পথের পথিক।



শ্বেতপলাশ


দুরন্ত যৌবন বিষাক্ত ছোবলে কাঁপে 
জীবনের প্রয়োজনে মূর্তভূমি খোঁজে 
অজস্র মৌমাছি পরাগের লোভে 
সাগরের ঢেউ ভেঙ্গে যেতে যেতে কোথাও 
চোরাবালি টেনে ধরে শ্রমণের উন্মুক্ত বিবেক 
আমি মুক্তির দিশা খুঁজি শ্বেতপলাশের মত – 
ঊর্ধে তাকিয়ে মাপি আকাশের সীমা।

সংগ্রহ করতে পারেন 👇


Post a Comment

0 Comments