জ্বলদর্চি

ছোটোবেলা বিশেষ সংখ্যা ১৬৭ /সম্পাদক - মৌসুমী ঘোষ

ছোটোবেলা বিশেষ সংখ্যা ১৬৭
সম্পাদক - মৌসুমী ঘোষ 
চিত্রগ্রাহক - ঋপণ আর্য
সম্পদকীয়,
সরস্বতী পুজো মানে যতনা পুজোর জন্য ব্যস্ততা তার চেয়ে বেশি ব্যস্ততা বাড়ির ছোটোদের শাড়ি পরানোর হিড়িক। শাড়ির সঙ্গে ম্যাচিং ব্লাউজ চাই। সে নিয়েও চিন্তা। চিন্তা শুধু বড়োদের।  তাই টুংকুরি শাড়ি পরেই খুশি। কে বলল? কেন ঋপণ আঙ্কেলের তোলা প্রচ্ছদের ছবিতে দেখছো না। তবে নীরবদের মতো ছোটোরাও মাঝে মাঝে চিন্তায় পড়ে বইকি। নীরব কে? তা জানতে অঙ্কিতের লেখাটা পড়ে ফেল। শুধু চিন্তা নয় ছোটোদের রকির মতো মনখারাপ হয় যখন মা কিছুতে না বলে। স্বাগতা আন্টির গল্পটা পড়ে জানিও। জয়দীপ দারুণ ছবি এঁকেছে। সৃঞ্জয়ও খুব সুন্দর এঁকেছো। দুজনকেই আদর। মন খারাপ চিন্তা এক নিমেষে ভাল হয়ে যায় যখন বাসবদত্তা আন্টি বেড়াতে যাবার গল্প বলে। আর মনে মাঝে মাঝে ভয়ও হয় যখন শ্রীকান্ত আঙ্কেলের লাচুঙের নেকড়ে পড়ি। ঠিক কিনা? সামনেই  মাতৃভাষ দিবস, সেটা দোলনচাঁপা আন্টি বলল। এবার সেদিন কি পড়বে কি লিখবে কি আঁকব সেটা ভাবো, কেমন? এসো সেদিন বাংলা পড়ি বাংলায় কথা বলি আর বাংলা লিখি।.....মৌসুমী ঘোষ।

নাম : সৃঞ্জয় মৌলিক
তৃতীয় শ্রেণী
দোলনা ডে স্কুল,কলকাতা

রবে - নীরবে

~ অঙ্কিত ঘোষ

Ankit Ghosh.Class - 10 School - Sukchar Karmadaksha Chandrachur Vidyatan.

ক্লান্ত মফঃস্বল, ব্যস্ত রাস্তা, গম্ভীর প্রাণ , নির্জন কোণ , অধৈর্য্য গগন, গমগমে ষ্টেশন, এই সবকিছুকে জড়িয়ে ধরে এক মফঃস্বল, সোদপুর। একাধিক কেন্দ্রের মধ্যে একটি কেন্দ্রকে নিয়ে আজকের গল্প । ছেলেটির নাম নীরব। নামের সঙ্গে মিল ও বেশ। খুব একটা কথা বলেনা। তবে ভাবে খুব বেশি। আবার বেশিও বলা যায়না। মানে সাধারণে যা বলে, ও সেটা ভাবে। নীরবের বয়স একুশ বছর। উত্তর কলকাতার এক নামী ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের থার্ড-ইয়ারের স্টুডেন্ট। পড়াশুনোয় বলা যায় ওই-ই একশোয় পঁচানব্বই পাওয়া ছাত্র। বাবা-মাও খুব একটা চাপ সৃষ্টি করেননা, অর্থাৎ যদি রেজাল্ট খারাপ করে, তবেও কিছু বলবেননা আবার ভালো করলেও কিছুই বলেননা। বন্ধুও তেমন নেই আবার শত্রুও নেই। চলুন নীরবের জীবনে একটু উঁকি দিয়ে দেখি।

আজ সূর্য যেন একটু ‘কুল মুডে’ আছে। যাকে বলা যায় স্বল্পতাপী রৌদ্রোজ্জ্বল। দিনটা বুধবার। নীরব আজ কলেজে যাবে। কলেজ বেশ দূরে বলে নীরব আড়াই ঘন্টা আগে বেরোয়। সময়কে সে শ্রদ্ধা করে। সকালে প্রাতঃরাশ সেরেই বেরিয়েছে, এখন ট্রেনের গেটের একপাশে দাঁড়িয়ে। প্রায়ই এমন দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে যায় তাই এটা বর্তমানে অভ্যাস। এমনই পৌঁছোলো শিয়ালদা ষ্টেশনে। আজও বেশ জমজমাট শিয়ালদা রোজের মতো। নীরব ভিড়ে বয়ে এগিয়ে চলেছে। হঠাৎ একজনের ওপর চোখ গেল নীরবের। লোকটি হয়ত নিজের ওয়ালেট ঠিক করছে। বেশ সাবধানী বোধহয়। পকেট থেকে হাত বের করলেন আর ঠিক তখনই একটা ভাঁজ করা কাগজ পড়ে গেল। নীরব ছুটে তুলল কাগজটা, হলুদ রঙের বেশ সুন্দর কাগজটি। তুলে দিতে গেল সেটা, কিন্তু কোথায় সে? ক‌ই দেখা যাচ্ছেনা তো! হয়ত সেও বয়ে গেছে ভিড়ে। নীরব কাগজটি নিজের কাছে রাখল, না দেখেই। পেলে দিয়ে দেবে।

কলেজ শেষ করে এখন বাড়ি ফিরছে নীরব। না, আর দেখতে পায়নি লোকটিকে। খুব কৌতুহল হচ্ছে কাগজটি দেখার জন্য। ব্যাগ থেকে বের করে দেখল একটা চিঠি। তবে সেখানে কাউকে উদ্দেশ্য করে কিছু লেখা নেই। একবার মনে বাধলো, কিন্তু শেষে পড়তে শুরু করল।

“জীবন বড় আশ্চর্য, যেথায় আশ্চর্য বিনা আর কিছু নাই। প্রতিপদে আমার কেবল আশ্চর্য‌ই বোধ হয়, হয়ত সকলের‌ই। গত পরশু অফিসের পার্টিতে বেশ হুল্লোড় করেছি। বহু নতুনের সঙ্গে আলাপ জমেছে। শেষে এক‌ই গাড়িতে বাড়ি ফিরেছি। আমি বেশ আমুদে, তুমি তো জান‌ই! বন্ধুদের সঙ্গে পার্টি, হ‌ই হ‌ই, পিকনিক, নাচ, গান আমার বেশ পছন্দের। সকলের কাছে আমি এক খোলা ব‌ই। তবুও আমার মতে তারা কেবল ব‌ইয়ের ‘একনজরে’ অংশ টুকুই জানে। আর কেবল একনজরে পড়েই সম্পূর্ণ অধ্যায় বা সম্পূর্ণ ব‌ই পড়া হয় কি? এই যেমন প্রতি রাতে আমার বালিশ ভেজে, তা কি কেউ জানে তুমি ছাড়া? মাঝে মাঝে দুঃখরা গালের ওপর দিয়ে ছুটে আবার শুকিয়ে যায়, তাও শুধু তুমি জানো। হ্যাঁ আমি জানি আমার থেকেও অনেক অনেক দুঃখী মানুষ এই পৃথিবীতে আছে। তবে আমার দুঃখ তো কার‌ও নেই! এখন ভাবি কি হবে দুঃখ প্রকাশ করে? কার‌ও সময় নেই। হয়ত রাস্তা বাতলে দেবে, তবে যেতে আমাকেই হবে। যাইহোক এর সব‌ই তুমি জানো। একঘর লোকের মাঝেও একা মনে করা যায়, কেননা পছন্দটা তার। দুঃখ একটা মায়া। না কাটিয়ে উঠলে দুঃখ পাবার অন্ত নেই। তবুও যখন গালের আবার নোনতা জলের স্পর্শ পাবার ইচ্ছে করে তখন তোমায় চিঠি লিখি। বোঝা কমাবার জন্য। 

ইতি

-তুমি তো জান‌ই”

এতটা পড়ে শেষ করল নীরব। ওর কেমন একটা হচ্ছে, ঠিক বলা যায়না। এই চিঠিতে তুমিটা কে? সেটা ও জানতে চায়না। লোকটিকে? তাও না। মনেহয় এমন একটা চিঠি সবার পকেটেই আছে।


মায়ের গন্ধ

স্বাগতা ভট্টাচার্য্য

রন্টি এখন প্রথম শ্রেণী তে পড়ছে ।এখন কি ওকে ছোট্ট ছেলে বলা যায় ।আজ সকালে স্কুলে যাবার জন্য তৈরী করতে করতে মা বললো-রন্টি আজ স্কুল থেকে ফিরে ঠামের কাছে ভালো ছেলে হয়ে থাকবে ।আমি তোমার জন্য চিকেন বানিয়ে রাখবো । আমি আর বাবা একটু বইমেলায় যাবো-

-মা আমিও তোমাদের সাথে যাবো

মা হেসে বললো -না বাবা এখনও তুই ছোট ।আরেকটু বড় হয়ে নে ।অন্ততঃ ক্লাস ফাইভ হোক। 

মুখ গোমড়া হয়ে গেলো রন্টির ।বুকের মধ্যে কেমন যেন একটা কষ্ট যেন মায়ের সামনেই চোখ থেকে জল পড়ে যাবে ।কোনরকমে ফ্যান ভাত আর আলু দিয়ে মাখা গিলে ফেলে ।বেসিনে মুখ ধুয়ে ছুট দেয় ব্যাগ, জলের বোতল, টিফিন ঠিকমতো নেওয়া হয়েছে কিনা না দেখেই ।মা তখনও বলছিলো অনেকটা বড় জায়গায় বইমেলা হয় ।এতোটা বড় জায়গায় হাঁটতে হবে, অনেক লোকের ভীড়, শুধুই বই আর বই শুধু তো চকচকে ছবির বই নয়-

একটু থতিয়ে যায় রন্টি মা হয়তো ঠিকই বলছে।কিন্ত মুখ ভার করে গিয়ে উঠে বসে গাড়িতে ।

রন্টির পোশাকী নাম শুভজয় ঘোষ ।অন্য বন্ধুরা দেখে শুভ আজ কেমন চুপচাপ ।গাড়ির চালক তমাল আড়চোখে খেয়াল করে যে আজ রন্টির মুখ ভার ।সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে রেডি হওয়া, গতকাল কোন কারণে রাতে মার খাওয়া, টিচার বা অন্য কোন পেরেন্ট্স এর নালিশের জের ,ক্লোজ ফ্রেন্ডের সাথে ঝগড়া ,গতকাল স্কুলে কিছু ফেলে আসা এরকম অনেক কারণ থাকে ।

এখন আর তমাল ঘাঁটায় না ।ভাবে ছুটির সময় মুড ঠিক হয়ে যাবে নিশ্চই।চুপচাপ স্কুলে লাইন করে ঢুকে যায় শুভজয় ।

ক্লোজ ফ্রেন্ডসরাও খেয়াল করে শুভ আজ কথাই বলছে না তেমন । এরকম ভাবেই টিফিন অব্দি কাটলো ।আজ টিফিন শেয়ার করে নি শুভ কারো সাথে।ঘরের জানলা দিয়ে রোদ ঝলমল আকাশের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে সুজি আর পরোটা খাচ্ছে ।সেটাতেও যেন মন নেই ।টিফিনের পর বাংলা ক্লাস ।অতসী ম্যাম বাংলা পড়ান । ম্যাম ক্লাসে কিছুক্ষণ পড়াতে পড়াতে ডাকলেন- শুভজয় কাম হিয়ার ।

খুব নরম গলায় বললেন - কি হয়েছে আজ?

মাথা নীচু করে দাঁড়িয়ে থাকে সে ।কি বলবে! স্কুল থেকে ফিরে মাকে বাড়িতে দেখতে না পেলে যে ভালো লাগে না ।বাবা আর মা আজ বইমেলায় ঘুরবে আর সে সেই আনন্দ থেকে বঞ্চিত থাকবে এটাই মানতে পারছে না! মা বলছিলো এখনও তিন বছর বাদে সে বইমেলায় যেতে পারবে!

অনেক কষ্টে নিজেকে সামলে বললো- ম্যাম মা আর বাবা আজ বইমেলায় যাবে ।আমিও যেতে চাইলাম-

চোখটা কি চিকচিক করে উঠলো!

অতসী ম্যাম আস্তে আস্তে বললো

-মা নিয়ে যেতে চাইলো না! শুভজয় সেজন্যই সারাদিন মনমরা হয়ে আছে! 

কলকাতায় শীতকালে প্রত্যেক বছর একটা অনেক বড় মাঠে বইমেলা বসে ।গেট ই হয় অনেকগুলো ।সাতটা আটটা! সেখানে অনেক অনেক মানুষ আসে ।শুধুই বইয়ের দোকান অনেক অনেক ।মোটা মোটা বই ।একটু হাঁটার পর পা ব্যথা করবে ।খিদে পাবে ।খাবারের দোকান প্রচুর কিন্ত অনেক লাইন পড়ে । বাবা মায়ের হাত ধরে থাকতে হবে ।অনেক অনেক লোক, ঠাসা ভীড় ।আমার কথা হয়তো গল্প মনে হচ্ছে আচ্ছা দাঁড়া তোদের দেখাচ্ছি ।বলেই অতসী ম্যাম মোবাইল খুলে একটা ভীড়ে ভরা একটা সাজানো দোকানের ছবি দেখালো মোবাইলে ।ছবি দেখে শুভজয় অবাক!  ভিডিও দেখালো দু একটা ।

মা তো ভালোর জন্যই বলছিলো ।অতসী ম্যাম মনের কথাটা বুঝে ফেলেছে-মা বাবা সবসময় ভালোর জন্যই বলে ভুল বুঝিস তোরা ।একটু বড় হও নিশ্চই যাবে বইমেলায় ।-

 ছুটির আগে নোটিশ দেওয়া হলো সামনের শনিবারে স্কুল থেকে ক্লাস ওয়ান থেকে ফোরের স্টুডেন্টস দের একটা পিকনিকে নিয়ে যাওয়া হবে ।পেরেন্টস দের মনডে স্কুলে আসতে হবে মিটিং আছে ।অতসী ম্যামের সাথে মায়ের গন্ধ কেমন যেন মিলে গেলো আজ ।ছুটির বেল ও বেজে ওঠে!

জয়দীপ সাহা,অষ্টম শ্রেণি,সোদপুর হাই স্কুল,উত্তর ২৪ পরগণা
🍂
আরও পড়ুন 👇
ধারাবাহিক উপন্যাস
লাচুঙের নেকড়ে
শ্রীকান্ত অধিকারী

পর্ব ৩৬

পাপ্পি। পাপ্পিকে হঠাৎ মনে পড়ে শিঙির। কতদিন কোলে তুলে আদর করেনি। পাপ্পির সঙ্গে সেই দুষ্টুমির মুহুর্তগুলো মনে পড়তেই ছোট্ট বুকটা ফুলে ফুলে ওঠে। দাদাটাও সেই কবে বেড়াতে গিয়ে কোথায় যে গেল! কষ্ট হয় না! কাউকে তো বলা যায় না। ততক্ষণে ঠিক পাপ্পির মতই একটা লোমশ স্পেনিজ এসে ওর পায়ের কাছে ঘুর ঘুর করতে শুরু করে। অমরবাবু দ্রুত ওর কাছে এসে ছোট্ট কুকুরটাকে কোলে তুলে নেয়,- কুকুরটার মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বলেন, অনেক ক্ষণ দেখে নাই তো, তাই। তারপরেই ‘দোরোক’ বলে ডাক পারতেই একটা কিশোর মেয়ে এসে কুকুরটাকে নিয়ে চলে যায়। অমরবাবু ওদেরকে একটা আলাদা ঘরে নিয়ে যায়। দেখিয়ে দেয় ওদের প্রয়োজনীয় বাথরুম, শোবার ঘর আর ভিউ পয়েন্ট। এখান থেকে বাঁশবেতের চেয়ারে হিমালয়ের আপার জঙ্গুর অনেকটা দেখা যায়। অমরবাবু বেশ সুন্দর করে বাংলায় বলেন। এই বাঁশবেত দিয়ে প্রায় সবটায় ঘেরা। নীচে অর্থাৎ দক্ষিণবঙ্গে বা বাংলাদেশের প্রায়ই এই রকম ফেন্স জাতীয় চৌহদ্দি ঘেরা থাকে। পাহাড়ি এলাকায় বিশেষত নর্থ সিকিমে সেভাবে মানুষদের জায়গা জমি ঘেরা নেই। কিন্তু অমরবাবুর এই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার অনেকটা জায়গা ঘেরা। আর তার গায়ে শুধুই লতানো গুল্ম জাতীয় গাছ। খুব যে ফুল ফুটে আছে তা নয়। তবে ফুটছে; উৎসবের সময় সব ফুটে যাবে,- ওদের সঙ্গে এখানের এক মহিলা কর্মী বলে। ওই ওদের সাহায্যকারী। কথা কম বলে। তবে এরই মধ্যে বড়মামি জেনে নিয়েছে ওর নাম চম্পা। ও বলেছে ওর বাড়ি বেড়াতে নিয়ে যাবে। 
এত সুন্দর জায়গা তবু ওদের কারও মন ভাল নেই।  রামসিঙের বাবা ফিসফিস করে বলে,-নিবু, দরজার মাথায় দেখছ। নিবেদিতা চোখ তুলে জানিয়ে দেয় যে সেও দেখেছে। ঠিক যেমন দেখেছিল লাচুঙের হোমস্টে হোয়াট লিলিতে। ঠিক একই চিহ্ন। - একটা দাঁড়ি তার দু পাশে দুটো ফুটকি। সেটা আবার ফার্স্ট ব্রাকেট দিয়ে কভার করা। অর্থাৎ দেখতে ঠিকেই রকম-(.।.)। 
তার মানে এরাও এনিমিস্ট! 
-আসলে এখানে ট্রাইবাল আদি বাসিন্দা হিসেবে আমিনিস্ট প্রায় সবাই। বৌদ্ধদের মত। প্রকৃতিবাদী।পাহাড় নদী গাছ ফুল ফল সবেতেই ঈশ্বর দেখে। প্রকৃতিই ঈশ্বর। রামসিঙের মা বলে,- দি ট্রাইবাল কম্যুনিটি অব ইস্ট অ্যান্ড নর্থ ইণ্ডিয়ার হিমালয়ন রেঞ্জ নিয়ে কাজ করার সময় দেখে ছিলাম ওদের ট্রাইবাল কম্যুনিটির নানান সংগঠন। তাদের মধ্যে ILTA মানে ইন্ডিজেনাস লেপচা ট্রাইবাল অ্যাসোসিয়েশন বেশি অ্যাকটিভ। ওদের একটাই কথা,- Many platforms are the same background, many artwork are the same philosophy, color and fragrance are different, same feeling, language is different, definition is same, even if food and garland are different, respect is same. 
ওরা যে ঘরে বসে আছে, এই ঘরের দেয়ালে এদিক ওদিকে নানান হ্যন্ডিক্রাফট ছড়িয়ে  রয়েছে। চারটে এদেরই তৈরি টেবিল। এই সব চোখে লাগার মত। চম্পা এসে ওদের ধরিয়ে দিয়ে গেছে সিংকি স্যুপ। গুন্দ্রুক স্যুপের মত। বিভিন্ন সব্জি দিয়ে বানানো। সঙ্গে ইয়াকি পনির দেওয়া তিব্বতী রুটি। স্যুপের মাথা থেকে গরম গরম বাষ্প উঠে আসায় ওদের মনে পড়ে সারা দিন তেমন খাওয়া হয়নি। সেই লাচুঙের পুলিশ স্টেশন থেকে সে রকম কোনো ভারী কিছু খাওয়া হয়নি। শিঙি এক বার ওর মায়ের দিকে তাকাতেই ওর মা মাথা হেলিয়ে সম্মতি দেয়। অবশ্য অমরবাবু এসে বলেন, খান খান হোম মেড। ভাল খেতে। 
ওরা যত ক্ষণ খাচ্ছিল তত ক্ষণ অমরবাবু ওদের পাশে দাঁড়িয়ে ছিল। ওদের খাওয়া হলে  অমরবাবু নিজের ঘরে নিয়ে যান। পাশে নরম গদি বসানো কাঠের চেয়ারে বসতে বলে একটা মোটা ফটো অ্যালবামের মত দেন।-- এখানে আমাদের MLAS এর সব জায়গার ছবি বিভিন্ন প্রোডাক্টের ছবি সব আছে। দেখতে পারেন। আর ঠিক করে নিন কোন জায়গাটা দেখতে চান। আমি সেখানেই নিয়ে যাব। 
বড়মামি এ সব কথার কোনো উত্তর না দিয়ে হঠাৎই বলে, ঢোকার মুখে ঐ মুর্তিটা কীসের। দেখে ভয় করছিল। আপনার বাড়ির ভেতরেও এই ছবি কেন? শিঙি আর শিঙির মা  চমকে বড় মামির দিকে তাকায়।- কীসের মূর্তি? 
অমরবাবু বড় মামির এমন অস্বাভাবিক কন্ঠে উৎকন্ঠিত হয়ে ওঠে।– কউন?-ঠেকং টেক ? কাবির লুংচুক? 
(ক্রমশ)
উৎসব মরশুমে আমেরিকাতে বাসবদত্তা কদম

পর্ব ১২ আগেরদিনের পর্বে দুটো খুব জরুরী পয়েন্ট বলতে ভুলে গেছিলাম তাই ফিরে গেলাম আবার পুরনো জায়গায়।
গত সপ্তাহে সেই যে ঘুরে এলাম ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের ধ্বংসাবশেষ এর কাছ থেকে যেখানে এখনো প্রতিদিন অজস্র মানুষ আসেন চোখের জলে নীরবে শ্রদ্ধা জানাতে। আমরাও সেখানে খানিক সময় দাঁড়িয়েছিলাম মাথা নীচু করে। লিখেছি। পড়েছ তোমরা। কিন্তু যা বলা হয় নি- এ ঘটনা যখন ঘটে তখন তোমাদের কারুর জন্ম হয় নি তাই এই হাড় হিম করা ঘটনা হয়তো নাও শুনে থাকতে পারো। 
২০০১ সালের এগারোই সেপ্টেম্বর এ লেখা হলো পৃথিবীর সভ্যতার ইতিহাসের এক কালো অধ্যায়। এক আত্মঘাতী আতঙ্কবাদী বিমান আঘাতে শুধুমাত্র ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের টাওয়ার দুটি ধ্বংস হলো তা তো নয়। ইতিহাসের পাতায় ভয় শব্দ নতুন করে লেখা হলো। মৃত্যু হলো অজস্র সাধারণ মানুষের। ভেঙে পড়লো দুটি টাওয়ার একসঙ্গে। কি কেন, এ সব নিয়েই ভবিষ্যতে অনেক কিছুই জানবে তোমরা। ভ্রমণ কাহিনী হলেও এটুকু বলে দেওয়া উচিত মনে হল।
আরেকটা কথা বলে আবার বেড়াতে যাই। সেই যে হাডসন নদীকে পেরিয়ে এলাম আমরা, তার এক সুবিশাল লম্বা ক্যান্টিলিভার ব্রিজের কথাও লিখতে ভুলে গেছি। এ ব্রিজ জুড়ে রেখেছে নিউউয়র্কের দুটি শহরকে। এর ওপর দিয়ে হাঁটা যায়। সাইকেলেও যাওয়া যায়। হাঁটতে হাঁটতে দেখা হয়ে যায় হাডসন নদীর অপূর্ব দৃশ্য। এ ব্রিজের বয়স প্রায় নব্বই। নামটা ভারি মজার- রিপ ভ্যান উইংকল ব্রিজ। এই রিপ ভ্যান উইংকিল চরিত্রকে আশা করি তোমরা সবাই চেনো, তার মতোই বুড়ো এ ব্রিজ।  
চিত্রগ্রাহক - বাসবদত্তা কদম

এবার আমরা চললাম পরের গন্তব্য টাইম স্কোয়ার। এ নাম আমরা সবাই অজস্রবার শুনেছি বিভিন্ন সংবাদে। চাক্ষুষ করা এই প্রথম। এই জায়গায় এসেই আমার মনে হয়েছে একেই বোধহয় বলা যায় হরিহর ছত্রের মেলা। কত যে মানুষ আর কত যে দোকান, একদিকে ব্রডওয়ে আর ফর্টিসেকেন্ড স্ত্রিট অন্যদিকে আমেরিকার বিখ্যাত ফ্যাশন স্ট্রিট সেভেন্থ এভিনিউ। পরপর দাঁড়িয়ে আছে অনেকগুলো মিডিয়া হাউস। অত ঠান্ডাতেও জায়গাটা লোকে লোকারণ্য। শুনলাম এই সেই জায়গা যেখান থেকে প্রতিবছর একত্রিশে ডিসেম্বর রাত বারোটার সময় হয় সেই বিখ্যাত অনুষ্ঠান বল ড্রপ। এই বল ড্রপ প্রায় প্রতিবছর সংবাদে দেখানো হয়। দেখেছি আমরা সবাই। নতুন বছরের সূচনার এই বল ড্রপ দেখতে নাকি পুরো আমেরিকা থেকে হাজারে নয় মানুষ আসেন লাখের গুনতিতে। অমানুষিক ঠান্ডায় ধৈর্য্য ধরে দাঁড়িয়ে সবাই এই অনুষ্ঠান দেখেন।
নিউইয়র্কের সঙ্গে কলকাতা শহরের এক অদ্ভুত মিল আছে। কলকাতার হলুদ ট্যাক্সির মতো অজস্র হলুদ ট্যাক্সি ঘুরে বেড়ায় নিউইয়র্কের রাস্তায়। শুনেছিলাম আগে বহুবার, দেখেছি কিছু সিনেমাতেও। দেখলাম তাদের। সামনে পেয়ে যেতেই ক্যাচ কট কট ক্যামেরায়। সে তো সঙ্গেই আছে। চকচকে একটু বেশি কিন্তু ট্যাক্সি তো বটে। তায় হলুদ। দেখলে মনে পড়বেই কলকাতার ট্যাক্সির কথা। 
টাইম স্কোয়ারের আশেপাশে আরো বেশ কিছু জায়গা আছে দেখার। বেশ স্লো মোশনে এটা ওটা দেখতে দেখতে হাঁটছি। মিডিয়া হাউসগুলোর মাথায় দেখলাম সারাসময় ব্রেকিং নিউস ভেসে বেড়াচ্ছে। হ্যাঁ অবশ্যই স্ক্রিনে। ঝকঝকে টাইম স্কোয়ার অঞ্চলে আমার ক্যামেরার জন্য তখন ছবি তোলার অজস্র উপকরণ। 
সামনেই ব্রডওয়ে যেখানে রয়েছে চল্লিশটির বেশি সিনেমাহল। কোনোটাই ছোট নয়। সিট সংখ্যা শুনলাম সবগুলোতেই পাঁচশোর কাছাকাছি বা তার বেশি। এই এলাকার আশেপাশের রাস্তাগুলির এতগুলি সিনেমা হল বা থিয়েটার একই এলাকায় থাকায় এই এলাকাটার নামই হয়ে গেছে থিয়েটার ডিস্ট্রিক্ট। এই সিনেমাহল গুলো সবকটাই বেশ বেশি পুরনো। এদের অনেকেরই জন্ম ১৯০০ খৃষ্টাব্দের আগে। লোকজন লাইন দিয়ে টিকিট কাটছেন দেখলাম।
(ক্রমশ)
স্মরণীয় দিবস।
মাতৃভাষা দিবস (২১শে ফেব্রুয়ারি)।
কলমে-দোলনচাঁপা তেওয়ারী দে।

মনের ভাব প্রকাশ করার জন্য, আমরা যে সকল অর্থবোধক শব্দ বলি বা লেখি, তাকে ভাষা বলে। ভাষা একটি মানুষের থেকে আর একটি মানুষের যোগাযোগের সুন্দর ও সহজাত মাধ্যম।
অর্থপূর্ণভাবে মনের ভাব প্রকাশ করার জন্যই ভাষার উৎপত্তি। ভাষার ব্যবহার ছাড়া সভ্যতার বিকাশ কখনই সম্ভব নয়। পৃথিবীতে প্রায় সাত হাজারেরও বেশি ভাষা আছে। প্রতিটি ভাষাভাষী মানুষের কাছেই ভাষা ভিন্ন, ভাষার গঠন ভিন্ন, তার ভাব প্রকাশের ধরনও ভিন্ন, তবে প্রত্যেক মানুষের কাছে তার মাতৃভাষা সবথেকে প্রিয়।

২১শে ফেব্রুয়ারী আন্তর্জাতিক 'মাতৃভাষা দিবস' পশ্চিমবঙ্গ, বাংলাদেশ সহ পৃথিবীর সমস্ত বাংলাভাষী মানুষের কাছে এই দিনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দিন হিসেবে পালিত হয়।
১৯৯৯ সালের র ১৭ই নভেম্বর জাতিসংঘ কর্তৃক গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রতিবছর একুশে ফেব্রুয়ারি বিশ্বব্যাপী পালন করা হয় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। এটি শহীদ দিবস হিসেবেও পরিচিত।
মাতৃভাষা দিবস হলো, ভাষাগত ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্রের সচেতনতা বৃদ্ধি এবং বহুভাষিকতাকে আরও উন্নত করার জন্য এই দিবসটি বিশ্বব্যাপী পালিত হয়।
মাতৃভাষা দিবসের বৃহত্তর উদ্যোগের অংশ ২০১৭সালের ১৬ই মে তারিখে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ কর্তৃক গৃহীত বিশ্বের জনগণের দ্বারা ব্যবহৃত সকল ভাষার সংরক্ষণ ও সুরক্ষা যা ২০০৮ সালকে আন্তর্জাতিক ভাষার বছরে প্রতিষ্ঠিত করেছে।

 ২০০০ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারী থেকে সারা বিশ্বে 'মাতৃভাষা দিবস' হিসেবে পালিত হচ্ছে। বাংলাদেশিদের তথা তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের ভাষা আন্দোলনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে মাতৃভাষা দিবস পালিত হয়।

এর ইতিহাস সম্পর্কে জানতে গেলে একটু পেছনে ফিরে দেখতে হয়। ১৯৪৭ সালে ভারতবর্ষ বিভক্ত হয়ে যখন পাকিস্তান তৈরি হয়েছিল তখন এর দুটি ভৌগোলিক ভাবে পৃথক অংশ ছিল এক. পূর্ব পাকিস্তান যা বর্তমানে বাংলাদেশ নামে পরিচিত।
 ২ পশ্চিম পাকিস্তান যা, বর্তমানে পাকিস্তান নামে পরিচিত।
 এই দুই অংশের সংস্কৃতি কৃষ্টি ভাষা একে অপরের থেকে একেবারেই আলাদা ছিল। পূর্ব পাকিস্তান অর্থাৎ অধুনা বাংলাদেশের খাওয়া-দাওয়া পরিধান এবং ভাষা সবই ছিল বাঙালির মতো এবং ভাষাও বাংলা। আর পশ্চিম পাকিস্তানের খাওয়া-দাওয়া, পরিধান, সবই ছিল অন্যরকমের। শুধু তাই নয়, ভাষাও ছিল উর্দু।

১৯৪৭ সালে পাকিস্তান সরকার উর্দুকে পাকিস্তানের একমাত্র জাতীয় ভাষা হিসেবে ঘোষণা করে, যদিও পূর্ব পাকিস্তান এবং পশ্চিম পাকিস্তানের সংমিশ্রনের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ বাংঙালী এবং বাংলা ভাষায় কথা বলতেন। জনসংখ্যার দিক দিয়ে অধিকাংশই ছিলেন পূর্ব পাকিস্তানের, তাদের মাতৃভাষা বাংলা হওয়ায় পূর্ব পাকিস্তানের জনসাধারণ স্বাভাবিকভাবে প্রতিবাদ করেছিলেন। তারা উর্দু ছাড়াও বাংলা ভাষাকে জাতীয় ভাষা করার দাবি জানাই এবং পাকিস্তানের গণপরিষদে ২৩ ফেব্রুয়ারী ১৯৪৮ সালে পূর্ব পাকিস্তান থেকে ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত এই দাবিটি প্রথম উত্থাপন করেন।

আস্তে আস্তে পুরো পাকিস্তানে বাংলা ভাষাকে জাতীয় ভাষার মর্যাদা দেওয়ার জন্য বিদ্রোহ ছড়িয়ে পড়ে ।সেই বিদ্রোহকে দমন করার জন্য পাকিস্তান সরকার জনসভা ও সমাবেশ নিষিদ্ধ করে দেয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সাধারণ জনগণের সমর্থনে সভা ও সমাবেশের আয়োজন করেন। ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারী পুলিশ সমাবেশে নির্বিচারে গুলি চালায়, সেই গুলিতে আব্দুস সালাম, আবুল বারকত, আব্দুল জব্বার, ও সাফিউর রফিকউদ্দিন আহমেদ ছাড়াও শতাধিক মানুষ আহত হন। এই দিনটি ছিল ঐতিহাসিক দিক থেকে এক বিরল ঘটনা যেখানে মানুষ তাদের
মাতৃভাষার জন্য জীবন উৎসর্গ পর্যন্ত করেছিলেন।

সেই থেকে বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক ভাষা দিবসকে তাদের একটি দুঃখজনক দিন হিসেবে পালন করে এবং শহীদ মিনার পরিদর্শন, শহীদদের স্মরণে নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভ এবং তাদের প্রতি গভীর দুঃখ, শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা  জানায়।
আন্তর্জাতিক 'মাতৃভাষা দিবস বাংলাদেশে একটি জাতীয় ছুটির দিন। এমনকি পৃথিবীর যেকোন প্রান্তে যেখানে বাঙালিরা থাকেন এই দিনটিতে শহীদদের স্মরণ করে মাতৃভাষা দিবস পালন করেন। কানাডার ভ্যানকুভারে বসবাসকারী বাঙালি রফিকুল ইসলাম এবং আব্দুস সালাম একটি প্রস্তাব করেছিলেন তারা ৯ জানুয়ারি ১৯৯৮ তারিখে কাফি আনানকে একটি চিঠি লিখে আন্তর্জাতিক ভাষা দিবস ঘোষণার মাধ্যমে বিশ্বের ভাষা গুলিকে বিলুপ্তির হাত থেকে বাঁচানোর জন্য একটি পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ করেন।রফিক ভাষা আন্দোলনের সময় ঢাকায় ১৯৫২ সালের হত্যাকাণ্ডের স্মরণে ২১শে ফেব্রুয়ারী তারিখের প্রস্তাব করেন এবং ইউনেস্কোর মহাসচিব সেদের ইকোমেয়র এর বিশেষ উপদেষ্টা ১৭ ই নভেম্বর ১৯৯৯ তারিখে ইউনেস্কোর ৩০ তম সাধারণ পরিষদে সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নেয় যে, ১৯৫২সালের এই দিনে তাদের জীবনউৎসর্গকারী শহীদদের স্মরণে একুশে ফেব্রুয়ারীকে সারা বিশ্বে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হবে এবং বাস্তবে তায় হয়।

 ২০০৮ সালকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষার বছর হিসেবে মানা শুরু হয় এবং পরবর্তীকালে এ ফিলিপাইন, মিশর ও কানাডায় পালিত হয়।

বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক ভাষা দিবস উদযাপন করা হয় শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে। তাঁদের ভাষা ও সংস্কৃতিকে সম্মান জানিয়ে সামাজিক সমাবেশের আয়োজন করা হয়, এছাড়াও সাহিত্য প্রতিযোগিতা ও রাস্তায় আলপনা আঁকা হয়। পুরো আয়োজনটাই হয় শহীদদের স্মরণে বাংলা একাডেমী পুরো ফেব্রুয়ারী মাস ব্যাপী ঢাকায় একুশে বইমেলার আয়োজন করে।
ভারতবর্ষে ডিজিটাল ইন্ডিয়ার উদ্যোগে দেশের ২২ টি নির্ধারিত ভাষায় ডিজিটালাইজড সামগ্রী উপলব্ধ করা হয় এবং ভারতের অন্যান্য ২৩৪ টি স্বীকৃত ভাষার প্রসার করা হয়, মহেশ্বরী সেন্ট্রাল ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়ান ল্যাঙ্গুয়েজস ভারত বাণী প্রকল্পের মাধ্যমে, জুন ২০১৬ সালে শুরু হয়েছিল এবং ফেব্রুয়ারী ২০১৭ এর মধ্যে সাতটি ভারতীয় ভাষার সামগ্রী বিনামূল্যে উপলব্ধ করা হয়।
প্রত্যেকের কাছে তার মাতৃভাষা অত্যন্ত প্রিয়।

পাঠ প্রতিক্রিয়া
(ছোটবেলা ১৬৬ পড়ে মহুয়া মিল যা লিখলেন) 

জ্বলদর্চি  ছেলেবেলা  সংখ্যা  ১৬৬ সদ্য পড়লাম, যদিও  এই ওয়েবজিনের  প্রায় প্রতিটা সংখ্যাই আমি পড়ে ফেলি সময় পেলে। 'জ্বলদর্চি'  নামটার আকর্ষণ  তো আছেই তার সাথে প্রচ্ছদও  ভারি আকর্ষণীয়। এতটাই আন্তরিক স্নেহের পরশ বোলানো  মৌসুমী ঘোষের  সম্পাদকীয়   যে  পড়ে নিজের কিশোরীবেলায় ফিরতে ইচ্ছে করে।
সদ্য প্র‍য়াত ছড়াকার ভবানীপ্রসাদ  মজুমদারের প্রতি  শ্রদ্ধা  জানিয়ে ছড়া লিখেছেন  সুব্রত দেব। 'দিল্লি থেকে বিল্লি এলো....' র সৃষ্টিকর্তাকে শ্রদ্ধা  জানানোর  মাধ্যম  ছড়ার থেকে ভালো  আর কিবা হতে পারে! রুদ্রাংশু দাসের রেখায় কালাম স্যার প্রাণ  পেয়েছেন। 
উপায় নেই তাই  ঋকুর ভ্যাবাচ্যাকা  মার দেখার জন্য  পরবর্তী  পর্বের  জন্য  অপেক্ষা  করতেই হবে। নাড়ুমামার সাথে মাঠে গিয়ে ঋকু কিরকম  খেললো সেটা চন্দন চক্রবর্তী  পরের পর্বে  জানাবেন। পল্টুদা পরপর ফুলুড়ি,ফুচকা আইসক্রিম  খেয়ে সুস্থ আছে কিনা সেই  চিন্তাও  কিন্তু রয়ে গেছে। 
 শ্রীকান্ত  অধিকারীর 'লাচুঙের নেকড়ে ' টানটান  উত্তেজনায় বেঁধে রাখে পাঠকদের।একদিকে নর্থ সিকিমের  প্রাকৃতিক  সৌন্দর্য অন্যদিকে দূর্গম পথের ভয়াবহতা পড়তে  পড়তে গায়ে কাঁটা  দেয়। মাথায় রেশমী  টুপি কোমড়ে 'বানপক' গোঁজা   লেপচাদের দেখে (পড়ে)দীপকবাবুর মত আমারও হৃদকম্প শুরু  হয়।
 এই বিরাট  পৃথিবীর  সব জায়গায়  তো আমরা পৌঁছাতে পারি না তবে মানস ভ্রমণ  করতেই পারি।সেই সুযোগটাই করে দিয়েছেন  বাসবদত্তা  কদম।ওনার কলমের সওয়ারী হয়ে হাডসন নদীর ফেরিতে ভাসলাম।   ম্যানহাটনে পৌঁছে    ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের টুইনটাওয়ারে ২০০১এর হাড়হিম করা জঙ্গি  আক্রমণে মৃতদের মনে  মনে  শ্রদ্ধা জানালাম।   'ফিয়ারলেস গার্ল'এর স্টাচুর তাৎপর্য  জানতে পারলাম। 
  সাহির সেখের মোম রঙে আঁকা ছবি ভারি মিঠে, টলটলে নদীতে  বাঁধা  ছোট্ট  খেয়া, একমাঠ সবুজের  মধ্যে  ছোট্ট  কুঁড়েঘর!
 বেতারের সঙ্গে জগদীশ চন্দ্র  বসুর নাম জড়ানো  এটা তো  আমরা  সবাই জানি কিন্তু  দোলনচাঁপা  তেওয়ারি  জানালেন  বেতারেরও একটা  বিশেষ দিন  আছে, ইউনেস্কো  স্বীকৃত।বিশ্ববেতার দিবস,১৩ ই ফেব্রুয়ারী। বেতার সম্বন্ধে  হরেক তথ্য  জানতে পারলাম। 
 একটা বাচ্চাদের ওয়েবজিন যে এভাবে মজা, আনন্দ, বন্ধুত্ব আর অজানা তথ্য দিয়ে ঠাসা হতে পারে জ্বলদর্চি না পড়লে জানা যেত না। সম্পাদককে ধন্যবাদ।

সংগ্রহ করতে পারেন 👇

Post a Comment

1 Comments