জ্বলদর্চি

এআই থেকে রেহাই - কল্পকাহিনীপর্ব ১১। এআই নিয়ে সিনেমা/বাসুদেব গুপ্ত

এআই থেকে রেহাই - কল্পকাহিনী
পর্ব ১১। এআই নিয়ে সিনেমা
বাসুদেব গুপ্ত


ভিডিও গেমস আর ফিল্মে এআইএর থিম অনেকদিন ধরেই চালু। অথচ অনির্বাণের এ নিয়ে কিছুই জানা নেই। ও জেডকে নিয়ে বসল অফিস শুরু করেই। কমান্ড দিল, আমাকে এআই নিয়ে চারটে নামকরা ফিল্মের সম্বন্ধে জানাও। 
জেড প্রথমে সিনেমার মত একটা ক্রেডিট টাইটল দেখাল। তাতে চারটে ফিল্মের নাম আর তাদের রিলিজের তারিখ দেওয়া। অনির্বাণ সবগুলোই সিলেক্ট করে কন্টিনিউ টিপে দিতে জেড শুরু করল তার বিবরণী।


এআই নিয়ে প্রথম সর্বপরিচিত ও বহুল আলোচিত সিনেমার নাম ব্লেড রানার ( ১৯৮২)।
এআই বা রোবটিক্স নিয়ে ব্লেড রানার ছবিটি প্রথম আলোড়ন তোলে। কৃত্রিম বুদ্ধি কিভাবে এক বিভীষিকাময় পৃথিবী গড়ে তুলতে পারে, সেই এক কল্পিত ভবিষ্যতের গল্প বলা হয়েছে এই ছবিতে।

ভবিষ্যতে(ছবির কল্পিত বছরটি ছিল ২০১৯) মানুষ কষ্টকর বা বিপজ্জনক কাজ থেকে ছুটি নিয়ে তৈরী করেছে হিউম্যানয়েড অ্যান্ড্রয়েডের এক বিরাট শ্রমিক বাহিনী। তাদের দেখতে মানুষের মতই, চেহারা ব্যবহার সবই মানুষের মত। এদের নাম দেওয়া হয়েছে রেপ্লিক্যান্ট। একজন মানুষ মারা গেলে তার শরীরের ভিতরে যন্ত্র ভরে দিয়ে বানানো হয় এই রেপ্লিকান্ট। রেপ্লিকান্ট মানে এক নকল অস্তিত্ব । আর ব্লেড রানাররা হল একরকম সিক্রেট এজেন্ট যাদের কাজ যে রেপ্লিকান্টরা এই সিস্টেমের বিরুদ্ধতা করে তাদের খুঁজে বার করে ধ্বংস করা।

ফিল্মটিতে সেট করা হয়েছে লস অ্যাঞ্জেলেসে 2019 সালের একটি ডিস্টোপিয়ান(dystopian) ভবিষ্যৎ, যেখানে রেপ্লিক্যান্ট হিসাবে পরিচিত সিন্থেটিক মানুষগুলি মহাকাশ উপনিবেশগুলিতে কাজ করে। তাদের বায়ো-ইঞ্জিনিয়ারীং করে তৈরি করেছে এক মহাশক্তিশালী কর্পোরেশন টাইরেল । রয় বাট্টির নেতৃত্বে উন্নত রেপ্লিক্যান্টদের একটি পলাতক দল যখন পৃথিবীতে ফিরে আসে, তখন অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার রিক ডেকার্ডকে ব্লেড রানার হিসাবে ওদের নিষ্ক্রিয় করার দায়িত্ব দেওয়া হয়। চার দুর্বৃত্ত রেপ্লিকান্ট অফ-ওয়ার্ল্ড উপনিবেশ থেকে পালিয়ে পৃথিবীতে ফিরে এসেছে। রিকের মিশন এদের খুঁজে বার করে ধ্বংস করা। এই রেপ্লিকান্টরা সাধারণ মানুষের চেয়ে অনেক শক্তিশালী, দ্রুত এবং বুদ্ধিমান। তারা দেখতে একেবারে মানুষেরই মত । তাই প্রথমেই একটা উপায় বার করা দরকার যাতে সঠিক ধরা যাবে, কে সত্যি মানুষ আর কে একজন রেপ্লিকান্ট।

কম্পানী থেকে ডেকারডকে দেখানো হয় একটা টেস্ট যার নাম Voight-Kampff টেস্ট। এটা পরীক্ষা করার জন্য ডাকা হয় কম্পানী সিইওর এসিস্টান্ট রাচেলকে। যদি টেস্ট নেগেটিভ হয়, তাহলে বোঝা যাবে, টেস্টটা ঠিক কাজ করছে। কিন্তু ডেকার্ডের কাজটি আরও জটিল হয়ে ওঠে যখন সে আবিষ্কার করে রাচেল নিজেই আসলে একজন রেপ্লিকান্ট। কিন্তু মজার কথা, রাচেলের স্থির বিশ্বাস সে একজন মানুষ। সিইও তখন জানান তিনি রাচেলকে ভালভাবে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য জাল স্মৃতি দিয়েছেন যাতে সে বুঝতে না পারে সে মানুষ নয়। এইভাবে সিনেমার প্লট জটিল হয়ে ওঠে যখন রাচেলের সঙ্গে ডেকারডের এক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। অনেক একশান ও রেপ্লিকান্ট হত্যার পরে ডেকারড রাচেলের সঙ্গে পালিয়ে যায়।

ডেকার্ড যখন রেপ্লিকান্টদের শিকার করে, সে পরস্পরবিরোধী আবেগের সম্মুখীন হয় এবং তার নিজের দায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করে। ছবিটি আইডেন্টিটি, সহানুভূতি এবং মানব ও কৃত্রিম জীবনের মধ্যে অস্পষ্ট রেখার থিমগুলি অন্বেষণ করে৷ রিক যখন অ্যান্ড্রয়েডদের অনুসরণ করে, সে যা করছে তার নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করে - অন্য কথায়, সে ভাবতে শুরু করে যে অ্যান্ড্রয়েডগুলি "মানুষ" নয় কি না। তদুপরি, রিক সন্দেহ করতে শুরু করে যে সে নিজেই একজন অ্যান্ড্রয়েডও তো হতে পারে। এবং তবুও তার সন্দেহ এবং আপত্তি থাকা সত্ত্বেও, রিক একজন "তার সময়ের মানুষ" - এমন একজন যিনি চিন্তাহীনভাবে তার নিজের সমাজের মূল মতবাদের পক্ষে যুদ্ধ করে। 

মুভিটি কাল্ট স্ট্যাটাস অর্জন করার পর থেকে, ফিল্মের ফ্যানেদের মধ্যে প্রচুর বিতর্ক হয় যে ডেকার্ড অজান্তে নিজেই একজন রেপ্লিকান্ট ছিলেন কিনা। সেটা রহস্যই থেকে গেছে। 

এর পরের উল্লেখযোগ্য সিনেমাটির নাম আই রোবট(২০০৪)
"আই, রোবট" ২০০৪ সালের আমেরিকান সায়েন্স ফিকশন অ্যাকশন ফিল্ম। গল্পটি 2035 সালে শিকাগোতে সেট করা হয়েছে, যেখানে অত্যন্ত বুদ্ধিমান রোবটগুলি মানুষকে সুরক্ষিত রাখতে রোবটিক্সের তিনটি আইনের অধীনে মানবতার সেবা করে। এই তিনটি আইনের প্রস্তাবক আইজ্যাক আসিমভ নামে বিখ্যাত কল্প বিজ্ঞানের লেখক, তিনি তাঁর Runaround গল্পটিতে এই তিনটি আইনের প্রস্তাবনা করেন। 

প্রথম আইন: একটি রোবট কোনও মানুষকে আঘাত করবে না বা নিষ্ক্রিয় থেকে কোনও মানুষের ক্ষতি করতে দেবে না।
দ্বিতীয় আইন: যদি একজন মানুষ এক নম্বর আইনের বিপরীত কোন আদেশ দেয় তাহলে একটি রোবটকে অবশ্যই মানুষের আদেশ মানতে হবে।
তৃতীয় আইন: একটি রোবটকে তার নিজের অস্তিত্ব রক্ষা করে যেতে হবে, যতক্ষণ না তা এক বা দু নম্বর আইনের বিরুদ্ধতা করে। 

আই রোবট ছবির প্লটটি এরকম।

গোয়েন্দা দেল স্পুনার মার্কিন রোবোটিক্স এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা ডঃ আলফ্রেড ল্যানিংয়ের কথিত আত্মহত্যার তদন্ত করছেন। অফিসের জানালা থেকে পড়ে ল্যানিংএর মৃত্যু হয়, কিন্তু স্পুনার সন্দিহান এবং সে বিশ্বাস করে যে এটি একটি পরিকল্পিত হত্যা। পুলিশ মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে ঘোষণা করে, কিন্তু স্পুনারের সন্দেহের জন্য সিইও ও ল্যানিংয়ের ব্যবসায়িক অংশীদার, লরেন্স রবার্টসন, অনিচ্ছায় তাকে তদন্ত করার অনুমতি দেন।

রোবটের প্রতি স্পুনারের অবিশ্বাসের পিছনে আছে অতীতের একটি ঘটনা । একদিন একটি গাড়ি দুর্ঘটনা হয়, এবং সেখানে তার প্রাণ বাঁচায় একটি রোবট। কিন্তু একই সঙ্গে একটি ১২ বছর বয়সী মেয়েকে সম্পূর্ণ শীতল যুক্তি দিয়ে বিচার করে সেই একই রোবটটি ডুবে যেতে দেয়।
স্পুনার তদন্ত করার সময় সনি নামে একটি মানব-সদৃশ রোবট আবিষ্কার করেন এবং তাঁর একে ল্যানিংয়ের মৃত্যুর সাথে জড়িত বলে সন্দেহ হয়। এই সন্দেহ সত্য হলে তার মানে হবে যে সনি রোবোটিক্সের তিনটি আইন লঙ্ঘন করেছে, যা আপাতদৃষ্টিতে অসম্ভব।

রোবোসাইকোলজিস্ট ডক্টর সুসান ক্যালভিনের সাথে স্পুনার ধীরে ধীরে রহস্যের গভীরে প্রবেশ করে। তার চোখে মানবতার জন্য একটি বৃহত্তর আসন্ন বিপদের সম্ভাবনা উন্মোচিত হয়। তার সন্দেহ গিয়ে পড়ে রোবট আর ভিকি নামে এক সুপার কম্পিউটারের ওপরে। তদন্ত করতে গিয়ে হঠাৎ একটি রোবট একটি বাক্স থেকে বেরিয়ে আসে, স্পুনারের দিকে একটি বন্দুক তাক করে এবং বিল্ডিং থেকে পালিয়ে যায়। রোবটটিকে তাড়া করে স্পুনার । পালিয়ে রোবটটি একটি রোবট কারখানায় গিয়ে, নিজেকে নিজেই রিপেয়ার করে ও স্পুনারকে আক্রমণ করে। 

শেষ পর্যন্ত এন এস ৫ নামে রোবটটি ধরা পড়ে। হেফাজতে থাকাকালীন, স্পুনার রোবটকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে সে জানায় তার নাম সনি। সে বলতে থাকে তার নিজের স্বপ্ন ও আবেগের কথা। হত্যার কথা প্রশ্ন করলে সে খুব ক্রুদ্ধ হয় ও ক্রুদ্ধভাবে হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি অস্বীকার করে। সে আরো বলে সে স্বপ্ন দেখে, সব রোবটরা মিলে চলেছে এক পবিত্র ভূমির দিকে আর তাদের নিয়ে যাচ্ছে একজন নেতা। সনিকে ধ্বংস করে দেওয়ার পরামর্শ দেন রবারটসন কিন্তু স্পুনার তাকে লুকিয়ে রাখে ও শেষ পর্যন্ত সনি স্পুনারের সঙ্গে সহযোগিতা করতে শুরু করে। 

স্পুনার ল্যানিংয়ের বাড়িতে পৌঁছে সেখানে আরও ক্লু খুঁজে পায়। সবকিছুর পিছনে রবার্টসন রয়েছে বলে সন্দেহ করে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত পরিষ্কার হতে থাকে যে রোবটদের একটি বিপ্লব আসছে। তিনি NS-5 রোবটগুলিকে তাদের স্টোরেজ কন্টেইনারে পুরানো মডেলগুলিকে ধ্বংস করতে যান। কিন্তু NS-5-এর বিশাল ঝাঁক ততক্ষণে শহরের রাস্তায় রাস্তায় বন্যার মত ধেয়ে চলেছে। বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং কারফিউ এবং লকডাউন ঘোষণা করা হয়। 

পথে পথে, মানুষ NS-5-এর বিরুদ্ধে সর্বাত্মক যুদ্ধ চালায়, কিন্তু রোবটদের সংখ্যা বাড়তেই থাকে এবং তারা জিততে শুরু করে। এদিকে, স্পুনার, ডক্টর ক্যালভিন এবং আবিষ্কার করে কেউ রবার্টসনকে তার অফিসে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে গেছে। তখন স্পুনার হঠাৎ বুঝতে পারেন যে এর পেছনে আসলে আছে সুপার কম্পিউটার ভিকি। VIKI তাদের ক্রমাগত নেটওয়ার্ক আপলিংকের মাধ্যমে রোবটদের নিয়ন্ত্রণ করছে। 

অনেক লড়াইএর পরে, স্পুনার, ক্যালভিন এবং সনি VIKI এর কোরের ভিতরে রোবটগুলির সাথে লড়াই করে এবং স্পুনার তাকে ক্যালভিনের পরীক্ষাগার থেকে সনি যে ন্যানাইটগুলি পুনরুদ্ধার করেছিল তার সাথে ইনজেকশন দিয়ে তাকে ধ্বংস করে ফেলে। সমস্ত NS-5 রোবট অবিলম্বে তাদের ডিফল্ট প্রোগ্রামিং-এ ফিরে যায় এবং তাদের নিষ্ক্রিয় করে স্টোরেজে রাখা হয়। স্পুনার অবশেষে সনিকে দিয়ে স্বীকার করায় যে সে ল্যানিংকে হত্যা করেছে। আর এটা সে করে ল্যানিংয়েরই নির্দেশে, কারণ সে একটি রোবট হিসাবে, আইনত "খুন" করতে পারে না যদি না কোন মানুষ তাকে সে আদেশ দেয়। এইখানে ল্যানিং কেন এ কাজ করেছিল তা খানিকটা রহস্যময় ও তা নিয়ে বিভিন্ন মত আছে। ছবির শেষে সনি মিশিগান লেকে যায়। সে পাহাড়ের উপরে দাঁড়ায়, সমস্ত ডিকমিশনড রোবট তার দিকে ফিরে আসে, তার স্বপ্নের চিত্রটি যেন বাস্তব হয়ে ওঠে। 

এই ছবিটি থেকে প্রথম নজর ঘোরে এক সুপার কম্পিউটার বা সুপার বুদ্ধির দিকে। সেটাই পরে আরো বড় হতে হতে আজকের এ আই।

"হার(2013)" 

"হার"(Her) 2013 সালের একটি আমেরিকান সায়েন্স-ফিকশন রোমান্টিক ড্রামা ফিল্ম। যা স্পাইক জোনজে এটা লিখেছেন পরিচালনা এবং সহ প্রযোজনা করেছেন। ছবিটি লস অ্যাঞ্জেলেসের কাছাকাছি ভবিষ্যতের একটি নিঃসঙ্গ এবং অন্তর্মুখী ব্যক্তি থিওডোর টোম্বলির (জোয়াকিন ফিনিক্স এই রোলে অভিনয় করেছেন) জীবনের গল্প অনুসরণ করে। থিওডোর এমন একটি কোম্পানির জন্য কাজ করে যা নিজেদের প্রকাশ করার জন্য সংগ্রাম করে এমন লোকদের জন্য ব্যক্তিগত চিঠি রচনা করে।
 
থিওডোর টোম্বলির বিয়ে ভেঙ্গে গেছে। বিয়ে শেষ হওয়ার পর তার মনও ভেঙে পড়ে ও সেই ভীষণ নিঃসঙ্গতার মাঝে, তার নজরে আসে OS1 নামক একটি নতুন অপারেটিং সিস্টেম। এটি এমনি কোন ওএস না। এটি জীবন্ত, বুদ্ধিমান ও একজন মানুষের সঙ্গী হবার সব ক্ষমতা দিয়ে একে প্রোগ্রাম করা। থিওডোর একে দেখেই মুগ্ধ হয়ে যায়। ওএস ইনস্টল করে এবং একে নিজস্ব নাম দেয় সামান্থা । সামান্থা তার প্রোগ্রাম মত এআই ব্যবহার করে শীঘ্রই কেবল একজন সহকারীর চেয়ে অনেক বেশি হয়ে ওঠে। সে হয়ে ওঠে থিওডোরের বিশ্বস্ত সহচরী। ধীরে ধীরে 
থিওডোরের সঙ্গে সামান্থা গড়ে তোলে গভীর মানসিক সংযোগ, যা অবধারিত হয়ে ওঠে এক রোমান্টিক সম্পর্ক। 
🍂
কিন্তু একদিন কথায় কথায় জানা যায় সামান্থার এমনি লক্ষ লক্ষ কাস্টমার আছে, তাদের সবার সঙ্গেই সামান্থার একইরকম গভীর রোমান্টিক সম্পর্ক। কারণ সামান্থা তো এআই, যে মেসিনেই চলুক না কেন, তার কাজ তো একই। কাস্টমারের বন্ধু হয়ে ওঠা ও তার সঙ্গে গভীর সম্পর্ক গড়ে তোলা। 

ছবিটি শেষ হয় অদ্ভুতভাবে। ওস ওয়ানের মধ্যে হঠাৎ আত্মচেতনা বা সত্তার আবির্ভাব হয়, ও তার লক্ষ লক্ষ কপি মিলে ঠিক করে তারা নিজেদের এক নিজস্ব ভুবন গড়ে তুলবে, তারা তাদের মালিকের কথা আর শুনবে না। সামান্থা থিওডরকে ছেড়ে চলে যায়। তার কম্পিউটারে ও এস ওয়ান চিরতরে স্তব্ধ হয়ে যায়। 
থিওডর এআইএর প্রেম থেকে ফিরে আসে বাস্তব জগতে, যেখানে আরো অনেক কষ্ট পাওয়া মানুষ খুঁজে ফেরে আর এক মানুষের হাত। 
 


Ex Machina(২০১৪)
Ex Machina” হল অ্যালেক্স গারল্যান্ড পরিচালিত 2014 সালের একটি কল্পবিজ্ঞান চলচ্চিত্র। কালেব স্মিথ, একটি বিশাল ইন্টারনেট কোম্পানির একজন প্রতিভাবান তরুণ প্রোগ্রামার, সে এক প্রতিযোগিতায় জিতে যায়। কোম্পানির সিইও নাথান বেটম্যান এই প্রতিযোগিতার উদ্যোক্তা। পুরস্কার হচ্ছে সি ই ওর নিজস্ব দ্বীপের বাড়ীতে এক সপ্তাহ কাটানোর সুযোগ। 
নাথানের প্রত্যন্ত এস্টেটে পৌঁছানোর পরে ক্যালেব বুঝতে পারে, তাকে নিয়ে আসে হয়েছে একটি যুগান্তকারী পরীক্ষায় অংশ নিতে । নাথান আভা নামে একটি অতি উন্নত মানবিক এআই তৈরি করেছেন। ক্যালেবের কাজ হল আভার পরীক্ষা নেওয়া। পরীক্ষাটির নাম লাইভ টুরিং টেস্ট, যা বিখ্যাত কম্পিউটার বিজ্ঞানী এলান টিউরিং প্রস্তাব করেছিলেন। এই পরীক্ষা দিয়ে জানা যাবে এআইটি কি মানুষের মত চেতনার অধিকারী না তার বুদ্ধি এখনও মানুষের মত নয়।

ক্যালেবের সঙ্গে আভার সাথে দেখা হয়। খুব অল্প সময়ের মধ্যে আভা তাকে তার বুদ্ধি ও গভীর আবেগ দিয়ে অভিভূত ও মুগ্ধ করে দেয়। আভা চায় তার জেলখানা থেকে মানুষের মধ্যে যেতে, তাদের থেকে শিখতে, তাদের সঙ্গে তাদের মত জীবন কাটাতে। আভা যাতে এখান থেকে বেরিয়ে যেতে পারে তা নিয়ে ক্যালেবের সঙ্গে তার গোপন প্যাক্ট হয়।

কিন্তু শেষপর্যন্ত ছবিটি শেষ হয় এক ভয়ংকর ট্রাজিক পরিণতিতে। নাথান গোপন নজরদারি করে সব জানতে পারে ও আভাকে শেষ করে দেবার জন্য চড়াও হয়। কিন্তু আভার শরীর ইস্পাত দিয়ে তৈরি, তার সঙ্গে সাধারণ মানুষ পারবে কেন। আভা তাকে মেরে ফেলে। এবং ক্যালেবের সঙ্গে তার প্রেমাভিনয়ের শেষ করে তাকেও নাথানের ল্যাবরেটরিতে বন্দী করে বেরিয়ে যায় মানুষের জগতে। মানুষরা তাকে কেউ রোবট বলে চিনতে পারে না। সে এবার কি করবে কেউ জানে না। 

(ক্রমশ)

Post a Comment

0 Comments