জ্বলদর্চি

ইস্কুল ফিস্কুল / পর্ব -২০/সৌমেন রায়


ইস্কুল ফিস্কুল 

 পর্ব -২০

সৌমেন রায়

চিত্র – অসিত কুমার সেনাপতি

 কাঠফাটা রোদ সেঁকে চামড়া (২)

(পূর্ব প্রকাশিতের পর)

ছেলেমেয়েদের কাছে আরেক সমস্যা প্রযুক্তি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নতুন প্রযুক্তি আসবে তাকে গ্রহণ করাই বুদ্ধিমানের কাজ।  তবে ব্যবহার করা শিখতে হয়। এইসব শিক্ষা স্কুল বা টিউশনে হয়না। ছাত্রছাত্রীরা দেখে দেখে শেখে। জন্ম ইস্তক বাবা-মা, শিক্ষক সহ  সবাইকে সে দেখে কেউই বইয়ের দিকে তাকিয়ে নেই, মোবাইলের দিকে তাকিয়ে আছে। স্বভাবতই সে দেখতে চায় ওর মধ্যে কি আছে। যন্ত্রটি আজকাল সব রকমের অভ্যাস পাল্টে দিচ্ছে। ভবিষ্যতে সমাজতত্ত্ববিদরা হয়ত কালকে (Time )দুই ভাগে ভাগ করবেন। প্রি মোবাইল আর পোস্ট মোবাইল। মোবাইল ভালো না  মন্দ  সে বিতর্ক সরিয়ে বলা যায় যে এখন মোবাইল ছাড়া চলবে না। কিন্তু বাচ্চাদের ব্যবহারের লিমিট থাকছে না। সেখানে এন্ডলেস কন্টেন্ট। খুব মনোযোগ দিতে হচ্ছে না। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই উত্তেজনা, আবার নতুন উত্তেজনা। মাথা ঘামানোর ব্যাপার নেই। এমন জিনিসের সমস্যা হচ্ছে এটা মনোযোগের লেভেলকে অনেক নিচে নামিয়ে দেয় । উপর থেকে দেখে মনে হবে খুব মনোযোগ সহকারে মোবাইল দেখছে ,আসলে ভেতরে ভেতরে সে আরো চঞ্চল হয়ে উঠছে।  মোবাইলের ব্যবহার কন্ট্রোল কিভাবে করবে সে শিক্ষা তার  নেই ।  সে শিক্ষা অবশ্য অভিভাবক এবং শিক্ষক কারোরই নেই। মাঝে মাঝে মনে হয় এই ‘উচ্ছল নেটধি তরঙ্গের’ মাঝে এরা  পড়ছে কি করে? মনোযোগের কথা বাদ দিলেও মোবাইলে কুশিক্ষায় আকৃষ্ট হচ্ছে সবাই। কিভাবে?  সবাই জানেন দুধ গোয়ালাকে বাড়ি পৌঁছে দিতে হয়।কিন্তু মদের দোকান জঙ্গলে হলেও ক্রেতা খুঁজে নেন।মোবাইলে মন্দের ( নিষিদ্ধের) চাহিদাটা স্বাভাবিকভাবেই বেশি। তা যত লুকানোই থাক ক্রেতা ঠিক খুঁজে নেয়। আবার দিকভ্রষ্টকারী মোবাইল গেম যে এক বিরাট ইন্ডাস্ট্রি তা শুধু নয় ভোট ব্যাংকও বটে। তাই ভোটের আগে প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং গেমারদের সঙ্গে দেখা করেন।এখন যে পাগলা দাশু গল্পের মতো চিনে পটকা ফাটানো ছেলে পাওয়া যায় না তার কারণ তারা আরও বৃহত্তর আনন্দে মগ্ন ,সেটা হচ্ছে মোবাইল। নেশাটা শুরু হয় ছোটবেলায়। যে কোন প্রাণী খিদে পেলে খাবে। এটা তার  বেসিক ইনস্টিংক্ট ।কিন্তু বাবা মায়েরা মোবাইল ধরিয়ে তাদের নিজেদের মনোমতো পুষ্টিকর খাদ্য গেলাবে। অনিবার্য ভাবে সে মোটা হবে।  আবার জিমে  গিয়ে পয়সা খরচ করে ঘাম ঝরাবে। সে যাই হোক মনোযোগী হয়ে উঠার পথে প্রথম বাধাটা সৃষ্টি করেন মা ,বাবা। ভাষাতত্ত্ববিদরা বলছেন মোবাইলের চলমান ছবি দেখে শিশুদের ভাষা বোঝা এবং প্রকাশ করার ক্ষমতার বিকাশ হতে বেশি সময় লাগছে।তারা আকার ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। উচ্চ মাধ্যমিক বিজ্ঞানের খাতা দেখেন এমন একজন শিক্ষক বলছেন এখন ছেলেরা তাত্ত্বিক প্রশ্নের  উত্তর গুছিয়ে লেখার থেকে প্রবলেম করতে ভালোবাসে । কিন্তু প্রবলেমেও প্রয়োজনীয় কথা লেখে না। যাহোক করে অংকটি কষে দেয়। কি জানি আবার হ সেই  চিত্রলিপির যুগে ফিরে যাব কিনা!

 মেয়েরা এখন ছেলেদের তুলনায় সমস্ত বিষয়ে এগিয়ে। উপস্থিতি, পড়াশোনা, খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সমস্ত দিকে। এই চিত্র শুধু দু একটা স্কুলের নয়। প্রায় সব স্কুলেরই একই চিত্র। এটা  আপাত দৃষ্টিতে  মনে হয় কন্যাশ্রী প্রকল্পের সফলতা । কিন্তু বাতায়ন দিয়ে সামান্য উকি দিলেই আসল ব্যাপারটি মালুম হবে । নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলেরা কম উপস্থিত কেন? কম সংখ্যায় স্কুলে নাম লেখাচ্ছে কেন? ছেলেদের মধ্যে ড্রপ আউটের সংখ্যা বেশি কেন? খোঁজ করলেই বোঝা যাবে এরা সব বিভিন্ন কাজ নিয়ে বাইরে চলে যাচ্ছে। কারণ এই বয়সেই ওর ওপর রোজগারের চাপ আছে। মেয়েদের উপর সেই চাপটা কম। তাই তারা থেকে যাচ্ছে পড়াশোনা মধ্যে। মেয়েদের ভালো করার আর একটা কারণ হচ্ছে মেয়েদের মোবাইলের অ্যাক্সেসটি একটু কম। ছেলেরা ঝগড়াঝাঁটি করে, অশান্তি করে একটা মোবাইল ঠিক জোগাড় করে নেয়। মেয়েরা সেটা পায় না । অগত্যা  পড়াশোনা করে।

  সমাজ কি করছে এই ব্যাপারে? সমাজের কাজ একটি পরিবেশ তৈরি করে দেওয়া। কিন্তু সমাজ তার থেকে হাত তুলে নিয়েছে। সামাজিক অনুশাসন বলে কিছু নেই।  কে কি করছে, কে বিপথে যাচ্ছে এ নিয়ে এখন আর সমাজের মাথাব্যথা নেই। সবার কাছে পরের ছেলে পরমানন্দ। অর্থনীতিবিদদের পরিসংখ্যান অন্য কথা বললেও সাদা চোখে দেখি  যেসব শ্রমজীবী পাড়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ   সেখানে অর্থনৈতিক উন্নতি হয়েছে। এখন এই উন্নতিটা তারা কিভাবে কাজে লাগাচ্ছে? আরো বেশি পুষ্টিকর খাদ্যশস্য কিনছে? জীবনের মান উন্নত করছে? পরিচ্ছন্ন শৌচালয় বানাচ্ছে? না,  হয় মোবাইল  কিনে ফেলছে , না হলে একটা দামি গাড়ি। রাস্তার ধারে অস্বাস্থ্যকর চাওমিন খাচ্ছে। দরিদ্র বাড়ির ছেলেটিও এখন পালিশ করা প্রায় পুষ্টিবিহীন সরু চালের ভাত খেতে চাইছে। সমাজে অনুষ্ঠানের সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে । তিন দিনের অনুষ্ঠান সাত দিন ধরে হচ্ছে। ধর্মীয় অনুষ্ঠান উল্লেখযোগ্য ভাবে বেড়েছে। গণদেবতায় দেবু ঘোষ মন্দির,মসজিদ না করে বিদ্যালয় করার কথা বলেছিলেন। কিন্তু আমরা সেখান থেকে খুব বেশি এগিয়ে আসতে পারিনি। সমাজে অহরহ বিবিধ রকমের আনন্দের আয়োজন হচ্ছে। সারারাত ধরে অশ্লীল নাচের অনুষ্ঠান হচ্ছে। যার স্থানীয় নাম ধামাকা। কোমলমতি ছাত্র ছাত্রীরা, বিশেষ করে ছাত্ররা দেখছে।তার পড়ায় মন বসবে? এইগুলো সংগঠিত করা, চাঁদা আদায় করা এক শ্রেণীর লোকের কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আশ্চর্য হব না যদি কোনদিন শুনি যে এটাই তাদের রোজগারের উৎস । আমাদের দেশে অনুষ্ঠানগুলিও নাকি অর্থনীতির অঙ্গ । সকলের উদ্দেশ্য ছাত্র এবং যুবকদের মাতিয়ে রাখা । ফলে সারা বছর ধরে চলে  মাইকাসুরের উৎপাত। পরীক্ষার দিন এরা মাইক আস্তে চালায় বা বন্ধ রাখে। অর্থাৎ মনে করে পরীক্ষার দিন পড়লেই পড়াশোনা হয়ে যাবে। পাড়া ঘরে আলোচনা হয় শুধুমাত্র রাজনীতি নিয়ে। সেখানে পড়াশোনার স্থান নেই; প্রকৃতির বিপন্নতা , সাহিত্য,সমাজ কোন কিছুর স্থান নেই। 

শুধু শিক্ষা দিলেই মানুষ শিক্ষিত হবে এ ধারণাটা একটা বড় ভুল। শিক্ষিত হওয়ার অন্যতম  শর্ত হচ্ছে কৃষ্টি বা সংস্কৃতি। সংস্কৃতি একটা বৃহৎ ব্যাপার। খুব ছোট এবং সহজ করে বললে বলতে হয় যে একটি সমাজ কিভাবে তার কাজের বাইরের অবসর সময়টি কাটাচ্ছে সেটাই তার সংস্কৃতির আভাস দেয়। আমরা অতীত বিলাসী। অতীত সংস্কৃতি নিয়ে বড়াই করি কিন্তু বর্তমানে সংস্কৃতিতে আমরা কোন দিকে  এগোচ্ছি  উপরের কটা উদাহরণ দেখলেই বোঝা যাবে।

আরেকটি সমস্যা প্রেম প্রেম ভাব। youtube, টিভি সিরিয়ালের দৌলতে প্রেম, প্রেমের কলা কৌশল, কূটনীতি সব এখন ছাত্র-ছাত্রীরা জানে। এই বয়সে একটু বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ হয়। কিন্তু সেটা নিয়ন্ত্রণ করতে হয়। খানিক শাসন থাকলে তবে নিয়ন্ত্রণ থাকে। শাসনের প্রশ্ন নেই। একজন অভিভাবক বলছেন সন্ধ্যা বেলা ক্লাস নাইনের ছেলে সেজেগুজে বের হচ্ছে। কোথায় যাবি? না পাশের পাড়ায় জলসা আছে, রাতে ফিরবে না। আগে একবারও জানানোর প্রয়োজন বোধ করেনি। বারণ করতে যাবেন? কোথায় চলে যাবে, বাড়ি ফিরবে না। কি করবো স্যার, অত্যন্ত নিরুপায় ! সব সময় ভয়ে থাকি।সমাজটাই পচে গেছে’। ছোট বয়স থেকেই তারা প্রেম সাগরে ভাসছে।পড়বে কখন! ক্লাস সিক্সেই প্রেম পত্রের আদান প্রদান হচ্ছে।

  কর্মহীনতা আর এক কারণ। কর্মহীনতা উৎসাহ কমিয়ে দিচ্ছে ছাত্রছাত্রীদের।  কষ্ট করে পড়ে ভালো চাকরি বাকরি কেউ পাচ্ছে এমন উদাহরণ খুবই কম। অথচ কেউ কেউ বছর চারেক ‘ সমাজসেবা ‘ করে  পেল্লায় বাড়ি, গাড়ি সবই করেছে এমন উদাহরণ আছে (আনন্দবাজার সমীক্ষা)। আপনি কিভাবে মোটিভেট করবেন?  এক প্যারা টিচার গিয়েছিলেন  ড্রপ আউট খুঁজতে।এক অভিভাবক বললেন ,’পড়ে কি হবে স্যার? ওই দেখুন সাইকেলে যাচ্ছে। দর্শন না  কিসে যেন ফাস্ট কেলাস ফাস্ট সাইকেলে চড়ে। সব সময় মোবাইল রিচার্জ করতে পয়সা থাকে না। আর মোর বড় বেটা গুজরাটে সোনার কাজ করে। এই তো বোনের বিয়ে লাগলো। ফেলাইটে যাওয়া আসা করল। বিয়ের টাকা দিল। এইটও তো পাস করেনি। তাইলে পড়াবো কেন ? একটু পড়ে নিলে বরং ওসব কাজ আর করতে চায়না।‘ কি উত্তর দেবেন?কোন উত্তর আছে সমাজের কাছে? এক স্কুলের সহ শিক্ষকের ঘরে সামান্য ইট সিমেন্টের কাজ ছিল। অল্প বয়সে পড়া ছেড়ে যাওয়া   এক প্রাক্তন ছাত্রকে ডেকেছেন কাজ করতে। সঙ্গে যে ছেলেটিকে এনেছে  সে ছেলেটি একটু লজ্জা পাচ্ছে দেখে ওনার সন্দেহ হল। জিজ্ঞেস করলেন কিরে তুই আমাদের স্কুলে পড়েছিস? বলল হ্যাঁ স্যার। তাহলে কি এখন এই কাজ করছিস ? না স্যার  ভূগোলে এমএ পাস করেছি। চাকরি-বাকরি তো কিছু হয়নি। আজাদ বলল ঘরে বসে থাকবি কেন চল আমার সঙ্গে। তাই চলে এলাম। কিভাবে বলবেন মন দিয়ে পড়  বাবা!কলেজগুলি স্টুডেন্টের অভাবে আশঙ্কায় ভুগছে।উঠে যাবে না তো! ছেলেমেয়েরা কলেজের ডিগ্রী নিয়ে কি করবে? ডিগ্রী ধোয়া জল খেলে পেট ভরবে?

     শিক্ষাক্ষেত্রে সীমাহীন দুর্নীতির খবর ব্যবস্থাটারই ভিত টলিয়ে দিয়েছে। সে দুর্নীতির কতটা সত্য কতটা মিথ্যা সেটা বিচার করছে আদালত। কিন্তু নিয়ামক সংস্থাও কিছুটা দুর্নীতি যে হয়েছে সেটা স্বীকার করে নিয়েছে। যতটাই সত্য হোক বা মিথ্যা হোক বিশ্বাসটাই মরে গেছে। কি হবে পড়ে, টাকা না থাকলে তো চাকরি হবে না এমন একটা ভাব। এমনিতেই সমাজ শিক্ষককে এখন আর শ্রদ্ধা করেনা। বরং সুযোগ পেলে অপমান করে। এখন আবার তার সঙ্গে মিশছে অবিশ্বাস। সবাই জানেন শ্রদ্ধা না থাকলে, বিশ্বাস না থাকলে গ্রহণের পথটি দুর্গম হয়ে ওঠে। বস্তুত দেশের চাকরির কোন ক্ষেত্রটি আর পবিত্র নেই । লোভের নির্লজ্জ হাত শিক্ষা থেকে স্বাস্থ্য, প্রশাসন সমস্ত নিয়োগকে কলুষিত করে দিয়েছে। নিট দুর্নীতি , ব্যাপম কেলেঙ্কারি  সেসবের ইঙ্গিত দেয়। কি করে বিশ্বাস উৎপাদন করবেন ছাত্র-ছাত্রীদের? কি করে দরিদ্র মেধাবী স্টুডেন্টটিকে বলবেন যে মন দিয়ে পড়াশোনা করাটাই তোমার অবস্থা পরিবর্তন চাবিকাঠি?

 দহনবেলায় ছাত্র-ছাত্রীদের চামড়া কাঠফাটা রোদ সেঁকছে। ভয়াবহ পরিস্থিতি তাদের অভিমুন্যের মত ঘিরে ধরেছে। ওরাই বা কি করবে? কিভাবে এর থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে? জানা নেই! 

🍂

Post a Comment

6 Comments

  1. ভাস্কর সেনOctober 24, 2024


    লেখাটিতে সৌমেন রায় সহজ ও সাবলীল ভঙ্গীমায় সমাজের একটা উঠতি ব্যাধির কথা তুলে ধরেছেন। তার জন্য লেখককে ধন্যবাদ।

    শিশুদের মোবাইলের অপব্যবহার থেকে বাইরে বার করে আনতে শুধু অভিভাবকদের দায়িত্ব থাকবে এটা ভাবা বোধহয় ঠিক নয়। সাথে সাথে স্কুলের তথা সমাজের এগিয়ে আসা সমানভাবে জরুরী। ঠিক কী পদক্ষেপ নিলে শিশুদের ওপর মোবাইলের প্রভাব কমে আসবে সেটা মিলিয়ন ডলার প্রশ্ন। আবার দুনিয়ার অগ্রগতির সাথে মোবাইল বা কম্পিউটার তথা আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার এড়িয়ে যাবার কথাও একেবারেই ভাবা যায় না। অভিভাবকের নজরদারিতে শিশুদের মোবাইল ব্যবহার করতে দেওয়া একটা পদক্ষেপ হতে পারে। তাও সময়ের পরিধি বেঁধে দিতে হবে। পরীক্ষামূলক আরো কিছু পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে।
    উপসংহারে লেখক এক অসহায়তার ছবি এঁকেছেন এই বলে যে, "ভয়াবহ পরিস্থিতি তাদের অভিমন্যুর মত ঘিরে ধরেছে। ওরাই বা কি করবে? কিভাবে এর থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে? জানা নেই।" হয়তো এটাই এ মুহুর্তের এক নির্মম সত্য ! তবু আশা করব, নিকট ভবিষ্যতে সমাজবিজ্ঞানী ও বুদ্ধিজীবীদের সমবেত উদ্যোগে এই সমস্যার সমাধান বার করে তার রূপায়ণ সম্ভব করার প্রচেষ্টা চালানো হবে।

    ReplyDelete
    Replies
    1. ধন্যবাদ নেবেন ভাস্কর বাবু। আপনি ও আপনার মত অনেক সমাজ সচেতন মানুষ লেখাগুলি পড়ছেন,ভাবছেন এটাই আশার আলো।অবশ্যই সবাই মিলে চেষ্টা করতে হবে।পরের পর্ব পরীক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে।পড়ার অনুরোধ রইল।

      Delete
  2. নির্মাল্য ঘোষOctober 24, 2024

    এই মোবাইল নামক চলমান যন্ত্রটি খাদ্য বস্ত্রের মতই একটি স্বাভাবিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। দ্রুত পরিবর্তনশীল সময়ে হয়ত এটিও রূপভেদে আরো বিস্ময়কর কোন যন্ত্রের পথকে আগামী কিছু বছরের মধ্যে প্রশস্ত করবে। তখন সেই ঢেউয়ে আরো অনেককিছু টালমাটাল হয়ে যাবে ভেবে আমরা আক্ষেপ করব। আসল বিষয়টা হল চেতনার ক্ষেত্রটিকে মজবুত করা, যেটির জন্য আসলে শিক্ষার আয়োজন। সেই কাজটি ঠিকভাবে বিদ্যালয়ের পরিমন্ডলে করা গেলে কি এল কি গেল তাই নিয়ে দুর্ভাবনা থাকে না। এটাও জানি শিক্ষা আনে চেতনার পথটি ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছে বলেই সকল পর্ব জুড়ে হাহাকার ফুটে উঠছে।

    ReplyDelete
    Replies
    1. শেষ দুটি পর্বে আশার আলো থাকবে।সব হারিয়ে যায়নি।তবে ব্যবস্থাটির এফিসিয়েন্সি বড্ড কম।

      Delete
  3. আমরা যন্ত্রের দাস হবো না যন্ত্র আমাদের দাস হবে? এ প্রশ্ন কেবল একালের নয়, চিরকালের। আমাদের ছাত্রাবস্থায় ঘরে ঘরে টেলিভিশন এলো। ঘরের ভেতরে বিনোদন, কেড়ে নিল আমাদের চেনা যাপনের ছন্দ। আর এখনতো মুঠোয় বন্দি দুনিয়া। এসে গেছে এ আই প্রযুক্তি। কার সঙ্গে লড়বো তখন? ঘুম ছুটে গেছে পৃথিবীর তাবড় তাবড় দেশের ! কাজের বাজার আরও আরও সংকুচিত হয়ে আসছে। আমাদের শিক্ষাপথ তার চেনা পরিচিতি হারাচ্ছে। আগামীর দিনগুলো খুব কঠিন। তবুও যুদ্ধ চলবে ফিরে ফিরে, অদম্য নিষ্ঠায়।

    ReplyDelete