জ্বলদর্চি

শিউলি/ভাস্করব্রত পতি

বাংলার ঘাস পাতা ফুল ফল, পর্ব -- ৪০
শিউলি/ভাস্করব্রত পতি


নাগরাজার এক অপরূপ সুন্দরী রাজকন্যা ছিল। তাঁর নাম ছিল পারিজাতিকা। সে একদিন সূর্যের প্রেমে পড়ে যায়। মনে মনে সূর্যকে খুব কামনা করতে থাকে। কিন্তু সূর্যকে পাওয়া হয়ে ওঠে না। আসলে সূর্য অন্য নারীর প্রেমে মুগ্ধ ছিলেন। তিনি পারিজাতিকাকে গ্রহণ করেননি। এরফলে মনের দুঃখে সে আত্মহত্যা করে। সেই পারিজাতিকার দেহের ভস্ম থেকে পারিজাতবৃক্ষ জন্ম নেয় বলে কথিত। আর এই কাহিনী অনুসারে পারিজাত তথা শিউলি হল ব্যর্থ প্রেমের প্রতীক। তাই সকালে সূর্য ওঠার সাথে সাথেই আর গাছে থাকেনা শিউলি ফুল। সূর্যের প্রতি অভিমানে ঝরে পড়ে মাটিতে। যা চোখের জলের মতো চকচক করে। বিরহী সন্ন্যাসিনী শিউলি নিজেকে আবদ্ধ রাখে শ্বেতশুভ্র রূপে এবং গৈরিক বসনে। আর তাঁর সুগন্ধ ছড়িয়ে পড়ে দিগ্বিদিকে। 
শিউলি গাছের পাতায় আটকে ঝরা শিউলি

সূর্যোদয় হওয়ার আগেই শিউলি আর ডালে থাকেনা। ঝরে পড়ে মাটির বুকে। যেন তাঁর মরণ ঘনিয়ে আসে দিনের আলোয় - 'যে কথা রয় প্রাণের ভিতর অগোচরে / গানে গানে নিয়েছিলে চুরি করে / সময় যে তার হল গত / নিশিশেষের তারার মতো / শেষ করে দাও শিউলিফুলের মরণ সাথে'। কবিগুরুর মতো কাজী নজরুল ইসলামও শরতে হারানো তাঁর প্রিয়াকে অনুভব করে লিখেছেন, 'শিউলি ফুলের মালা দোলে শারদ রাতের বুকে ঐ / এমন রাতে একলা জাগি সাথে জাগার সাথি কই...'।
শিউলি গাছ

যতদিন পারিজাতিকা সূর্যকে ভালোবাসতো, ততদিন তাঁর রূপ যৌবন প্রেম সূর্য লক্ষ্য করেনি। মর্যাদা দেয়নি। তাই মৃত্যুর পরেও শিউলির সৌন্দর্য পরিলক্ষিত হয়না গাছে থাকা অবস্থায়। মাটিতে ঝরে পড়ার পর মৃত শিউলির রূপ নজরে পড়ে সকলের। আর চরম অভিমানি  এই শিউলিই একমাত্র ফুল, যে কিনা মাটিতে ঝরে পড়ে গেলেও সেখান থেকে কুড়িয়ে হিন্দু দেবদেবীর পূজোর উদ্দেশ্যে নিবেদন করা হয়। ঝরা শিউলি কি হারানো প্রিয়ার কথা বলে? তাই বুঝি টুটে যাওয়া সম্পর্কের আঁচল টেনে ধরে উচ্চারিত হয় - 'আমার নয়ন ভুলানো এলে / আমি কি হেরিলাম হৃদয় মেলে / শিউলিতলার পাশে পাশে ঝরা ফুলের রাশে রাশে / শিশির ভেজা ঘাসে ঘাসে অরুণরাঙা চরণ ফেলে / নয়ন ভুলানো এলে'। 

আরেকটি কাহিনীর সন্ধান মেলে শিউলি নিয়ে। হিন্দু পুরান অনুসারে সমুদ্র মন্থনের সময় মিলেছিল স্বর্গীয় ফুল পারিজাত বা শিউলি। আর রুক্মিণী ও সত্যভামার বায়না রাখতে শ্রীকৃষ্ণ বাধ্য হয়ে স্বর্গ থেকে মর্ত্যে এনেছিলেন পারিজাত ফুল। কিন্তু এজন্য তিনি দেবরাজ ইন্দ্রের বাগান থেকে পারিজাতের ডাল চুরি করেন। সেই থেকে পৃথিবীর বুকে জেগে উঠলো স্বর্গীয় পারিজাত। শ্রীকৃষ্ণ এতে দুজনের মানভঞ্জন করতে পারলেন বটে। কিন্তু পুরো ঘটনা জানতে পেরে ইন্দ্র অভিশাপ দিলেন এই বলে যে, এই গাছের ফুল হবে, কিন্তু ফল হবে না। 

শিউলির প্রচলিত নাম Night Flowering Jasmine। এটি এখন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য ফুলের তকমাপ্রাপ্ত। এছাড়াও থাইল্যান্ডের কাঞ্চনাবুরি প্রদেশের প্রাদেশিক ফুল। এর বিজ্ঞানসম্মত নাম Nyctanthes arbor tristis Linn। এটি Oleaceae পরিবারের অন্তর্গত। ল্যাটিন শব্দ  Nyctanthes এর অর্থ 'সন্ধ্যায় ফোটা' এবং arbor tristis এর অর্থ হল 'বিষণ্ন গাছ'। যে ফুল সন্ধ্যায় ফোটে আর সকালে সূর্য ওঠার আগেই ঝরে পড়ে, সেই ফুলের মাঝে বিষণ্নভাবে দাঁড়িয়ে থাকে গাছটি। তাই হয়তো এরকম নামকরণ। 'শিউলি ফুল, শিউলি ফুল, কেমন ভুল, এমন ভুল / রাতের বায় কোন মায়ায়, আনিল হায় বনছায়ায়'। দিনের আলোতে শিউলি তাঁর উজ্জ্বলতা হারায়। তাই শিউলিকে বলা হয় "Tree of Sorrow" বা 'দুঃখের বৃক্ষ'। বেশ সুগন্ধি এই ফুলে থাকে পাঁচ থেকে সাতটি সাদা বৃতি এবং মাঝে লালচে কমলা টিউবের মতো বৃন্ত। কাহিনী অনুসারে এর ফল হয়না বললেও এর ফল কিন্তু হয়। সেগুলি চ্যাপ্টা এবং বাদামী হৃৎপিণ্ডাকার। এদের ব্যাস ২ সেন্টিমিটার করে। দুই ভাগে বিভক্ত ফলের প্রতিটি ভাগে থাকে একটি করে বীজ। 
ছোটদের খেলার সঙ্গী শিউলি

'এসেছে শরৎ হিমের পরশ লেগেছে হাওয়ার পরে / সকাল বেলায় ঘাসের আগায় শিশিরের রেখা ধরে। / আমলকী বন কাঁপে যেন তার / বুক করে দুরু দুরু / পেয়েছে খবর পাতা খসানোর / সময় হয়েছে শুরু। / শিউলির ডালে কুঁড়ি ভরে এলো / টগর ফুটিল মেলা / মালতীলতায় খোঁজ নিয়ে যায় / মৌমাছি দুই বেলা'। এভাবেই শরতের বর্ণনায় উঠে এসেছে শিউলির অনুষঙ্গ। শরৎ আর শিউলি যেন পিঠোপিঠি দুই সহোদর। শরৎ আসার খবর জানান দিয়ে যায় মাটির বুকে শিউলির বিছানা -- 'ঢাকিভায়ার হাতের কাঠি / তুলছে ঢাকের বোল! / শিউলি ফুলের গন্ধ মাখা / শারদ হিন্দোল'। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সেই কারণেই 'ঋণ শোধ'তে লিখেছেন, 'হৃদয়ে ছিলে জেগে, / দেখি আজ শরৎ মেঘে / কেমনে আজকে ভোরে / গেল গো গেল সরে / তোমার ঐ আঁচলখানি / শিশিরের ছোঁওয়া লেগে। / কী যে গান গাহিতে চাই, / বাণী মোর খুঁজে না পাই। / সে যে ঐ শিউলিদলে / ছড়াল কাননতলে, / সে যে ঐ ক্ষণিক ধারায় / উড়ে যায় বায়ুবেগে'। শরতের শিশিরভেজা প্রভাত এলেই শিউলির আবাহনকে এড়িয়ে যাওয়ার সাধ্যি কি আছে আমাদের? শারদীয়াকে শিউলি বিছানো পথে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন স্বয়ং কাজী নজরুল ইসলামও। তাঁর লেখায় -- 'এসো শারদ প্রাতের পথিক এসো শিউলি বিছানো পথে। / এসো ধুইয়া চরণ শিশিরে এসো অরুণ কিরণ রথে। / দলি, শাপলা শালুক শতদল এসো রাঙায়ে তোমার পদতল  / নীল লাবনি ঝরায়ে চলচল এসো অরণ্য পর্বতে'। কবি ত্রিপর্ণা পতির 'শরৎ এলো'তে মেলে শিউলির মিষ্টি হাসির বর্ণনা -- 'শিউলি টগর পদ্ম শালুক / হাসছে প্রাণের হাসি। / শরত এলো ঢাকের তালে / নিয়ে খুশির রাশি'। আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরে রবিকবির সুরে বলে, 'দেখো দেখো দেখো, শুকতারা আঁখি মেলি চায় / প্রভাতের কিনারায় / ডাক দিয়েছে রে শিউলি ফুলেরে / আয় আয় আয়'। অদ্ভুত দ্যোতনা তৈরি করে শরতের ফুল কাশ ও শিউলি -- 'আমরা বেঁধেছি কাশের গুচ্ছ, আমরা গেঁথেছি শেফালিমালা / নবীন ধানের মঞ্জরী দিয়ে সাজিয়ে এনেছি ডালা'। শরতের পরিচয় মেলে কাশফুল আর শিউলির যৌথ উপস্থিতিতে। 'মায়ের অপেক্ষায়' কবিতায় ত্রিপর্ণা পতি লিখেছেন, 'আকাশ জুড়ে মেঘের ভেলা / বাজলো ছুটির বাজনা। / শিশির ভেজা শিউলিফুলের / মিঠা হাসির খাজনা'। আবার তিনি 'আসছে শরৎ' কবিতায় লিখেছেন -- 'কালো মেঘের ঘোমটা থেকে বেরিয়ে এলো নীলাকাশ। / কাশের বনের আন্দোলনে ছুটছে মাঠে হিম বাতা। / খিলখিলিয়ে হাসছে ওঁরা শিউলি ফুলের গাছে। / শিশিরকনা আলপনা দেয় সবুজ ঘাসের মাঝে'। কবি চন্দ্রকান্ত দত্তর লেখায় পাই, 'আগমনীর সুর বেজে উঠেছে, / সাদা কাশফুল উড়ছে আকাশে / মনটা খোঁজে তোমার ছোঁয়া, / এই শরৎ এর আশ্বিন মাসে'। তেমনি ব্রততী ব্যানার্জীর লেখনিতে ফুটে ওঠে, 'ভোরের আকাশে শুনি আগমনীর গান / কাশ ফুলেরা করছে খেলা, উচ্ছ্বসিত প্রাণ! / শিউলি ফুলের মিষ্টি গন্ধে মনটা দুলে ওঠে / মা আসছে হেঁটে হেঁটে মোদের মেঠো মাঠে'।
শিউলি ফুল

এছাড়াও শিউলি পরিচিত হারসিঙ্গার, কোরাল জেসমিন, প্রজক্তা, রাগাপুস্পি, পারিজাত, পারিজাতা, শেফালিকা, পারিজাতাকা, খারাপাত্রাকা ইত্যাদি নামেও। একে বাংলায় বলে শিউলি, শেফালি, শেফালিকা। মারাঠিতে পারিজাথক, তামিলে পাভাঝা মাল্লি বা পাভালা মাল্লি, সংস্কৃতে হারসিঙ্গারাপুস্পক, রাজানিহাসা, বিজয়া, প্রহার্ষিনী, নালাকুমকুমাকা, অপরাজিতা, ভুথাকেশি, সুকলাঙ্গি, নিশিপুস্পিকা, প্রযক্তি, মালিকা, নিসাহাসা, সীতামাঞ্জারি, বাথারি, সুবাহা, প্রযক্তা, প্রভোলানালিকা, ওড়িয়াতে গঙ্গা শিউলি, হিন্দিতে হরসিঙ্গার বা হরশৃঙ্গার, পারিজাত, মনিপুরীতে সিঙ্গারেই, অসমিয়ায় শেওয়ালি বলে। 'কাজলা দিদি' কবিতায় যতীন্দ্রমোহন বাগচী লিখেছেন --
'ভুঁইচাপাতে ভরে গেছে শিউলি গাছের তল,
মাড়াস্ নে মা পুকুর থেকে আনবি যখন জল।
ডালিম গাছের ফাঁকে ফাঁকে 
বুলবুলিটি লুকিয়ে থাকে,
উড়িয়ে তুমি দিও না মা, ছিঁড়তে গিয়ে ফল,
দিদি এসে শুনবে যখন, বলবি কি মা বল'!

রাতের গভীর যবনিকা পতনের পর আলোয় সেজে ওঠে প্রকৃতি। আর কি ঐ তারাদলের মাঝে ঘোমটা পরে লুকিয়ে থাকা যায়? 'এবার অবগুণ্ঠন খোলো / গহন মেঘমায়ায় বিজন বনছায়ায় / তোমার আলসে অবলুণ্ঠন সারা হোলো / শিউলিসুরভি রাতে বিকশিত জ্যোৎস্নাতে / মৃদু মর্মরগানে তব মর্মের বাণী বোলো'। শিউলিসুরভি রাত পেরিয়ে ঊষার আলো গায়ে মেখে শরততপনে সিনান করে গাইতে ইচ্ছে করে 'শরত আলোর কমলবনে / বাহির হয়ে বিহার করে যে ছিল মোর মনে মনে / .... আকুল কেশের পরিমলে / শিউলিবনের উদাস বায়ু পড়ে থাকে তরুতলে'।

শিউলির ডালে যেন প্রেমের কবিতা লেখা হয় -  'ধরণীর আঁখি যে শিশিরে ভাসে / হৃদয়কুঞ্জবনে মুঞ্জরিল মধুর শেফালিকা'। সেই কবিতা কোনো নাম না জানা নিরাভরণ প্রেমিকার অথবা স্বপনের বেলাভূমিতে আলুলায়িত কোনো প্রেমিকের উদ্দেশ্যে নিবেদিত। অবশেষে প্রাণের উচ্ছ্বলতায় পরিশীলিত হয় সকালের আকাশ - 'আজি শরততপনে প্রভাতস্বপনে কী জানি পরাণ কী যে চায় / ওই শেফালির শাখে কী বলিয়া ডাকে বিহগ বিহগী কী যে গায় গো'। এখানেই শান্তি বিরাজ করে। চরম বিরহের জলধারায় স্নাত রবিকবি আপ্লুত হয়ে বলে ওঠেন, 'তোমার নাম জানি নে, সুর জানি / তুমি শরৎ প্রাতের আলোর বাণী / সারা বেলা শিউলিবনে আছি মগন আপন মনে, / কিসের ভুলে রেখে গেলে আমার বুকের ব্যথার বাঁশিখানি'।

শিউলি আসলে সকালের আলো নিয়ে আসে। বেঁচে থাকার অধিকার নিয়ে আসে। মনের প্রশান্তি নিয়ে আসে। মনপবনের আন্দোলনে কবির আবাহন - 'ওলো শেফালি , ওলো শেফালি, / আমার সবুজ ছায়ার প্রদোষে তুই জ্বালিস দীপালি'। আর শরতের সুরঝর্ণা স্নাত হয় গোবর নিকোনো শিউলিতলায়। হাজার সুরসঙ্গীতের রাগানুরাগ বর্ষিত হয় এভাবেই - 'শরতরাণীর বীণা বাজে কমলদলে / ললিত রাগের সুর ঝরে তাই শিউলিতলে'।

শিউলি ফোটার সময় ফুরোলেই শরতের বিদায়ঘণ্টা বেজে ওঠে। শীতের মৃদুমন্দ আলিঙ্গন তখন বলতে থাকে - 'শিউলি ফোটা ফুরলো যেই ফুরলো শীতের বনে / এলো যে / আমার শীতের বনে এলে যে শূন্যক্ষণে'। শীত এলেই শিউলির তখন মুখ লুকোনোর পালা। একটা অব্যক্ত যন্ত্রনায় মোচড় দিয়ে ওঠে শিউলির অন্তরাত্মা - 'শীতের বনে কোন সে কঠিন আসবে বলে / শিউলিগুলি ভয়ে মলিন বনের কোলে'।

ষষ্ঠ শতকে অমর সিংহ প্রণীত 'অমর কোষ' এ শিউলিকে 'বনৌষধি' বলে উল্লেখ করা হয়েছে। বাগানের শোভাবর্ধক বৃক্ষ হলেও শিউলির ভেষজগুণ অগাধ। শিউলি পাতার তিক্তরস বেশ অরুচিকর। কিন্তু দারুণ উপকারী। জ্বর এবং আমবাতের মহৌষধ এটি। আর মাথার খুশকি রোধে এর বীজের গুঁড়ো কাজে লাগে। কামোত্তেজনা সংযমের জন্য শিউলি পাতার রস খুব কার্যকরী। এছাড়াও দাহ রোগ, মেদ বৃদ্ধি, ক্রিমি নাশ, মুর্ছা যাওয়া, গলা বসে যাওয়া, কফ, পিত্তনাশ, সায়াটিকা বাত, বমিভাব রোধে শিউলির ব্যবহার অনস্বীকার্য। Crystalline nyctanthin, Amorphous glycoside, Piperment, Essential oil, Fatty alcohol, Sterol, Resin ইত্যাদি থাকে এর মধ্যে। 
'শিউলি মালা' হল কবি কাজী নজরুল ইসলামের একটি গল্পগ্রন্থ। এটি ১৯৩১ সালে প্রথম প্রকাশিত হয়। এতে মোট ৪টি গল্প আছে। সেগুলি হল -- 'পদ্মগোখরো, জিনের বাদ্‌শা, অগ্নিগিরি এবং 'শিউলি মালা'। গানেও এনেছেন শিউলিকে -- 'শিউলি তলায় ভোর বেলায় কুসুম কুড়ায় পল্লীবালা। / শেফালি পুলকে ঝ'রে পড়ে মুখে খোঁপাতে চিবুকে আবেশ উতলা। / ঘোমটা খুলিয়া তার পিঠে লুটায় শিথিল কবরী লুটিছে পায়'। এছাড়াও লিখেছেন -- 'শিউলি ফুলের মালা দোলে শারদ-রাতের বুকে ঐ / এমন রাতে একলা জাগি সাথে জাগার সাথি কই। / বকুল বনে এক্‌লা পাখি, আকুল হ’ল ডাকি’ ডাকি’ / আমার প্রাণ থাকি থাকি’ তেমনি কেঁদে ওঠে সই'। কবি কাজী নজরুল ইসলাম তাঁর কবিতায় লিখেছেন --
'আবার যেদিন শিউলি ফুলে ভরবে তোমার অঙ্গন,
তুলতে সে ফুল গাঁথতে মালা কাঁপবে তোমার কঙ্কণ 
কাঁদবে কুটির অঙ্গন!
শিউলি ঢাকা মোর সমাধি
প'ড়বে মনে, উঠবে কাঁদি!
বুকের মালা ক'রবে জ্বালা,
চোখের জলে সেদিন বালা
মুখের হাসি ঘুচবে -
বুঝবে সেদিন বুঝবে'!

Post a Comment

0 Comments