সুদেব কুমার ঘোষ
বিচার চাই ১
মৃত্যু এসে নাড়িয়ে দিল
আবাল - বৃদ্ধ - বনিতারে।
ধাক্কা দিয়ে টেনে তাদের
নামিয়ে আনে পথের ধারে।
স্কুল - কলেজের গেট বন্ধ
অফিস পাড়া ফাঁকা।
ব্যাপারীরাও ছুটে আসে
স্তব্ধ গাড়ীর চাকা।
সবার হাত মুষ্টিবদ্ধ
কঠোর মনোবল
ডাক্তারগন আগে চলে
পিছন ছাত্রদল।
মাও চলে শিশু চলে
শ্রমিক - কৃষক সাথে
অবসরে দিন কাটানো
বৃদ্ধরা যায় সাথে।
খেলা - ধূলা বন্ধ থাকে
গ্যালারি সব ফাঁকা
জার্সির রং ভুলে সবাই
পথে করে দেখা।
পতিতারা পণ করেছে
বন্ধ পূজার মাটি
পথেই তারা ভিড় করেছে
মনুষ্যত্বে খাঁটি।
রাত দখলে পথে নারী
ভয় - ডর হীন মনে।
কোথায় কত শক্তি আছে
দেখে নেবে ক্ষণে ক্ষণে।
পুরুষরাও পাশে দাঁড়ায়
সাহস যোগায় তাদের
ন্যায্য দাবী সবার মনে
কাঁপন যেন পথের।
সকল স্তরের মানুষ পথে
কণ্ঠে বিচার ধ্বনি।
আকাশ - বাতাস মুখরিত
বাজে একটাই বাণী।
অভয়া দিদি যেথায় থাকো
আত্মার চাই শান্তি।
বিচার আমরা করব আদায়
হবেনা কোনো ভ্রান্তি।
বিচার চাই ২
মা আসছেন বাপের ঘরে
ছেলে - মেয়ে সাথে।
আনন্দ নাই কারোর মনে
ঘুরছে সবাই পথে।
আর এক মায়ের কোল শূন্য
হাহাকারে কাঁদে
কোথায় আছে মেয়ে তার
পড়ল কার ফাঁদে ?
পুজোর সময় ঘরের মেয়ে
আসত মায়ের কাছে
আনন্দে মন ভাসত তার
সকলকে পেয়ে কাছে।
আজ সে কোথায় গেছে চলি
লুকায়ে কোথায় রহে।
খুঁজছি তারে আমরা সবাই
ধরার সকল গেহে।
যায়নি কোথাও সবার মনে
আছে আলো করে।
' বিচার চাই , শাস্তি চাই '
জানাই সবাই সোচ্চারে।
🍂
একদিন কম
পুজো এলো পুজো গেলো
আনন্দ নাই মনে ।
কোথায় যেন তাল কেটেছে
বাজছে বেসুর কানে।
সব বছরই চারদিনে মা
বিরাজ করেন ঘরে
এ বছরই তিনদিনে মা
ছেড়ে গেছেন দূরে।
ঢাকি গেছেন ঘরে ফিরে
বাজিয়ে কম একদিন
বামুন - পুরুত হিসাব মতো
করেছে পুজো তিনদিন।
রাতের বেলা অষ্টমী তাই
ভিড় নেইকো থানে।
পরক্ষনেই সন্ধি - পুজো
শুনছি তাই কানে।
কিছু পরেই নবমী তিথি
পঞ্জিকা তাই বলে।
পুরুত ঠাকুর অবিশ্রামে
বসেই থাকে অবিচলে।
এত দ্রুত তিথি লেখা
মাও হচ্ছে হাঁসফাঁস।
ভক্তরা সব ছুটছে সদাই
উটছে তাদের নাভিশ্বাস।
হিসাব মতো বিসর্জনে
বিদায় বাজনা বাজে।
সবার চোখ জলে ভরা
মন নেই কোনো কাজে।
কার্নিভালে কার্নিভালে
পথ হচ্ছে সমাগম।
নগরপাল হিমশিম খায়
ঘুরছে মাথা দমাদম।
আসছে বছর তিনদিন নয়
চারদিনই মা থেকো।
আমরা তোমার সন্তান সব
সুখে - শান্তিই রেখো।
বাজারে আগুন
জ্যোতি আলু তিরিশ টাকা
চন্দ্রমুখী চল্লিশ ,
সুযোগ বুঝে বেশীও হাঁকে
পুজোয় এটাই বকশিস।
আদা রসুন বলে মোদের
হবেই কিছু নিতে ,
যতই দাম বলিনা কেন---
মূল্য হবেই দিতে।
শেষের দিকে বুড়ো পটল
কম যায়না সেও
লম্বা ঝিঙে শির উঁচিয়ে
গরম দেখায় দামেও।
কুমড়ো হেসে কইছে কথা
তুচ্ছ কোরোনা মোরে
উচ্চ দামেই হিসাব করো
খাদ্য - গুণ বিচারে।
লাল টমেটোর কাছে যেতেই
গম্ভীর মুখ ঝাঁকায় ।
একশো থেকে একশো কুড়ি
মেজাজ নিয়ে হাঁকাই।
ফুলকপি তো লোকাল বলে
কতই লোকের কদর ।
সুযোগ বুঝে হাত বুলিয়ে
মানি ব্যাগে নজর।
উচ্ছে শুনি সুগার কমায়
গেলাম তাদের কাছে ---
দাম শুনে ভাই চমকে উঠি
চক্ষু চড়ক গাছে।
লেবুর মধ্যে আছে শুনি
ভিটামিন সি তে ভরা।
দশ টাকায় পাঁচটা ছিল
এখন পাচ্ছি এক জোড়া।
লক্ষ্মী পুজোয় কিনতে হবে
উপকরণের ফলমূল।
শ ' এর নিচে নাইকো কিছু
কান করে না ভুল।
দাম বাড়ছে সব জিনিসের
পকেট হচ্ছে ফাঁকা।
স্থির আয়ের মানুষ আমি
পড়ছি কলে জাঁকা।
0 Comments