জ্বলদর্চি

নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস /দোলনচাঁপা তেওয়ারী দে

নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস 
দোলনচাঁপা তেওয়ারী দে 

আজ ১১ ই এপ্রিল, "নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস"। আসুন এই দিনটি সম্পর্কে সবকিছুই বিস্তারিতভাবে জেনে নিই।

নিরাপদ মাতৃত্ব বলতে বোঝানো হয়, গর্ভাবস্থায়, প্রসবের সময় এবং পরবর্তী সময়ে মহিলাদের জন্য উপযুক্ত চিকিৎসা ও সেবা প্রদান। এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকে,প্রস্তুতি ও গর্ভকালীন যত্ন,গর্ভাবস্থায় মহিলাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা, পুষ্টি এবং অন্যান্য যত্ন।
প্রসবকালীন সেবা: নিরাপদ প্রসব এবং সময়মতো চিকিৎসা সেবা।
নিরাপদ মাতৃত্ব নিশ্চিত করার মাধ্যমে মহিলাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করা এবং শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা সম্ভব।

এই দিবসের মূল লক্ষ্য হল, মাতৃস্বাস্থ্যের উন্নতি, মাতৃমৃত্যু হ্রাস এবং গর্ভবতী মা ও শিশুদের সুস্থতার জন্য সচেতনতা বৃদ্ধি করা। 

এই দিনটির ইতিহাস সম্পর্কে বলা যায় যে,ভারতের হোয়াইট রিবন আ্যলায়েন্স ইন্ডিয়া (WRAI) নামক সংস্থার উদ্যোগে ২০০৩ সালে প্রথম ১১ এপ্রিল দিনটিকে জাতীয় নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এটি ভারতের জন্য একটি ঐতিহাসিক দিন, কারণ এটি ছিল, বিশ্বের প্রথম দেশ যেখানে সরকারিভাবে জাতীয় নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস ঘোষণা করা হয়।

🍂
ad

এটি ভারতের জাতীয় স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নতি, গর্ভকালীন যত্ন এবং প্রসবকালীন সেবার প্রতি সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য একটি পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হয়।

নিরাপদ মাতৃত্ব নিশ্চিত করতে পরিকল্পিত প্রসবপূর্ব যত্ন, জটিলতা প্রতিরোধ এবং জটিলতার প্রাথমিক ও কার্যকর চিকিৎসার উপর জোর দেওয়া হয়। 

২০০৩ সালে, ভারত সরকার ১৮০০টি সংস্থার একটি সংগঠন WRAI-এর প্রস্তাবে ১১ এপ্রিলকে জাতীয় নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। এই দিবসটি সচেতনতা বৃদ্ধি, পদক্ষেপ প্রচার এবং মাতৃত্বের উদযাপন করে মা, পরিবার এবং সম্প্রদায়ের জন্য একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যতের পথ তৈরি করে। 

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) ১৯৮৭ সালে 'নিরাপদ মাতৃত্ব উদ্যোগ প্রকল্প' শুরু করে, যা নিরাপদ এবং কার্যকর মা ও নবজাতকের যত্ন প্রচারের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী মা ও নবজাতকের মৃত্যুহার হ্রাস করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে। 
ভারতে পালিত হওয়ার কারণ,ভারত হল বিশ্বের প্রথম দেশ যেটি আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস ঘোষণা করেছে। 

জাতীয় নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস ভারতে একটি গুরুত্বপূর্ণ উদযাপন যার লক্ষ্য গর্ভাবস্থা, প্রসব এবং প্রসবোত্তর সময়কালে গর্ভবতী মা এবং তাদের শিশুদের নিরাপত্তা এবং সুস্থতা নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা। প্রতি বছর ১১ এপ্রিল এই দিবসটি পালন করা হয় এবং ২০০৩ সালে ভারত সরকার প্রথম মহাত্মা গান্ধীর স্ত্রী এবং ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন বিশিষ্ট নেত্রী কস্তুরবা গান্ধীর জন্মবার্ষিকীকে সম্মান জানাতে এটি মনোনীত করে। 

প্রতি বছর ১১ এপ্রিল ভারতে জাতীয় নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস পালিত হয় একটি নির্দিষ্ট প্রতিপাদ্য নিয়ে যার লক্ষ্য মাতৃস্বাস্থ্যের প্রচার, মাতৃমৃত্যু হ্রাস এবং গর্ভবতী মা এবং তাদের শিশুদের সুস্থতা উন্নত করা। জাতীয় নিরাপদ মাতৃত্ব দিবসের অতীতের কিছু প্রতিপাদ্যের মধ্যে রয়েছে:

জাতীয় নিরাপদ মাতৃত্ব দিবসের ২০২২সালের থিম ছিল,করোনাভাইরাসের মধ্যে ঘরে থাকুন, মা ও শিশুকে করোনাভাইরাস থেকে নিরাপদ রাখুন।
জাতীয় নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস ২০২১ এর থিম ছিল,"নিরাপদ থাকুন, সুস্থ থাকুন: আসুন মাতৃত্বকে নিরাপদ ও সুরক্ষিত করি"
জাতীয় নিরাপদ মাতৃত্ব দিবসের ২০২০ সালের থিম ছিল, মা ও শিশুদের জন্য মানসম্পন্ন ধাত্রী সেবাকে অগ্রাধিকার দেওয়া।
জাতীয় নিরাপদ মাতৃত্ব দিবসের ২০১৯সালের থিম ছিল, মায়েদের জন্য ধাত্রী।
এই থিমগুলি মাতৃস্বাস্থ্যের গুরুত্বের উপর জোর দেয় এবং মাতৃমৃত্যু হ্রাস, মানসম্পন্ন মাতৃ ও শিশু স্বাস্থ্যসেবা প্রাপ্তির সুযোগ উন্নত করা এবং নিরাপদ গর্ভাবস্থা ও প্রসব অনুশীলন সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে এমন উদ্যোগগুলিকে উৎসাহিত করে। থিমগুলি বৃহত্তর জবাবদিহিতা, উন্নত স্বাস্থ্যসেবা অবকাঠামো এবং মাতৃ ও শিশু স্বাস্থ্যে বিনিয়োগ বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তার উপরও জোর দেয় যাতে প্রতিটি মা এবং শিশু সুস্থ ও সমৃদ্ধ থাকার জন্য প্রয়োজনীয় যত্ন পেতে পারে তা নিশ্চিত করা যায়।

Post a Comment

2 Comments