দোলনচাঁপা তেওয়ারী দে
আজ ২৬শে জুন, বিশ্ব মাদক বিরোধী দিবস। এই দিবসটি কিভাবে পালন করা হয় এবং এর গুরুত্ব ও তাৎপর্যই বা কি, আসুন এই সব কিছুই আমরা বিস্তারিতভাবে জেনে নিই।
মাদক দ্রব্য একটি জীবনকে শেষ করে দিতে পারে। এই সচেতনতা ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্য নিয়ে পালিত হয় বিশ্ব মাদক বিরোধী দিবস।
ধূমপান হোক অথবা মদ্যপান, গাঁজা কিংবা ড্রাগ, এই সমস্ত মাদকদ্রব্যের নেশায় আসক্ত হয়ে জীবন শেষ হয়ে যাচ্ছে হাজার হাজার তরুণ তরুণীর। এই মাদকদ্রব্য যে জীবনের কতখানি ক্ষতি করে দেয়, সেই সচেতনতা সকলের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্য নিয়েই প্রতি বছর পালন করা হয়, বিশ্ব মাদক বিরোধী দিবস।
মাদক সেবনের ফলে ফুসফুসের ক্যানসার, স্ট্রোক, লিভার অথবা কিডনি খারাপ হয়ে যাওয়া, লিউকোমিয়া, অতিরিক্ত ওজন কমে যাওয়া, মুখের ক্যানসার হতে পারে। শারীরিক সমস্যা ছাড়াও অতিরিক্ত মাদক সেবন করলে বিষন্নতা, অনিদ্রা, অস্বস্তি, বিভ্রান্তি, অতিরিক্ত রাগ হওয়ার মতো মানসিক সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
বিশ্ব মাদক বিরোধী দিবসের ইতিহাস অনেকটা এইরকম..
মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার এবং অবৈধ পাচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার জন্যই শুরু হয়েছিল বিশ্ব মাদক বিরোধী দিবস। ২০০৭ সালে জাতিসংঘের ওয়ার্ল্ড ড্রাগ রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছিল, বিশ্বব্যাপী অবৈধ মাদক পাচার কর্মকাণ্ড চলছে রমরমিয়ে। কঠোর বিধি নিষেধ এবং মাদকের অপব্যবহারের বিরুদ্ধে সক্রিয় প্রচার চালানোর পরেও অবৈধ মাদক ব্যবসা অবাধে চলছে। মাদক ব্যবসার অবৈধ পাচারের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার উদ্দেশ্যেই শুরু হয়েছিল বিশ্ব মাদক বিরোধী দিবস পালন।
🍂
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ (UNGA) ৭ ডিসেম্বর ১৯৮৭ তারিখে সিদ্ধান্ত নেয় যে, প্রতি বছর ২৬ জুন আন্তর্জাতিক মাদকবিরোধী দিবস (মাদকদ্রব্য অপব্যবহার ও অবৈধ পাচার বিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস ) পালন করা হবে।
মাদকের অপব্যবহার এবং অবৈধ মাদক পাচারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের উপর বিশ্বব্যাপী মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করার জন্য জাতিসংঘ কর্তৃক ১৯৮৭ সালের ৭ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার এবং অবৈধ পাচার বিরোধী দিবস প্রতিষ্ঠা করা হয়,যা বিশ্ব মাদক বিরোধী দিবস নামে পরিচিত, এই বার্ষিক উদযাপনের লক্ষ্য এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি মোকাবিলায় সচেতনতা বৃদ্ধি এবং সহযোগিতা বৃদ্ধি করা।
প্রতি বছর ২৬শে জুন পালিত হয় বিশ্ব মাদক দিবস, মাদকের অপব্যবহারের ক্ষতিকর পরিণতি সম্পর্কে জনসাধারণকে শিক্ষিত করার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করে। এটি বিশ্বব্যাপী ব্যক্তিদের মাদকাসক্তি প্রতিরোধ এবং অবৈধ মাদক ব্যবসার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রচেষ্টায় অংশগ্রহণ করতে উৎসাহিত করে।
জাতিসংঘের ২০০৭ সালের বিশ্ব মাদক প্রতিবেদনে অবৈধ মাদক পাচারের মাধ্যমে বার্ষিক ৩০০ বিলিয়ন ডলারের রাজস্ব আয়ের কথা তুলে ধরা হয়েছে, যা মাদকের অপব্যবহার রোধে কঠোর আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা সত্ত্বেও চলমান চ্যালেঞ্জগুলিকে তুলে ধরে।এই চলমান বৈশ্বিক উদ্বেগের জন্য ক্রমাগত এবং সমন্বিত আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা প্রয়োজন।
মাদক বিরোধী দিবসের তাৎপর্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
বিশ্ব মাদক বিরোধী দিবস বিশ্বব্যাপী ব্যক্তি, পরিবার এবং সম্প্রদায়ের উপর মাদকের অপব্যবহার এবং অবৈধ পাচারের গভীর প্রভাব সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি কার্যকর মাদক প্রতিরোধ, চিকিৎসা এবং পুনর্বাসন পরিষেবাগুলিকে সমর্থন করার জন্য সরকার এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলির দায়িত্বের উপর জোর দেয়।
বর্ধিত সচেতনতা এবং বর্ধিত আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মাধ্যমে, মাদকাসক্তি মোকাবিলা এবং এর ভয়াবহ পরিণতি প্রতিরোধে অর্থপূর্ণ অগ্রগতি সাধিত হতে পারে।
0 Comments