একগুচ্ছ কবিতা
সুকান্ত মণ্ডল
অস্তিত্ব
রাত্রির মধ্যাহ্নে জেগে উঠছে আত্মার বিস্ময়
নির্বাক চাঁদের নিচে ভাসছে প্রাচীন আত্মচিত্র।
কার তপস্যা যেন জমে গেছে পাথরে!
যেখানে স্পর্শ মানে, জন্মান্তরের ঋণশোধ
একেকটি নিঃশ্বাসে পুড়ে যাচ্ছে ম্লান পুনর্জন্ম,
তবু নির্বিকার সেই অনন্ত দর্শক
জেনে গেছে, প্রতিটি অস্থি আসলেই একেকটি প্রশ্ন
ধূপছায়া
ধূপের ধোঁয়া গড়িয়ে যাচ্ছে মহাশূন্যে
যার প্রতিটি ঘূর্ণিপাকে পুরাণের শব্দ।
সময় যেখানে থেমে, বসে আছেন তিনি।
দেহহীন ঈশ্বরের শান্ত সমুদ্র
তার কপালের রেখায় জন্ম নিচ্ছে,
জন্মহীন বিষাদের তৃতীয় নয়ন
🍂
অবশিষ্ট
দেহের পরিত্যক্ত খোলস ছুঁয়ে জন্ম নেয় সভ্যতা।
কেউ কিছু বলে না। সময় শুধু পেছনে হাঁটে
তুমি শুয়ে আছো সেই শূন্য মণ্ডপে
যেখানে ফুল ঝরে পড়ে না, অথচ গন্ধ ঘুমায়।
আমিও এক নির্বিকার চোখ
তোমার ক্ষমার পায়ে ছুঁয়ে দেখি—
আর কিছুই তো রাখিনি, শুধু একটা নিঃশ্বাস বাকি।
দৃষ্টিজন্ম
শূন্যতার কাণ্ডে জন্ম নিচ্ছে অলৌকিক ফল।
সেই ফলের স্বাদ মনে রাখে নির্বাক ঈশ্বর
তুমি যে তাকিয়ে আছো, বলেই—
আমার জিভ থেকে ঝরে পড়ছে ক্ষমার ভাষ্য।
ভাঙা তৃষ্ণা নিয়ে আমি ফিরে যাই
দেবতাদের শীতল কোলাহলে
যেখানে মাটি নয়, শুধু ঋতু জমে থাকে।
প্রবাহ
তোমার স্থির নৈঃশব্দ্য যেন এক প্রাচীন নদী!
জলে ভেসে আসে পূর্বজের অস্ফুট আর্তনাদ।
আমি ঘুমিয়ে পড়ি সেই নদীর দৃষ্টিতে
যেখানে জন্ম বলে কিছু নেই
শুধু ধ্বনি, মাটি আর এক অলক্ষ্যে ফেরা।
আমার চোখের ঘোরে ঘুরে বেড়াচ্ছে
তোমারই স্পর্শে তৈরি সেই অপরূপ মৃত্যু...
1 Comments
একটি কবিতারও অর্থ এক লাইনও উদ্ধার করতে পারিনি ।
ReplyDelete