চিরকুটে লেখা কিছু পঙ্ক্তি
কমলিকা ভট্টাচার্য
সব কথা কবিতা হতে চায় না।
কিছু কথা চিরকুটেই ভালো থাকে—
ভাঁজ করা,
নামহীন,
কারও উদ্দেশে নয়,
তবু ভীষণ সত্য।
এই লেখাগুলো তেমনই কিছু পঙ্ক্তি—
অভিমান, না–পাওয়া, প্রশ্ন, আত্মকথন—
যেগুলো বড় হয়ে উঠতে চায়নি,
শুধু থেকে যেতে চেয়েছে
নিজের মতো করে।
অভিমানের আশ্রয়
অকারণ অভিমান আমার বড় সম্বল,
কারণ খোঁজা অনেক ল্যাঠা,
আর বোঝা আরও শক্ত।
আর বুঝলে,
এক নিমেষেই নিঃস্ব আমি।
না–পাওয়ার দূরত্ব
সব কিছু আছে,
তবু মনখারাপ।
তোমার না–পাওয়ার কাছে
আমি পৌঁছতে পারি না ভেবে।
বায়বীয় অস্তিত্ব
দৃশ্য বাস্তবে ব্যস্ত তুমি,
ছুঁয়ে যাওয়া কথোপকথন,
অনুভবের তরঙ্গ
পরম তাচ্ছিল্যে ছুঁড়ে ফেলে
আমার বায়বীয় উপস্থিতি।
দাহ্য জীবন
আগুন ছাড়াও পুড়ি,
জল ছাড়াও ডুবি—
দাহ্য ভারী জীবন।
🍂
শোনার মূল্য
যে কথা শুনতে মন চায়,
সে কথা শুনতে যে
অনেক কথা শুনতে হয়।
চাঁদের শর্ত
শুধু আলোকিত একটা দিক দেখেই
ভালোবাসতে পারবে?
অন্য দিকটাকে অগ্রাহ্য করে।
তবে,
আমিও চাঁদ হব, জানো!
আয়নার সঙ্গে কথোপকথন
আয়না যখন আমায় বলে
আমি সুন্দর, ভালোবাসি—
আমি তাকে বলি—
তাই তো,
সবাই তোমাকে ভালোবাসে।
ঈশ্বর – কবি
ঈশ্বর হলেন সেই কবি,
যার প্রতিটি সৃষ্টি
এক একটি দুর্বোধ্য কবিতা।
প্রতিটি পঙ্ক্তি দ্বন্দ্বময়,
আর শেষ পঙ্ক্তি
মৃত্যুর গোঁজামিল।
সময়ের বিরুদ্ধে লেখা
সময় নাকি সব ঠিক করে দেয়!
কী করে?
মস্তিষ্কের স্মৃতিকোষগুলিকে মেরে ফেলে,
নাকি নতুন কোষের জন্ম দিয়ে?
ভুলে যাওয়ার আগে
লেখে রেখে যাব আমার ভালোবাসা
কবিতায়—
সময়কে মিথ্যা করব আমি।
লোভ
জানি না কোন সুস্থতার লোভে
বারবার ছুটে যাই তোমার কাছে।
বন্ডে সই করে আমার একমাত্র অভিভাবক,
আমার অবুঝ মন।
চেনা – গণ্ডি
চেনা গণ্ডি আমাদের কক্ষপথ,
অচেনা ধূমকেতুকেও সেই পথেই ঘোরাতে চাই।
ঘূর্ণীয়মান পৃথিবীতে বসেও
দৃঢ়, স্থির ভেবে গর্বিত হই—
আকাশগঙ্গা হাসে!
মনগড়া আশ্রয়
তোমায় না পেলে ভাবি—
কোথায় খুঁজব?
তোমাকে পেলে ভাবি—
কোথায় রাখব?
এর চেয়ে ভালো,
তুমি থাকো আমার সৃষ্টিতে—
5 Comments
ছোট কবিতার অভিঘাত অনেক তীব্র। প্রতিটাতেই আমি এবং এক অন্য তুমির খোঁজ। ভালো লাগল।
ReplyDeleteThank you
Deleteচাঁদ ভাবে আমি প্রিয়, দীঘি ভাবে আমি, কবির মনের কথা, জানে অন্তর্যামী।
ReplyDeleteহি হি হি love....this
Deleteকবির প্রিয় সবাই।🙏
ReplyDelete