জ্বলদর্চি

একগুচ্ছ প্রেমের কবিতা/গৌতম বাড়ই

একগুচ্ছ প্রেমের কবিতা
গৌতম বাড়ই

প্রথম প্রেম

এক টুকরো বৃষ্টি এল
তুমি তখন নিবিড় আবির
তোমার পদ্মপাতায় চুমু
ময়ূর রঙীন পাখায়

প্রেম এল যে বারিশ রাতের ধারায়
কেন মুক্ত গোলাপ জলে
ছন্দ চেনে ছন্দ চেনে
এখন ভাবি অবাক!
আমি সত্যি মানুষ হলাম।


কিশোর বা টিনসময়ের হাস্নুহানা

দুরন্ত কথাকলি ডানা মেলতে
একটা হরিণ হরিণ চোখ
এবার তুই গোল্লাছুট
মিলিয়ে দেখিস পেরিয়ে তেপান্তর।

একটা ফুটনোট একটা ভাষার কড়ি-কোমল
সেই প্রথম কাব্যি পেলাম
বুকের খাঁচায় প্রথম শূন্যতা
অনেক আড়ি
তুই তো গিয়েছিলিস মামাবাড়ি?

হাস্নুহানা যখন তখন ফোটে
সেই হা করা দীর্ঘ রাত কাটে
ঠিক বলেছিস, গোল্লাছুটে রাতকাবারে
আমি কি করে পেরোব তেপান্তরে
টিনটিনে দিন কিশোর মধুমাসে
আমি অনন্ত চাইতেও পারি
ফুলকুসুমা ঐ মুখে
আমার শূন্যবুক ভরিয়ে দিল টিনসময়ে

আমি মজনু হলাম, রোমিও কিংবা 
শিল্পী ধীমান,সপ্তপদী কৃষ্ণেন্দু 
প্রেম দিওয়ানা এ শরীরে স্বপ্নার বাসু
তখনও বিষ দেয়নি একবিন্দু।

ফিরে ফিরে ঘুরে এসো চাকার মতন এক্ষুণি
আমার কিশোর বেলার প্রেম
তোমার জন্য আমি এখনো সাঁতরে যেতে পারি
কিন্তু তেপান্তর যে পেরিয়ে এলাম?
তেপান্তর যে পেরিয়ে এলাম?


বাঁক ফেরালো সৃষ্টিসুখের উল্লাসে

আগুন জ্বেলে ঝাঁপ দিয়েছি
ঐ একরত্তি জলে
চারদিকেই যে ছেয়ে আছে আমার মীনা বাজার
দহন জ্বালা ফল্গুনদী চারদিক ছারখার
বিষ এলো সেই বিষম দিনে
তরুণ চির তরুণ ভেতরে অন্তর্দাহ
নদী আমার বাঁক ফিরিয়ে জোয়ার জলে
সৃষ্টি যখন রূপকথায় 
অপরূপ দেখতে পেলাম
আমার মধ্যরাতের বিভীষিকায়
প্রেম চিরাগের শিখাগুলো দিব্যি জ্বেলে

জ্বালাস তবে পুড়িস কেন এত?
জুড়োস যখন শান্তিবনে
কোন ঈশ্বর খুঁজে বেড়াস?
মান্তাজ না খুব বিন্দাস

তুমি তখন হাতড়ে বেড়াও একটা হাত
যে হাতে সে প্রেম বিলোয়
যে হাতে সে সমস্ত দায়--

প্রেম চিরাগের শিখাগুলো দিব্যি জ্বেলে
আগুন জ্বেলে ঝাঁপ দিয়েছি 
ঐ একরত্তি জলে

বাঁক ফেরালো সৃষ্টি দিনের উল্লাসে।


এই কী আমাদের প্রেম চতুরাশ্রম

উদাসীন পাখি হয়ে উড়ে গেছে ঈগলে
বিন্দুর শৃঙ্খল ছেড়ে বৃত্তের বাইরে
মুখোমুখি বসে থাকে প্রেম আর অপ্রেম
কিছু জড়িবুঁটি আর পৃথিবীর শেষ চাঁদগুলো
আকাশের অন্ধকার রচনায় মগ্ন।

বুঁদবুঁদ রোদ ওঠে রোজ ঘনঘন ক্লান্তি দিনের
আগাছাও প্রাণ খুঁজে তড়বড়ে বেড়ে চলে
মধ্যমায় জড়ানো ঘ্রাণ আর
অনামিকায় লেগে আছে ছুঁয়ে আছে প্রেম
যত শীতবস্ত্র ঠেসে নৌকার আয়োজন
হিমায়িত ভালোবাসাগুলো জমায়েত করে আছে
ধূসরে অতি ধূসরে
আকাশ আলো খুঁজতেও পারে 
বাতাস তার সহজাত মোহক

খণ্ড চতুরাশ্রম থেকে দু-একটি আধুলি ধার করে
বসন্ত সমাগমের উদযাপন
জানি প্রতিটি বসন্ত যাপনের পরে
নৌকার হবে টুকরো টুকরো আয়োজন

ভালবাসা তুমি ভিড় করে এসো
প্রথম পূর্ণতায় যে অবাক--
এক মাধুরী বংশীবাদন সংগোপনে পেয়েছিলাম।


জ্বলদর্চি পেজ- এ লাইক দিন👇

Post a Comment

4 Comments

  1. This comment has been removed by a blog administrator.

    ReplyDelete
  2. This comment has been removed by a blog administrator.

    ReplyDelete
  3. This comment has been removed by a blog administrator.

    ReplyDelete