তিনটি কবিতা
মলয় সরকার
মনে পড়ে
আমার মনে পড়ে ঠাকুমার হাসি,
আমার মনে পড়ে বিনোদিনী দাসী,
আমার মনে পড়ে শেয়াল ডাকা মাঠ,
আমার মনে পড়ে দুয়ার খোলা নাট
মনে পড়ে ভাঙা বাক্স
ছেড়ে আসা ঘর,
খেলুড়েদের চোখের জল
যাত্রার আসর,
দীর্ঘপথের ক্লান্তি ভোলা ছাউনি এতটুক-
সবার চোখে প্রশ্ন কঠিন, কোথায় আছে সুখ।
মনে পড়ে শেয়ালদা আর
অন্ধ কানাগলি,
ধোঁয়া ওঠা উনান জুড়ে
বদ্ধ শহর তলি-
মনে পড়ে গরম গরম গন্ধ চালের ভাত,
মনে পড়ে ঝিলিক দেওয়া তারায় ভরা রাত,
মনে পড়ে ঝাঁপাইঝোরা জল ছলছল সই-
দিন কেটেছে রাত এসেছে,
ফিরে পেলাম কই?
মুখটি বুজে আজকে আমি নীরব হয়েই রই।
জ্বলদর্চি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে যুক্ত হোন। 👇
প্রাত্যহিক
প্রতিদিন হাজার পাপ করি,
হাজার বাকল খুলি শরীরের,
কত অভিশাপ সঞ্চয় করি জীবনের পথে পথে।
ঊর্ণনাভের জালের মত সুক্ষ্ম জালিকারা ঘিরে ধরে আপাদমস্তক।
চেনা শহরের থেকে বহুদূরে
চলে যেতে চাই মাঝে মাঝে,
রক্তিম সুর্যাস্তের নদীতে অবগাহনের ইচ্ছা দানা বাঁধে,
উড়ে যেতে চাই সাদা বলাকার পাখায় ভর করে-
তবু আবার,
সব ছুঁড়ে ফেলি ছিন্ন জামার মত।
ডুবে যাই প্রাত্যহিকের গ্লাসে-
অযোধ্যা পাহাড়ে
অযোধ্যা পাহাড়ের গায়ে রক্তিম সূর্যের ছোঁয়া লাগে,
আরক্ত হ্রদের জল,
আরক্ত মন,
সবুজ ধানের শিষের মত তোমার বসে থাকা নজরে আসে,
সে কি আমারই প্রতীক্ষায়?
আমি চুপ করে থাকি।
চারিদিকে পলাশের দল লাল আগুন ছোঁড়ে,
অগ্ন্যুৎপাতের মত আকাশ বাতাস লালে লাল,
ঘন সবুজ পাহাড়ি জঙ্গল লালের নেশায় মাতে,
তুমি যেন 'চড়িদা'র দেবীর মুখোশ পরে
বসে আছ
ঝরণার কিনারে। সতেজ ঝর্ণার জল ঠোঁটে,
চোখেও রয়েছে নাকি কে জানে।
আমার চোখে অযোধ্যা আর তুমি একাকার হয়ে
খোলা প্রকৃতির বুকে খেলা করে যায়।
গুঁড়ি মেরে আসা দুঃখেরা
নেমে যায় হামাগুড়ি দিয়ে পাহাড়ের ঢালে,
দূরে কোথাও নিশ্চয়ই ময়ুরেরা অকালনৃত্যে মেতেছে।
7 Comments
শেষেরটা বেশি ভালো লাগল।
ReplyDeleteধন্যবাদ
Deleteধন্যবাদ
Deleteভালো লাগলো দুই আর তিন। তিন নম্বর এ ঝর্ণা বানান দুভাবে হয়েছে।
ReplyDeleteবেশ ভালো লাগলো! নীর্মেদ পরিচ্ছন্ন কবিতা l
ReplyDeleteতিনটি কবিতাই খুব ভালো লাগল।
ReplyDeleteসকলকে অনেক ধন্যবাদ
ReplyDelete