কবি ও কথাসাহিত্যিক যশোধরা রায়চৌধুরী’র সাক্ষাৎকার নিয়েছেন গল্পকার মৌসুমী ঘোষ
“অবশ্যই কবিতার সঙ্গে আমার সম্পর্কটা অনেক বেশি দীর্ঘ, ভিতরের এবং আন্তরিক”
মৌসুমী ঘোষ: কবিতা, গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ, অনুবাদ, স্মৃতিকথামূলক লেখালেখি, কল্পবিজ্ঞান — এর মধ্যে আপনার প্রিয় ক্ষেত্র কোনটি?
যশোধরা রায়চৌধুরী: অবশ্যই কবিতার সঙ্গে আমার সম্পর্কটা অনেক বেশি দীর্ঘ, ভিতরের এবং আন্তরিক। কবিতা আমার এক্সপ্রেশনের শ্রেষ্ঠ মাধ্যম। তারপরে আসে গদ্য রচনার নানা ধারা। নিবন্ধ প্রবন্ধ বাদ দিলে এখন যে লেখালেখি করছি তারমধ্যে স্মৃতিচারণের ব্যাপারটা খুব বড়ো একটা রোল প্লে করছে। অনেকটা নিজেকে উজাড় করে দিতে পারছি স্মৃতিকথায়। পঞ্চাশ পেরোনোর পর মানুষ শিকড়ের টান বেশি করে অনুভব করে। আমার মা বলতেন, ‘এগুলো লিখবি…’ হয়ত নিজের স্মৃতি চারণ করে বলতেন। তখন আমি লিখতাম না। কিন্তু মায়ের মৃত্যুর দশ বছর পর মনে হল এগুলো লেখা দরকার। এইসব লেখার মধ্যেই এখন আমি আছি কারণ আমরা যারা ষাট-সত্তর দশকে জন্মেচ্ছি তারা খুব ট্রানজিশনের প্রজন্ম। আমরা প্রযুক্তিগত বিরাট বিরাট পরিবর্তন দেখেছি। তারজন্যই আমাদের প্রজন্মের স্মৃতিকথা লিখে রাখা দরকার। স্মৃতিকথাকে তাই আমি কবিতার পরেই রাখব। কল্পবিজ্ঞান বা স্পেকুলেটিভ ফিকশন লিখতে অন্য কারণে ভালো লাগে। কল্পবিজ্ঞানের মধ্যে একটা কল্পনার উড়াল ও একটা বিস্তার আছে। কল্পনাকে নিয়ে অনেক দূর যেতে পারার একটা চ্যালেঞ্জ আছে। পঞ্চাশের দশকে লেখা রে ব্র্যাডবেরির একটা গল্প অনুবাদ করতে গিয়ে মনে হয়েছে প্রতিটা জিনিষই যেন এখনকার অ্যালেক্সা বা অন্য কোন অ্যান্ড্রয়েড এর সাথে মিলে যাচ্ছে। একটা ‘কথা বলা বাড়ি’র গল্প, যে অনুজ্ঞা পালন করে…। ব্যাডবেরি এখানে ভবিষ্যৎ দ্রষ্টা।
মৌসুমী: ‘পণ্যসংহিতা’ থেকে ‘পীড়া সমূহ’ কবিতা যাপনের এই দীর্ঘ পথটিকে নির্মিতির দিক দিয়ে আপনি নিজে কতগুলি পর্যায়ে ভাঙবেন?
যশোধরা: অবশ্যই পর্যায়ে ভাঙা যায়। একটা ছিল পণ্য দুনিয়া নিয়ে আমার লেখার ফেজ। তখন নব্বই-এর দশকের মনমোহন সিং-এর উদারীকরণ নীতির ফলে একটা বিরাট পরিবর্তন দেখা দিল। সেইটাকে ধরে রাখার ইচ্ছে থেকে ঐ সময়ের লেখাগুলো লিখেছিলাম। সেটা ‘পণ্যসংহিতা’র পরে আবার এসেছে ‘ভার্চুয়ালের নবীন কিশোর’-এ। টেকনোলজির সঙ্গে মানুষের জীবন বা মননের যে সম্পর্ক এই ব্যাপারে আমার একটা ঝোঁক ছিল। সুতরাং এই নিয়ে একটি পর্ব আছে। আর একটা পর্ব যা নিয়ে সবাই লেখেও, সেটা হল প্রেমের কবিতা, যেটা ‘পিশাচিনী কাব্য’-এ আছে। ব্যক্তিগত জীবনে প্রেম আর ব্যক্তিগত জীবনে সন্তান ধারণের যে উপলব্ধি সেটা আছে ‘আবার প্রেম থেকে পড়ো’ আর ‘মেয়েদের প্রজাতন্ত্র’-তেও কিছুটা আছে। সেই পর্বটাকে আবার ফেমিনিস্ট পর্বও বলা যেতে পারে। এখন আমার যে ফেজটা চলছে, ‘পীড়াসমূহ’ এবং পীড়াসমূহের আগের তিন/চারটি বই-এ আছে। এই ফেজটা ‘ক্ষত’ নামে বই থেকে শুরু হয়েছে। এটা হল কিছুটা দার্শনিক পেজ। একসময় কবি জয়দেব বসু বলেছিলেন, যশোধরা প্রেমে পড়ল, যশোধরা বিয়ে করল, যশোধরা সন্তানের জন্ম দিল… সবই বোঝা যায় যশোধরার লেখা পড়লে। একসময় হয়ত বা, জীবনের নানা পর্ব দিয়ে এটা বোঝা যেত। এখন আর সেটা বোঝা যাবে না। এখন মাঝগঙ্গার মতো অবস্থায় আছি। এখনকার কবিতাগুলো অন্তর্যাত্রা। এই ফেজটা আমার খুব প্রিয়। ‘ক্ষত’, ‘জ্বর পরবর্তী’, ‘পীড়া সমূহ’ এবং এ বছর আরো কয়েকটি বই বেরোবে সবটাই এই ব্যাপারটা নিয়ে।
মৌসুমী: কবিতা নির্মিতির নিরীখে আপনি কি এখন আবার ‘পণ্যসংহিতা’র কবিতাগুলি অন্যভাবে লিখতে চাইবেন?
যশোধরা: একদমই না। আমি নিজেকে খুবই রেসপেক্ট করি। আমার মনে হয় যেকোন লেখকের নিজের প্রতি একটা রেসপেক্ট থাকা উচিত। একটা সময় ছিল যখন কাজের চাপে কম লিখতাম, তখন আমি আমার নিজের লেখা পড়ার সময়ে হয়ত বা, আগের যশোধরাকে ঈর্ষা করতাম। কেন ঈর্ষা, কারণ কম বয়সে বাইরের অভিজ্ঞতা কম থাকে কিন্তু ভিতরের যে তেজ থাকে তা বুড়ো বয়সে মরে যায়। আমি ঐ তেজটাকে খুব সম্মান করি।
এখন আর ঈর্ষা নেই। কারণ আমার এখনকার লেখা অন্য আরেক যশোধরা লেখে।
মৌসুমী: ছোটো থেকেই কি আপনি সাহিত্যিক হতে বা কবি হতে চাইতেন মনে মনে? আপনার প্রথম কবিতা প্রকাশ ও প্রথম কবিতার বই প্রকাশে আপনার ও আপনার মায়ের অনুভব শুনতে চাই, দিদি।
যশোধরা: বাঙালির সব ছেলেমেয়েই মনে মনে কবি হতে চায়। আমি ছোটোবেলায় পেন্টিং নিয়েই থাকতাম। ছবি আঁকতাম, স্কুল জীবনে। তারপর অনেক পরে বুটিক করব, জামাকাপড় ডিজাইন করব ইত্যাদি ভাবতাম। সেলাই করতে খুব ভালোবাসতাম। এইসব নিয়ে একটা ক্রিয়েটিভ আর্জ ছিল। পরে সেগুলো সব মিলেমিশে লেখাতেই এসে গেছে। এখন আমি বুঝি লেখাতেই আমার সবটা ঢালা উচিৎ ছিল এবং ঢেলেও ছিলাম।
ছোটবেলায় লালন পালন পেয়েছিলাম খুব। মা খুব যত্ন করে আমার লেখা তুলে রাখতেন। মা রবীন্দ্রনাথ পড়ে শোনাতেন। মনে আছে মা নদী কবিতাটা শোনাচ্ছেন, আমরা পাশে বসে শুনছি। এগুলোর একটা এফেক্ট আছে। স্কুল ম্যাগাজিনে প্রচুর লিখেছি। তখন জমা দেবার আগে মাকে দেখাতাম। ষোলো-আঠারো বছর বয়সে আমরা প্রত্যেকেই রেবেল হয়ে যাই, সেইসময় নব্বই দশকে আমার লেখালেখি দেখে মা বলেছিলেন, তুই খুব অশ্লীল লেখা লিখিস। তুই দুর্বোধ্য লেখা লিখিস। আবার সেই ফেজ পাল্টাল। ২০০১ আমার ‘আবার প্রথম থেকে পড়ো’ পড়ে মা বললেন, এবার তোর লেখা বোঝা যাচ্ছে। এই সময় আমার মেয়ের জন্ম নিয়ে কবিতাগুলো লিখেছি। তবে ঐ যে মা বলতেন, সেই কথা এখনো কানে ভাসে, আমাদের বাড়ির স্মৃতি কথা বা ছোটোবেলার যে গল্প তোকে বলেছি, তুই লিখিস। তারাপদ রায়ের লেখা পড়ে মা বলতেন, এইরকম লিখতে পারিস না? মামাদের গল্প, বাড়ির ছোটো ছোটো জিনিস নিয়ে গল্প … মহাশ্বেতা দেবী, লীলা মজুমদার এঁদের লেখা পড়েও মা বলতেন।
মৌসুমী: আপনার কবিতায় আপনার নিজস্ব শব্দ-সৃজন এ নিয়ে কিছু যদি বলেন।
যশোধরা: আমি যমক শব্দ বা দুটো শব্দ জুড়ে লিখতাম। জয় গোস্বামী তখন আমায় বলেছিলেন, উৎপল কুমার বসু এটা প্রচুর করেন। সুতরাং আপনি খেয়াল রাখবেন। নাহলে আপনার নিজস্ব স্টাইল না বলে অনেকে বলতে পারেন, উৎপল কুমার বসুর স্টাইল কপি করেছে। ভাষা ভাঙব, একদা এটা ছিল ব্রত। নিজের ভাষা সৃষ্টি করব।
এখন বুঝি আমার ভাষা চেতনার মূলে প্রচুর বাংলা বই আর পাশাপাশি সংস্কৃত আছে। তৎসম তদ্ভব আছে। আমি সংস্কৃত খুব মন দিয়ে পড়েছি। স্কুলে তো বটেই, বিএ ক্লাসেও আমার পাশ সাব্জেক্ট সংস্কৃত ছিল। আমার লেখার মধ্যে তাই সমাসবদ্ধ পদ তৈরি করার টেনডেন্সি আছে। এটাকে ভাষা ভাঙচুর বললেও এটা আসলে খুব পুরোনো ভাষার সঙ্গে খেলাও। যেমন – সিনেমাগমন, ব্যালকনিটিকিট, … এই টেনডেন্সিগুলো সংস্কৃত থেকে —সমাসবদ্ধ, সন্ধিবদ্ধ পদ থেকেই এসেছে। ‘পিশাচিনী কাব্য’-এ ছিল, বোকাষষ্ঠী, বোকালোক, বন্ধুলোক, শকুন্তলালোক…সবগুলিই কিন্তু জোড়া শব্দ। সমাসবদ্ধ। যদিও আমাদের প্রচুর নিন্দে হত নব্বই-এর দশকে। আমরা খুব ইংরাজী আর হিন্দী শব্দ ব্যবহার করি আমাদের লেখায়, সেটা অগ্রজ লেখকেরা বলতেন। রিংটোন বা ইন্টারেস্ট, বা হেলথড্রিংক, মিক্সি এসব শব্দ আমরা অনায়াসে ব্যবহার করছি এটাই সত্যিই। মুখের ভাষাকে কবিতার কাছে এনেছি। কিন্তু পাশাপাশি অমৃতব্যাখ্যান শব্দটিও আমি ব্যবহার করেছি, এই শব্দটি কিন্তু খুবই পুরোনো।
মৌসুমী: প্রতিটি ছোটো পত্রিকার সম্পাদকরাই এখন নিজেরা প্রকাশনার জগতে চলে আসছে এটার কতটা গুরুত্ব আজকের দিনে, যেখানে পাঠক সংখ্যা কমছে?
যশোধরা: এখন প্রিন্ট অন ডিমান্ডের যুগে বইমেলা শুরু হতেই লোকে বলতে শুরু করে আমার বই নিঃশেষিত। কিন্তু অত দ্রুত কারো বই নিঃশেষিত হতে পারে না। তারমানে প্রিন্ট করা হচ্ছে খুব কম। অনেক সময় কুড়ি কপি বিক্রি হলেই বলা হচ্ছে নিঃশেষিত। তবে এখন অন্য অনেক কিছু একদিক থেকে ভাল। সোশাল মিডিয়ার যুগে ছোটো ছোটো প্রকাশনা সংস্থা একটা টার্গেট গ্রুপ স্থির করে সেখান থেকেই তাদের পাঠক বৃত্ত খুঁজে নিয়ে বিক্রি করছে। অন্যদিক দিয়ে বলা যায়, অনেকে অনেক লেখকের বই খোঁজে কিন্তু পায় না। আগে দেজ থেকে বই বেরোত সেটা সকলে খুঁজে পেত। এখন খুঁজে নিতে হবে। কলেজস্ট্রীটে এত বেশি প্রকাশক। দেজ আনন্দ এতদিন যে ভূমিকাটা পালন করেছে সেই ভূমিকাটা এখন আশা করাই ভুল।
মৌসুমী: সরকারি অধিকারিক হওয়ার জন্য আপনার এই যাযাবর জীবন আপনার সাহিত্য জীবনকে কীভাবে প্রভাবিত করেছে?
যশোধরা: প্রথমদিকে এটাকে আমি বাধা হিসেবেই দেখতাম। তখন সন্তানও ছোটো ছিল। ডিজিটাল জগৎ আসার আগে অবধি এটা চাপের ছিল। কিন্তু লেখাতো কখনই থামেনি। ২০১০-এর পর আমি আসাম গেলাম, তারপর ওড়িশা। এখন দিল্লীতে। এখন ভার্চুয়াল জগৎ। তাই মনেই হয়নি কোনো ডিফারেন্স হয়েছে বলে। বরং একটা সুবিধা হয়েছে সেটা হচ্ছে, কলকাতায় থাকলে একের পর এক অনুষ্ঠানে মুখ দেখানোর যে চাপ থাকে সেটা অন্য জায়গায় নেই। লেখার জন্য সময় পাই।
মৌসুমী: ছোটোদের জন্য লেখা আপনার প্রথম বই কোনটি?
যশোধরা: প্রথম বইটা বার করেছিল বন্ধু ক্লাবের প্রকাশনা থেকে আমার দুই বান্ধবী। নাম ‘বুঞ্চি ল্যান্ড’। এটা গল্পের বই। তারপরে আরো দুটো ছোটোদের গল্পের বই বেরিয়েছে। ‘ঘাঘাবুয়া’ – ক্যাফে ‘টেবল থেকে। ‘জোড়াগাছতলার ভূত’ – মিসিসিপির মেঘ পাবলিকেশান থেকে।
মৌসুমী: নারীবাদী কোন কোন লেখক আপনার বিশ্বাসকে প্রভাবিত করেছে? নারীবাদের নাম করে এখন যে সমস্ত সাহিত্য চর্চা হচ্ছে তা কি আদৌ নারীবাদের পরবর্তী ঢেউ আসাকে তরান্বিত করতে পারবে বলে আপনার মনে হয়?
যশোধরা: আমার প্রথম নারীবাদী লেখাপড়া কিন্তু খুব আগে। আশির দশকের মাঝামাঝি। ব্রিটিশ কিছু কাগজপত্র দিয়েছিল আমার মাসতুতো বোন। বোন তখন লন্ডনে থাকতো। ও তখন টিনেজার, ওদের যেগুলো উদ্বুদ্ধ করছিল ও সেগুলো জেরক্স করে আমাকে দিত। ফরাসী নারীবাদের সিমোন দি বোভোয়া আমি অনেক পরে পড়েছি। কলকাতায় নব্বিই সাল থেকে নারীবাদ খায় না মাথায় রাখে এটা বোঝা শুরু হল। তসলিমার আনন্দ পুরস্কার পাওয়া, মল্লিকা সেনগুপ্তের প্রচুর নারীবাদী বইগুলো। যেখানে বিদেশে সত্তরের দশকের আগে নারীবাদী আন্দোলন শুরু হয়ে গেছে। এখানে সেই ঢেউ আসতে আসতে আশি-নব্বই হয়ে গেছে। সত্তরের প্রথম ও দ্বিতীয় তরঙ্গের নারীবাদকে এখন অনেকেই অস্বীকার করেন। এখন তো তৃতীয় চতুর্থ ঢেউ এসে গেছে।
মৌসুমী: আপনার লেখা নিয়ে জয় গোস্বামীর লেখা – এই ব্যাপারে আপনার অনুভব শুনতে চাই।
যশোধরা: জয়দা যে গোঁসাই বাগান লিখতেন তাতে উনি একাধিকবার করেছিলেন। দুটো/তিনটে করে কবিতা একটা ইস্যুতে আলোচনা করেছিলেন, পরে আরো কিছু কবিতা নিয়ে কথা জুড়ে বইটা করেছিলেন। উনি ওঁর থেকে জুনিয়ার একজন কবিকে নিয়ে আলোচনা করলেন, আমার কাছে এটা পরম সৌভাগ্যের। ওনার এনালিসিস পড়ার পর অনেকে বইগুলো কিনেছে।
মৌসুমী: আপনি কি আপনার অনুজ কবিদের নিয়ে এই মূল্যায়ণ করেন?
যশোধরা: আমার ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা হয়। আছে। এটা গর্ব করে বলার কিছু নয়। যখন অর্কুট শুরু হল, ‘অর্কুটের নতুন কবিতা’ বলে একটি প্রবন্ধ লিখেছিলাম, তাতে নতুন এক ঝাঁক কবির খবর পেয়েছিলেন অনেকে। তার আগে ধারণা ছিল নতুনরা আর কেউ বাংলা কবিতা লিখছেই না। কিন্তু দেখলাম যে ডিজিটাল যুগের ছেলে মেয়েরাও কবিতা লেখে। তারা এখন প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে। চিনে নেবার এই কাজটা বড়োদের তো করতেই হবে।
সংগ্রহ করতে পারেন 👇
0 Comments