Posts

শাবক/ অমিতরূপ চক্রবর্তী

Image
শাবক   অমিতরূপ চক্রবর্তী বাবি সরকার নামটা শুনে মনে হতে পারে এটা কোনো পুরুষমানুষের নাম কিন্তু আদতে তিনি তীব্রভাবে মেয়েমানুষ মানে মহিলা। পাঁচ ফুটের কাছাকাছি উচ্চতায়। উড়ন্ত পাখির ডানার মতো ভুরু। চোখে কালো ফাইবার ফ্রেমের ক্যাটস আই শেপের চশমা। শাড়ি পরলেও তলপেট একটু ভেসে থাকে। আমরা শুরু করব তখন থেকে, যখন বাবি সরকারের বয়েস ৩৫/৩৬ এবং সেপ্টেম্বর অক্টোবরের দিকে তিনি তাঁর স্বামীর সঙ্গে দার্জিলিঙে ঘুরতে যাচ্ছেন।  বাবি সরকার বাংলাদেশের মেয়ে। এক বিচিত্র সূত্রে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের শিলিগুড়িতে বসবাসকারী এক পাত্রের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। বাবি সরকার তখন কলেজে পড়ছেন। ভাল গান গাইতে পারতেন। এমনভাবে তাঁকে বিয়ের জন্য প্রস্তুত হতে হল যেন একদিন ঘুম ভেঙে উঠে দেখলেন সারা আকাশে আলতার শিশি ভেঙে আলতা গড়িয়ে গিয়েছে। রক্তের মতো আলতায় ভিজে জ্যাবজ্যাব করছে যতদূর দেখা যায়, ততদূর পর্যন্ত আকাশ। পার্থিবে তখন গোধুলি। কৌপিন পরা রাক্ষসচেরিরা হাতে চন্দনের বাটি আর শলাকা নিয়ে এসে ভ্যারভেরে গলায় বলছে ‘ওঠ বাবি, আজ তোর বিয়ে!’ বাবি সরকার শিলিগুড়ি থেকে টয়ট্রেনে তাঁর স্বামীর সঙ্গে দার্জিলিঙে যাচ্ছেন। ট্রেন যেদিকে যাচ্ছে,

জলঢাকা দৃশ্যের অতীত ও আগামী /অলক জানা

Image
জলঢাকা দৃশ্যের অতীত ও আগামী  অলক জানা  ফলের দোকানে বসন্তের প্রথম  লাথা লাথা ঝুলানো  আঙুর দেখলে নাকে এসে লাগে  মাধ্যমিক পরীক্ষার গন্ধ,  আর লাইনে দাঁড়ানো  দশলক্ষ চোদ্দোষোলো  পশ্চিমবঙ্গের প্রত্যাশার ছবি---- দানাপানি সংগ্রহের উচ্চরক্তচাপে  প্রায় ভুলে যাওয়ার জোগাড়  এমন একটি সপ্তাহ হয়তো কখনো  উপভোগ করেছে জীবন!  শরীর থেকে সময়  বেরিয়ে যাওয়ার দৃশ্য  এখনো মজুত রেখেছে ঘরের আয়না,  তার মুখোমুখি কিছু প্রহর পুড়িয়ে  জানা যায়, ঠোকাঠুকির সমস্ত বলিরেখা  কেবল ধারণ করে আছে  আমার শরীর, কচিকাল এখনো  মাটিভাত খেলে আয়নার বিপরীত।  আয়নার অন্তরে যা অধরা  সবই এখন তার পশ্চাতে ঘুমঘুম,  যা অতীত নামে সুপরিচিত,  অথবা মন যাদুঘর।  এসব নিয়ে লেখালেখি  নেহাৎ পানসে, নাকি  সরল মোয়া থেকে ক্রমশ সরে যাচ্ছে  আমাদের অদেখা ভবিতব্য,  গন্তব্যহীন মেঘ-বাতাসের উসখুস  ব্যগ্র বিপত্তি, অথবা পড়িমরি  উচ্চনাদ মোদো চালিত  দুর্ভাগ্যের ললাটে চলমান  গাড়িও হতে পারে।  কবিতা, সেই ধ্যান  যে আদৌ সহ্য করে না  রক্তলোলুপ বেহায়া অশৌচ উচ্চারণ।  আগের চেয়ে জল  দৌড়ে উঠে আসছে উঁচুতে সামলানোর চেষ্টা হরণ করে  আমার আকণ্ঠের নিম্নাংশ  এখন সবই জলঢাকা, দৃ

নাস্তিকের ধর্মাধর্ম - পর্ব-৪১/সন্দীপ কাঞ্জিলাল

Image
নাস্তিকের ধর্মাধর্ম - পর্ব-৪১ সন্দীপ কাঞ্জিলাল ভারতবর্ষ ও ধর্ম হিন্দু ধর্মের বিভিন্ন নীতিশাস্ত্রে আইনের অনুশাসনের গুরুত্ব অনস্বীকার্য। আইনকে অন্য অর্থে 'সত্য' বলে বর্ণনা করা হত। ভারতবর্ষের ইতিহাসে দ্রাবিড় সভ্যতার উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে। খ্রিঃপূঃ প্রথম শতাব্দে মানুষের নৈতিকতা পালনে ও সমাজ গঠনের ক্ষেত্রে Tiru-K Kurul এর উপদেশাবলী মানুষের সার্বিক চরিত্র গঠনে ও আধ্যাত্মিক বিকাশে স্মরণীয় হয়ে আছে। বিখ্যাত এই কবির উপদেশগুলির কয়েকটি আজও অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক।    ১। স্বজন প্রিয়জনদের থেকে যে মানুষ দূরে রাখে নিজেকে সেই মানুষকে দূরেই রাখতে হবে। কারণ তার স্বজন সমাজ কোনো বন্ধন না থাকার ফলে সে যে কোনো অন্যায় কাজ করে নিস্তার পেয়ে যায়। তাকে কোনোভাবেই বিশ্বাস করা যায় না।  ২। পরীক্ষা না করে কাউকে কোনো কাজে নিযুক্ত করা উচিত নয়। কিন্তু পরীক্ষা করে নিযুক্ত করার পর, তাকে কখনও অবিশ্বাস করা উচিত নয়।  ৩। রাজার কর্তব্য বহিঃশত্রুর হাত থেকে রাজ্য ও প্রজাদের রক্ষা করা এবং প্রজাদের সার্বিক কল্যাণের দিকগুলির দিকে সব সময় নজর রাখা।  ৪। যারা আইনের অনুশাসন মানবে না বা আইনের পথে চলবে না তাদে

গুচ্ছ কবিতা /গৌতম বাড়ই

Image
গুচ্ছ কবিতা   গৌতম বাড়ই  কবিতা-১  রোহিণী ( পাহাড় ও নদী)  একদিন অন্তিম সন্ধ্যাছায়ায়  এই যে বন জঙ্গল পাহাড় খরস্রোতা ধ্বনি  যাকে আমি অক্ষরে অক্ষরে চিনি বলে  একটু বা বেশি বড়াই করি  তবে কখনো বড়াই করা ভালো কিন্তু যে বড় পাথরের খন্ড রোহিণী নদীটির পাড়ে আমায় ডেকে বলে- বসবি নে বোস, দু- দন্ড পুরানো কথা ঝালিয়ে নি একদম প্রস্তর যুগের বন্ধু নয় সে  চাঁদের বৌ-টি নদী ছেড়ে উঠে আসে পাড়ে মতলব আছে  আমরা এই এখানে পাহাড়ের বিষম ঝিঁঝিঁ অন্ধকারে  বসব এক গোপন অভিসারে  সব পাহাড়ী কীট অণুকীট সরীসৃপ নিশ্চুপ হবে চাঁদ কেন ম্লান হয়ে আসে তখন ছায়া পড়ে নদীটির জলে  নিজেই কেন একলা হাসিস? বৌকে অমন গোপন করে? এই দেখ আমার বুকের কাছে বসে আছে  কলকল করে তোর রোহিণী নদীটি  একরকম গোপন অভিসারের নির্জীব অন্ধকারে সব পাহাড়ের নিজস্ব গন্ধ আছে  সব নদীরও তাই  রোহিণী বলে- আমি আর আড়াল নেব না  শুক্লাতিথির পঞ্চদশ দিনে  ঋণগ্রস্ত অমূল্য আলোক জোছনায় আমি চাঁদের পিঠে পাশ ঘুরিয়ে খেউড় গাইবো দেখে নেবে দেখে নেবে দেখে নেবে --- প্রিয়  রোহিণীর চুমোয় আমি এখনও চন্দনচর্চিত হই  এখনও রোহিণী পাহাড় থেকে নদীটির দিকে  আরও তাকাই 

পলিটিক‍্যাল প্রেশার /সন্দীপ দত্ত

Image
চিত্র- মণিদীপা দাস  পলিটিক‍্যাল প্রেশার সন্দীপ দত্ত চাল আর কুমড়ো দুই ভাই। রক্তের ভাই নয়,তুতো। বহরমপুরের গুঞ্জাপিসীর ডুলোকাকার মেজোছেলে হল চাল। চালের মৃগীমামার  লছেলে কুমড়ো। যেবছর গাঁয়ে শ'য়ে শ'য়ে মেয়েমানুষগুলোর মাথায় ঝেঁপে উকুন হল খুব,নাটাবাবার বুজরুকি ব‍্যবসা ফুলে ঢোল হল,পৌষের শীতে ন‍্যাড়া এক নিমগাছের তলায় দুখিনী জন্ম দিয়েছিল চালকে। সেই হিসেবে চালের বয়স এখন সাঁইত্রিশ বছর সাত মাস এগারো দিন তিন ঘন্টা ছাপান্ন সেকেন্ড। ওর আসল নাম দুধেশ্বর। ছোটবেলায় খুব নাকি ফর্সা ছিল,তাই অমন নাম। দুখিনী মা ডাকত দুধ। বড় হওয়ার পর ও নাম ধরে ডাকতে ভীষণ লজ্জা পেত সবার। তাই দুধেশ্বর বা দুধ হয়ে গেল শুধুই চাল। চাল হয়েই সে কলকাতায় আসে আট বছর আগে। এখন চালের চেহারা পাতলা হয়ে গেছে। মাথার চুলেও আর আগের মতো ঘনত্ব নেই। এখন তার অম্বল হয় খুব। জল খেলেও বায়ু ছাড়ে।       সে তুলনায় কুমড়ো দিব‍্যি আছে। একেবারেই দিব‍্যি আছে বলাটা ভুল। চেহারাটা গোলগাল হলে হবে কি,সুগার আছে বেশ। আর আছে হাঁটুর ব‍্যথা। ওর বয়স চালের থেকে এক ঘন্টা বিয়াল্লিশ সেকেন্ড কম। ওর গায়ের রঙ গোলাপি ফর্সা। এখন রোদে পুড়ে যদিও পাল্টে গেছে একটু। ওর

'উত্তরণ’ : সুখের সংসার, সাইবার ক্রাইম আর সামান্য সাসপেন্স! /রাকেশ সিংহ দেব

Image
' উত্তরণ’ : সুখের সংসার, সাইবার ক্রাইম আর সামান্য সাসপেন্স! রাকেশ সিংহ দেব পরিচালক - জয়দীপ মুখোপাধ্যায় অভিনয়  - মধুমিতা সরকার, রাজদীপ গুপ্ত, শাওন চক্রবর্তী, স্বস্তিকা দত্ত।  মুক্তি - হইচই ওটিটি প্ল্যাটফর্ম। ২৬ জানুয়ারি ২০২২ রেটিং - 3/5 ছোট্ট এক জনপদে হঠাৎ ওঠে কেচ্ছার কালবৈশাখী। এক গৃহবধূর দশ সেকেন্ডের একটি আপত্তিকর ভিডিও ফুটেজ ভাইরাল হয়। ছাপোষা গৃহবধূটি কি সাইবার ক্রাইমের শিকার? না তার সম্মতিতেই ঘটেছে এসব? কিভাবে সে বেরিয়ে আসবে এই বিপদ থেকে? এই গল্প নিয়েই শারদীয় দেশ, ১৪২৩ এ প্রকাশিত হয় লেখক সুকান্ত গঙ্গোপাধ্যায়ের আলোচিত উপন্যাস  ‘বটতলা’। এবার মূল উপন্যাস থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে তৈরি হয়েছে বাংলা OTT প্ল্যাটফর্ম হইচই এর নতুন ওয়েব সিরিজ ‘উত্তরণ’। ২৬ জানুয়ারি মুক্তি পেয়েছে সাতটি এপিসোডের এই ওয়েব সিরিজ।  কিন্তু এই কেমন হল এই সিরিজ? প্রথমেই বলে রাখি, যারা বটতলা উপন্যাসটি পড়েছেন, তারা এই সিরিজের চিত্রনাট্য, ট্রিটমেন্ট দেখলে বেশ দুঃখই পাবেন। আর যারা পড়েননি, তাদের একটাই পরামর্শ, সিরিজের প্রথম পাঁচটি এপিসোডে মনযোগ দেওয়ার মত নয়। মন দিয়ে দেখুন শেষ দুটো এপিসোড। কারণ, এই দুই

যেতে যেতে পথে-৮/ রোশেনারা খান

Image
যেতে যেতে পথে  রোশেনারা খান পর্ব ৮ বরাবরই আমি কল্পনাপ্রবণ। ছোট পিসির(শিউলি)বড় মেয়ের নাম ছিল পরি। আমি ভেবে বসলাম পরির নিশ্চয় ডানা আছে! আমাকে তো তাহলে দেখতে যেতে হয়। বাবার কাছে গিয়ে আবদার করলাম, বাবা আমি পরি দেখতে যাব। পিসিদের বাড়ি খুব একটা আসাযাওয়া ছিল না। তখন যোগাযোগ ব্যবস্থ্যার এত উন্নতি হয়নি। তো একদিন সকালে বাবা আমাকে সাইকেলে সামনে বসিয়ে(সামনে বাচ্চাদের বসার সীট লাগান ছিল) ছোটপিসির বাড়ি রওনা দিলেন। কিন্তু ওখানে গিয়ে জানলাম, পরি কলকাতা গেছে। মনটা খারাপ হয়ে গেল। দুপুরে খেয়ে বাড়ি ফিরে এলাম। তবে ছোটপিসির বাড়িতে কাচের আলমারি ভরা খেলনা দেখে আশ্চর্য হয়েছিলাম। ছোট ছোট চেয়ার-টেবিল, আলমারি, সারি সারি ছোট ছোট জুতো, দম দেওয়া ভালুক, আরও অনেককিছু। পরে জেনেছিলাম ওগুলো পিসেমশায়ের শখের জিনিস।       মেজ কাকিমার সঙ্গে ছোটপিসের সম্পর্কটা ছিল খুব গোলমেলে। পিসেমশাই ছিলেন মেজকাকিমার আপন মামা। তাই উনি কাকিমাকে নাম ধরে দোলেনা বলে ডাকতেন। এই সম্পর্ক পুরনো। তারপরে মেজকাকার সঙ্গে কাকিমার বিয়ে হয়। মেজকাকিমা আর সেজকাকিমা ছোটথেকেই বন্ধু ছিলেন। দুজন দুজনকে ‘বন্ধু’ বলে সম্বোধন করতে শুনেছি। স্বভাবতই আমাদে

বৃত্ত /পলাশ বন্দ্যোপাধ্যায়

Image
বৃত্ত পলাশ বন্দ্যোপাধ্যায় (১) অক্টোবরের বারো তারিখ আজ। গত তিনদিন থেকে প্রায় গোটা পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে শুরু হয়েছে প্রবল নিম্নচাপ ও লাগাতার ঝড়বৃষ্টির দাপট। এখন রাত আটটা। এর মধ্যে ভি.আই.পি রোড শুনশান। ইতিউতি রাস্তার উপর হুমড়ি খেয়ে আছে দু একটা ভেঙে পড়া গাছ, ছিঁড়ে যাওয়া ইলেকট্রিকের তার। এর মধ্যে অশীতিপর রাধামধব মুখার্জি একটা সাদা হাফশার্ট আর হাঁটু পর্যন্ত হাফপ্যান্ট পরে বিড়বিড় করে  বকতে বকতে হলদিরামের মুখ থেকে তেঘড়িয়ার দিকে  হেঁটে চলেছেন। রাধামাধব স্থানীয় একটি হাইস্কুলের অবসরপ্রাপ্ত জাঁদরেল হেডমাস্টার। গত চার বছর ধরে অ্যালজাইমার রোগে আক্রান্ত। প্রথমে সাম্প্রতিক স্মৃতিগুলো লোপ পেতে শুরু করেছিল। এখন আর স্থান, কাল,  পাত্র, এমন কি নিজের নাম, বাড়ির ঠিকানা এসব কিছুই মনে থাকে না। এ রোগটাতে এমনই হয়। এমনিতে এ সময় ভি.আই.পি রোড জেগে থাকে। এখন প্রকৃতির অবসাদের কারণে সে ও তার পাশের নগরজীবন গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। শুধু দু-একটা রাস্তার কুকুর পাশের নোংরা গাড়িবারান্দাগুলোয় গুটিসুটি মেরে হাই তুলছে। কতকগুলো মশা  অকারণে জ্বালাতন করছে তাদের। কুকুরের রক্ত তাদের বোধহয় রোচে না। জ্বালাতন করাটা তাদের অভ্যাস। রাধাম

দুটি কবিতা /বিশ্বরূপ বন্দ্যোপাধ্যায়

Image
দুটি কবিতা       বিশ্বরূপ বন্দ্যোপাধ্যায়         শ্রী রাধার আবেদন বাজিয়ে বাঁশরি, ডাকো গিরিধারী যাওয়ার সময় কই? শাশুড়ি আমার কাজ দিয়ে গেছে,বাছতে বলেছে খই, অল্প তা নয় বড়ো দুই ধামা, ফুরসত নাই, নাই কোনো থামা নইলে বাঁশির জবাব দেবো না সে প্রেয়সী  আমি নই, এতো টুকু যদি কাজটা থামাই শুরু হবে হৈ চৈ ।। একটু ধৈর্য্য ধরো ওগো শ্যাম একটু সময় দাও, অনাকুল হয়ে প্রতীক্ষা করো, শ্রীমতীকে যদি চাও, কাজ গুলো সব একে একে সারি, তার পরে নিয়ে কাঁখেতে গাগরি, ধীর পায়ে যাবো যমুনা পুলিনে খানিক সেথা দাঁড়াও, দাঁড়াতেই হবে তোমায় সেখানে যদি প্রেয়সীকে চাও।। জেনো তুমি শ্যাম তোমার জন্য আমিতো আড়ালে কাঁদি, সাজ গোজ কিছু করতে পারিনা, কেশপাশ নাহি বাঁধি, শাশুড়ি ননদ সন্দেহ করে, বারে বারে শুধু প্রশ্নই করে, "কি হয়েছে তোর বল হতভাগী ?"তা শুনে কেবলই কাঁদি, ওরা নিশ্চয় মনে ভেবে নেয় আমি এক অপরাধী।। আমার যে স্বামী তোমার মাতুল তাহলে  কে হই আমি ? সকলেই জানে, তুমিও তা জানো আমি তো তোমার মামি, মামির সঙ্গে এ হেন প্রণয়, ঘোর পাপ এটা সকলেই কয়, লোক লাজ ভয়ে প্রাণ আকুল হয় লজ্জায় মরি আমি । তবুও প্রেমকে কাটাতে পারি না এ যে তোমার অনুগামী

ভারতীয় সংগীতের ক্রমবিকাশ-৮/দেবী প্রসাদ ত্রিপাঠী

Image
ভারতীয় সংগীতের ক্রমবিকাশ দেবী প্রসাদ ত্রিপাঠী পর্ব – ৮ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বাঈজীদের বিভিন্ন প্রকার নৃত্যগীতের অনুষ্ঠান হতো। যেমন, গজারা জাতীয় অনুষ্ঠানে দুজন বাঈজী দাঁড়িয়ে দ্বৈত সঙ্গীত পরিবেশন করতেন, ঝুমুর নামক অনুষ্ঠানে চার-পাঁচজন বাঈজী একত্রে নৃত্য ও গীত পরিবেশনা করতেন আবার দঙ্গল অনুষ্ঠানে কবিগানের তরজার মত দুজন বাঈজীর মধ্যে সাঙ্গীতিক বিতর্ক বা বাকযুদ্ধ হত। এইসব অনুষ্ঠানগুলি বিশেষ বিশেষ সময়ে সারা দিনরাত্রি ব্যাপী হত। হোলির সময়ে হত 'বারোয়া মঙ্গল' উৎসব, বর্ষাকালে হত 'কাজরী' উৎসব। এইভাবে প্রতিটি উৎসবের সঙ্গে সঙ্গীত ও নৃত্যের এইরূপ ঘনিষ্ঠতা থেকে প্রতীয়মান যে ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীত ও নৃত্য প্রকৃতি থেকে আহরিত। ঋতু পরিবর্তন, দিনের বিভিন্ন সময় এবং মানুষের জীবনের আনন্দ ও যন্ত্রণা থেকে অনুপ্রাণিত। এইসব অনুষ্ঠানে সংগীত ও নৃত্যের এই মেলবন্ধন যেন শরীরী আকর্ষণের এক নতুন সজ্ঞা তৈরী করল। ধনী ব্যক্তি ও বাবু শ্রেণীর পাশাপাশি পাশ্চাত্যবাসীদের এইসব অনুষ্ঠান গুলির প্রতি আকর্ষণের কারণ হিসেবে বিলাসিতা, রোমান্স এবং যৌনতার আমেজ নিয়ে ব্রিটিশ ভারতের এক অবসরপ্রাপ্ত সেনাধ্যক

শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ উপমামৃত /পর্ব-১৮/সুদর্শন নন্দী

Image
শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ উপমামৃত      পর্ব-১৮ সুদর্শন নন্দী  ১৮৮৪, ১৯শে অক্টোবর। ত্রৈলোক্য ঠাকুরকে জিজ্ঞাসা করলেন— সংসারে জ্ঞানলাভ হয়েছে তার লক্ষণ কি? ঠাকুর বললেন — হরিনামে ধারা আর পুলক। তাঁর মধুর নাম শুনেই শরীর রোমাঞ্চ হবে আর চক্ষু দিয়ে ধারা বেয়ে পড়বে। এবার নারকেলের উপমা দিয়ে বোঝালেন ত্রৈলোক্যকে। বললেন-যতক্ষণ বিষয়াসক্তি থাকে, কামিনী-কাঞ্চনে ভালবাসা থাকে, ততক্ষণ দেহবুদ্ধি যায় না। বিষয়াসক্তি যত কমে ততই আত্মজ্ঞানের দিকে চলে যেতে পারা যায়, আর দেহবুদ্ধি কমে। বিষয়াসক্তি একেবারে চলে গেলে আত্মজ্ঞান হয়, তখন আত্মা আলাদা আর দেহ আলাদা বোধ হয়। নারিকেলের জল না শুকুলে দা দিয়ে কেটে শাঁস আলাদা, মালা আলাদা করা কঠিন হয়। জল যদি শুকিয়ে যায়, তাহলে নড় নড় করে, শাঁস আলাদা হয়ে যায়। একে বলে খড়ো নারিকেল।  ঈশ্বরলাভ হলে লক্ষণ এই যে, সে ব্যক্তি খড়ো-নারিকেলের মতো হয়ে যায় — দেহাত্মবুদ্ধি চলে যায়। দেহের সুখ-দুঃখে তার সুখ-দুঃখ বোধ হয় না। সে ব্যক্তি দেহের সুখ চায় না। জীবন্মুক্ত হয়ে বেড়ায়। একটি উপমা দিয়ে তিনি সহজভাবে বুঝিয়ে দিলেন বিষয়টি। ভক্তেরাও খুশি সব।  এবার দেশলাই কাঠির উপমা দিয়ে বললেন-যখন দেখবে ঈশ্বরের নাম করতেই

Arun's creation, "The poetry of Supreme Consciousness" and spirituality/ Dipali Maity

Image
Arun's creation, "The poetry of Supreme Consciousness" and spirituality.                Dipali Maity Ph.D scholar in English in YBN University, Ranchi, Jharkhand.                                              Part-5 Theme of Ambiguity in supreme consciousness and spirituality: Theme of ambiguity is the healthy limitless meanings in supreme consciousness and spirituality. The word ambiguity is like "the more the way", (Jata mata tata patha) of Ramakrisna Paramhansha Dev. Poet Arun bestows a way like z to reach the supreme consciousness of mind by overcoming the steps of conscious mind. So there we cannot find any particular way to reach the word 'brahma' of the z-generation poetry. The consisting letters like w+o+m+a+n= woman which gives us limitless feeling of heart. In the same way the colours blue, red, white, yellow etc give us the ambiguous multi-coloured feelings of heart. According to poet Arun, multiple meaning of the words is 'brah

তুর্কী নাচন /পর্ব-৮/ মলয় সরকার

Image
তুর্কী নাচন   পর্ব-৮ (পূর্ব প্রকাশিতের পর) মলয় সরকার                                               এবার যে একটা আশ্চর্য লাগার মত জিনিস দেখলাম। তা হল গণশৌচাগার। একটি ঘরে  চার দেওয়াল জুড়ে রয়েছে , একটি উঁচু বেদীর উপরে ,বর্তমান যুগের ভারতীয় শৌচালয়ের ল্যাটরিনের মত নিটোল কাটা মলত্যাগের জায়গা।এরকম অনেক রয়েছে পরপর। অর্থাৎ একসঙ্গে অনেক মানুষ বসে মলত্যাগ করতে পারত। স্ত্রী -পুরুষের এ ব্যাপারে কোন ভেদাভেদ ছিল কি জানি না , গাইড দিদিও বলতে পারলেন না। এরকম আমি অন্যত্রও (রোমে) দেখেছি।সেগুলির নীচে বোধ হয় ঢাকা ড্রেন ছিল মানব বর্জ্য বাইরে যাওয়ার জন্য। সামনেও একটি টানা ড্রেন রয়েছে জল নিকাশের জন্য। তবে বোধ হয় এ ব্যাপারে তাদের পাশাপাশি বসার লজ্জা ছিল না। অন্ততঃ এটা দেখে তা বোঝা গেল না।                                                             এ ছাড়া দেখলাম, একটি আর্চ করা কারুকার্য খচিত  গেট , যেটি একটি মন্দিরের। এটি রোমান সম্রাট হার্দিয়ানের প্রতি শ্রদ্ধায় করা হয়েছিল। এর ভিতরেও অনেক দেওয়ালে অনেক মূর্তি খোদিত আছে। এই এফেসিয়াসের উপর অনেক রাজনৈতিক ঝড় বয়ে গেছে। এই শহর দেখেছে অনেক উত্থান পতন। এটি এক